alt

news » national

এখনও প্রায় ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি

রাকিব উদ্দিন : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যেসব ছাপাখানা সক্ষমতার চেয়ে ‘বেশি’ বইয়ের কাজ পেয়েছে তাদের ‘অন্য’ ছাপাখানার মাধ্যমে দ্রুত কাজ শেষ করার সুযোগ দিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ইতোমধ্যে ৪/৫টি প্রতিষ্ঠানের কাজ অন্য প্রিন্টিং প্রেসে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা। সাধারণত কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা অন্যের বা ভাড়া করা প্রতিষ্ঠানে বই ছাপালে সেটিকে ‘চুক্তি বা দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ’ হিসেবে বিবেচনা করতো এনসিটিবি। তখন ওইসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা বা কালো তালিকাভুক্ত করা হতো। এবার সেটি হচ্ছে না। শিক্ষাবর্ষের একমাসের বেশি হয়েছে, এখনও প্রায় ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি। যে গতিতে ছাপার কাজ চলছে তাতে ১৮ কোটি বই ছাপাতে আরও অন্তত দেড় মাস সময় লাগবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যদিও এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদকে বলেছেন, ‘এ পর্যন্ত ২৪ কোটির বেশি বই ছাপা হয়ে গেছে। বাইন্ডিংয়ের অভাবে (বাঁধাইকর্মীর স্বল্পতা) তিন কোটি বই আটকে আছে।’ ছাপাখানাগুলো প্রতিদিন ৪০ লাখের মতো বই ছাপতে পারছে জানান রিয়াজুল হাসান। তিনি বলেন, ‘তারা বাঁধাইকর্মীর সংকটের কথা বলছেন... তারা এখন কম টাকায় বাঁধাই কাজ করাতে চান; বাঁধাইকর্মীদের সঙ্গে তারা আগে চুক্তি করেননি। এটা তাদেরই সমস্যা। আগামীতে এই বিষয়ে দরপত্রে কঠোর শর্তারোপ করা হবে।’ এনসিটিবি জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি ব্রেইল বই এবং শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা বই ছাপা হচ্ছে। মোট বইয়ের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের দুই কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই। প্রাথমিকের প্রায় ৮০ শতাংশ বই ছাপা শেষ হয়েছে বলে এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আর ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর দুই কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ বই ছাপা হচ্ছে। মাধ্যমিকের বই ছাপার কার্যক্রম সমন্বয় করছেন এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাধ্যমিকের মোট ১৩ কোটি ১০ লাখ বই ছাপা হয়েছে।’ সেই হিসেবে এখনও মাধ্যমিকের ১৭ কোটি ৮৬ লাখের মতো বই ছাপা বাকি। ছাপাখানাগুলো ‘দৈনিক গড়ে ৪০ লাখের মতো’ বই ছাপতে পারছে- এনসিটিবির চেয়ারম্যানের এই তথ্যানুযায়ী বাকি প্রায় ১৮ কোটি বই ছাপতে আরও অন্তত দেড় মাস লাগবে। তবে হাফিজুর রহমান বলছেন, ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যেই’ তারা সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে ‘অগ্রাধিকারভিত্তিতে’ দশম শ্রেণীর সব বই ইতোমধ্যে ছাপা শেষ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কারণ দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এই শ্রেণীর সব বই স্কুলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’ এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, ‘বই ছাপার কাজ আরও দ্রুত শেষ করতে....যাদের কাছে বেশি বইয়ের কাজ রয়েছে তাদের আমরা বলেছি, তারা যাতে অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বা সমন্বয় করে (যাদের কাজ শেষ হয়েছে বা যারা কোনো কাজ পায়নি) দ্রুত ছাপা শেষ করে। ইতোমধ্যে ৪/৫টি প্রতিষ্ঠা এভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

