চার গুণীকেই দলগতভাবে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত
এবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন জনপ্রিয় বাংলা টাইপফেস অভ্র ফন্টের নির্মাতা মেহেদী হাসান খান। তবে তিনি এককভাবে এই পুরস্কার নিতে আগ্রহী ছিলেন না, কারণ অভ্র তৈরিতে আরও তিনজন সহযোগীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
তাই মেহেদীর অনুরোধে, অভ্র ফন্টের জন্য চার গুণীকেই দলগতভাবে একুশে পদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বন্ধুদের ছাড়া এককভাবে পুরস্কার নিতে চাননি মেহেদী:
রোববার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী লিখেছেন, "আমরা জানতাম মেহেদী হাসান খান পুরস্কার গ্রহণ করতে আগ্রহী নন। এর আগেও তাকে অ্যাপ্রোচ করা হয়েছিল। তিনি পুরস্কার না নিতে পারেন জেনেও আমাদের ক্যাবিনেট থেকে আমরা পুরস্কার ঘোষণা করতে সম্মত হই। এর মাধ্যমে বার্তা দিতে চেয়েছি, আমরা কাদের সেলিব্রেট করবো।"
মেহেদী শুধুমাত্র নিজের কৃতিত্বকে তুলে ধরতে চাননি, বরং তার তিন বন্ধু— রিফাত নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম এবং শাবাব মুস্তাফারও সমান অবদান রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ফারুকী আরও লেখেন, "মেহেদী একা এই কৃতিত্ব নিতে চাননি। তার আরও তিন বন্ধু, যারা অভ্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের ছাড়াও তিনি পুরস্কার নিতে চাননি।"
তিনি জানান, "আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে যাওয়া এই চার গুণীকেই অভ্র ফন্টের জন্য দলগতভাবে একুশে পদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।"
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশে আসছেন অভ্র নির্মাতারা:
মেহেদীর সঙ্গে অভ্র ফন্ট তৈরিতে অবদান রাখা তিন গুণীকেই এবার এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা ফারুকী জানিয়েছেন, চারজনই বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তবে তারা পুরস্কার গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে আসছেন।
তিনি বলেন, "তাদের সবাইকে একত্রে স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এই ঘটনা তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।"
একুশে পদকের মনোনীত ব্যক্তির তালিকা
এ বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৫ জনকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
ভাষা ও সাহিত্য:
কবি হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর)
কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহির (মো. শহীদুল হক, মরণোত্তর)
শিল্পকলা:
চলচ্চিত্র: প্রয়াত আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), ‘ছুটির ঘণ্টা’ সিনেমার পরিচালক
সংগীত: ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) ও ফেরদৌস আরা
চিত্রশিল্প: রোকেয়া সুলতানা
আলোকচিত্র: নাসির আলী মামুন
গবেষণা:
মঈদুল হাসান (লেখক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ‘মূলধারা ৭১’-এর রচয়িতা)
সাংবাদিকতা:
মাহফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর)
আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান (সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার বিভাগে)
শিক্ষা:
নিয়াজ জামান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, লেখক ও অনুবাদক)
সংস্কৃতি ও শিক্ষা:
শহীদুল আলম (আলোকচিত্রী ও দৃকের প্রতিষ্ঠাতা)
সমাজসেবা:
মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর) (দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা)
ক্রীড়া:
সাফ জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল
একুশে পদক: দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর সরকার একুশে পদক প্রদান করে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা।
এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন সংযোজন হয়েছে, যেখানে বাংলা কম্পিউটিংয়ের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা অভ্র ফন্টের নির্মাতারা সম্মানিত হচ্ছেন। তাদের স্বীকৃতি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
চার গুণীকেই দলগতভাবে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত
রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
এবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন জনপ্রিয় বাংলা টাইপফেস অভ্র ফন্টের নির্মাতা মেহেদী হাসান খান। তবে তিনি এককভাবে এই পুরস্কার নিতে আগ্রহী ছিলেন না, কারণ অভ্র তৈরিতে আরও তিনজন সহযোগীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
তাই মেহেদীর অনুরোধে, অভ্র ফন্টের জন্য চার গুণীকেই দলগতভাবে একুশে পদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বন্ধুদের ছাড়া এককভাবে পুরস্কার নিতে চাননি মেহেদী:
রোববার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী লিখেছেন, "আমরা জানতাম মেহেদী হাসান খান পুরস্কার গ্রহণ করতে আগ্রহী নন। এর আগেও তাকে অ্যাপ্রোচ করা হয়েছিল। তিনি পুরস্কার না নিতে পারেন জেনেও আমাদের ক্যাবিনেট থেকে আমরা পুরস্কার ঘোষণা করতে সম্মত হই। এর মাধ্যমে বার্তা দিতে চেয়েছি, আমরা কাদের সেলিব্রেট করবো।"
মেহেদী শুধুমাত্র নিজের কৃতিত্বকে তুলে ধরতে চাননি, বরং তার তিন বন্ধু— রিফাত নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম এবং শাবাব মুস্তাফারও সমান অবদান রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ফারুকী আরও লেখেন, "মেহেদী একা এই কৃতিত্ব নিতে চাননি। তার আরও তিন বন্ধু, যারা অভ্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের ছাড়াও তিনি পুরস্কার নিতে চাননি।"
তিনি জানান, "আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে যাওয়া এই চার গুণীকেই অভ্র ফন্টের জন্য দলগতভাবে একুশে পদকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।"
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশে আসছেন অভ্র নির্মাতারা:
মেহেদীর সঙ্গে অভ্র ফন্ট তৈরিতে অবদান রাখা তিন গুণীকেই এবার এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রদান করা হবে। উপদেষ্টা ফারুকী জানিয়েছেন, চারজনই বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। তবে তারা পুরস্কার গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে আসছেন।
তিনি বলেন, "তাদের সবাইকে একত্রে স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এই ঘটনা তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।"
একুশে পদকের মনোনীত ব্যক্তির তালিকা
এ বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৫ জনকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
ভাষা ও সাহিত্য:
কবি হেলাল হাফিজ (মরণোত্তর)
কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহির (মো. শহীদুল হক, মরণোত্তর)
শিল্পকলা:
চলচ্চিত্র: প্রয়াত আজিজুর রহমান (মরণোত্তর), ‘ছুটির ঘণ্টা’ সিনেমার পরিচালক
সংগীত: ওস্তাদ নীরদ বরণ বড়ুয়া (মরণোত্তর) ও ফেরদৌস আরা
চিত্রশিল্প: রোকেয়া সুলতানা
আলোকচিত্র: নাসির আলী মামুন
গবেষণা:
মঈদুল হাসান (লেখক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ‘মূলধারা ৭১’-এর রচয়িতা)
সাংবাদিকতা:
মাহফুজ উল্লাহ (মরণোত্তর)
আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান (সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার বিভাগে)
শিক্ষা:
নিয়াজ জামান (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, লেখক ও অনুবাদক)
সংস্কৃতি ও শিক্ষা:
শহীদুল আলম (আলোকচিত্রী ও দৃকের প্রতিষ্ঠাতা)
সমাজসেবা:
মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর) (দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা)
ক্রীড়া:
সাফ জয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল
একুশে পদক: দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিবছর সরকার একুশে পদক প্রদান করে আসছে। স্বাধীনতা পুরস্কারের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা।
এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন সংযোজন হয়েছে, যেখানে বাংলা কম্পিউটিংয়ের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা অভ্র ফন্টের নির্মাতারা সম্মানিত হচ্ছেন। তাদের স্বীকৃতি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।