#সক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ#

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, এবার মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ পেয়েছে মোট ১১৬টি ছাপাখানা। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দেয়ার পর সংস্থার কর্মকর্তারা জানতে পান অনেক প্রতিষ্ঠানেরই বই ছাপার সক্ষমতা সেভাবে নেই। আবার কাউকে কাউকে নিজস্ব সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি কাজ দেয়া হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র আহ্বানের সময় প্রিন্টার্সরা (ছাপাখানা মালিক) বলেছিলেন তারা দৈনিক এক কোটি ৪২ লাখ বই ছাপাতে পারবেন। প্রকৃতপক্ষে তাদের সেই সক্ষমতা নেই। সম্প্রতি তারা কাজের গতি কিছুটা বাড়িয়েছে; তাতেও তারা দৈনিক ৪০ লাখের বেশি বই ছাপতে পারছে না।’ এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান সংবাদকে বলেন, ‘মূল সমস্যা হলো কাগজ ও বাঁধাইকর্মী সংকট। নোট-গাইডের প্রকাশকরা বেশি দামে বাজার থেকে কাগজ কিনে নিচ্ছেন; বেশি টাকায় বাঁধাইকর্মীও কাজে লাগাচ্ছেন। এই সংকটের কারণে দৈনিক ১৬ ঘণ্টার স্থলে ১২ ঘণ্টার মতো পাঠ্যবই ছাপার কাজ করা যাচ্ছে।’ তিনি বলছেন ‘মার্চের মধ্যে’ পাঠ্যবই ছাপার কাজ ‘পুরোপুরি’ শেষ হবে। তার কথা, ‘এখন বই ছাপার কাজ দ্রুত এগোচ্ছে; কিন্তু বাঁধাইয়ে পিছিয়ে পড়ছে প্রিন্টার্সরা।’

#নোট-গাইড বইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান#

এবার পাঠ্যবই ছাপার কাজ নেয়ার পর অনেক ছাপাখানার মালিক ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বই ছাপার কাজে বেশি জোর দিচ্ছেন। এর মধ্যে দেশে কাগজের দাম বেড়ে যাওয়া, বাঁধাইকর্মীর স্বল্পতা ও এ সংক্রান্ত ব্যয় বাড়ায় অনেক ছাপাখানার মালিক ‘সংকটে’ পড়েছেন বলে তাদের দাবি। এনসিটিবি চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘একুশে বইমেলা, নোট-গাইড ছাপা এবং আমাদের পাঠ্যবই প্রতিবারই একই সময়ে ছাপা শুরু হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বাঁধাইয়ের কাজ করলে বেশি টাকা পাওয়া যায়। সেজন্য আমরা এবার নোট-গাইডের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান শুরু করেছি।’ এক শ্রেণীর প্রেস পাঠ্যবই ছাপার কাজ নিয়ে ‘ধীরগতিতে’ বই সরবরাহ করছেন বলে বলছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা। এ রকম প্রেস বা ছাপাখানা মালিকরা পাঠ্যবইয়ের ‘প্রিন্টিং লাইনে’ প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করে তা ছেপে খোলাবাজারে বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ। রিয়াজুল হাসানও বললেন, ‘আমরা এ ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি; যেসব বইয়ের প্রিন্টিং লাইনে কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ নেই। এসব বই বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদের ধরতে অভিযান চলছে।

ছবি

সীমানা পুনর্নির্ধারণ: ৪৬ আসনে পরিবর্তন, গেজেট প্রকাশ

ছবি

নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার নিষিদ্ধ, আসছে নতুন আচরণবিধি

ছবি

নির্বাচনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চায় ইসি, গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের আশ্বাস

ছবি

তারেক রহমানের ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে সমস্যা থাকলে সমাধান করব: তৌহিদ হোসেন

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধ: অভিযোগপত্রে নাম এলেই ভোটে অযোগ্য, থাকবে না সরকারি চাকরি

ছবি

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প: শেখ হাসিনা-রেহানাসহ পরিবারের বিরুদ্ধে তিন মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য

ছবি

মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে নতুন শহরের জন্ম হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাস বহাল রাখল আপিল বিভাগ

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানের পরও দুর্নীতি রয়ে গেছে: টিআই চেয়ারম্যান

ছবি

মহেশখালীতে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

ছবি

এসএএইচআরের পর্যবেক্ষণ: আইনশৃঙ্খলার অবনতি, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে শঙ্কা

ছবি

আচরণবিধি: পোস্টার ছাড়া ভোটে নতুন নিয়ম

ছবি

জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে আইজিপির বৈঠক: নির্বাচনের আগে ৪ হাজার এএসআই নিয়োগ

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও দুই জনের মৃত্যু, চলতি বছরে প্রাণহানি ১২৭

ছবি

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের জামিন নাকচ

ছবি

এস আলম গ্রুপের কর্ণধারের দুই ছেলেসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন

ছবি

সংসদ নির্বাচন: অক্টোবরের মধ্যে ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করতে চায় ইসি

ছবি

ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন

ছবি

চিকিৎসার জন্য নুরকে বিদেশ পাঠানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

‘নির্বাচন বানচালের সর্বোচ্চ চেষ্টা হবে’, সতর্ক করলেন ইউনূস

ছবি

তিন মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

অভ্যুত্থান দমনে মামলা দেড় হাজারের বেশি, অভিযোগপত্র জমা পড়েছে ৩৪টিতে

ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্লট জালিয়াতির তিন মামলায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন

ছবি

শিগগিরই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিরতা সমাধান হবে আশা শিক্ষা উপদেষ্টার

ছবি

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ফের সুপ্রিম কোর্টের হাতে

ছবি

ট্রাইব্যুনালে ‘দায় স্বীকার’ করে ‘ক্ষমা চাইলেন’ রাজসাক্ষী সাবেক আইজি মামুন

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক: রিটকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকিদাতাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

ছবি

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম প্রত্যাহার

ছবি

জরুরি অবস্থা জারির আলোচনা ‘স্রেফ গুজব’: আসিফ নজরুল

ছবি

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি

মঙ্গলবার আরও সাত দলের সঙ্গে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও সংস্কারের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি নেই: রেহমান সোবহান

ছবি

জনগণের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: সেনাপ্রধান

জরুরি অবস্থা নিয়ে গুজব উড়িয়ে দিলেন আইন উপদেষ্টা

ছবি

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করলো হাই কোর্ট

ছবি

সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও পুলিশ গুলি চালায়: ট্রাইব্যুনালে মোহিদ

tab

news » national

এখনও প্রায় ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি

রাকিব উদ্দিন

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

যেসব ছাপাখানা সক্ষমতার চেয়ে ‘বেশি’ বইয়ের কাজ পেয়েছে তাদের ‘অন্য’ ছাপাখানার মাধ্যমে দ্রুত কাজ শেষ করার সুযোগ দিচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ইতোমধ্যে ৪/৫টি প্রতিষ্ঠানের কাজ অন্য প্রিন্টিং প্রেসে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা। সাধারণত কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা অন্যের বা ভাড়া করা প্রতিষ্ঠানে বই ছাপালে সেটিকে ‘চুক্তি বা দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ’ হিসেবে বিবেচনা করতো এনসিটিবি। তখন ওইসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা বা কালো তালিকাভুক্ত করা হতো। এবার সেটি হচ্ছে না। শিক্ষাবর্ষের একমাসের বেশি হয়েছে, এখনও প্রায় ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি। যে গতিতে ছাপার কাজ চলছে তাতে ১৮ কোটি বই ছাপাতে আরও অন্তত দেড় মাস সময় লাগবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যদিও এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান ৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদকে বলেছেন, ‘এ পর্যন্ত ২৪ কোটির বেশি বই ছাপা হয়ে গেছে। বাইন্ডিংয়ের অভাবে (বাঁধাইকর্মীর স্বল্পতা) তিন কোটি বই আটকে আছে।’ ছাপাখানাগুলো প্রতিদিন ৪০ লাখের মতো বই ছাপতে পারছে জানান রিয়াজুল হাসান। তিনি বলেন, ‘তারা বাঁধাইকর্মীর সংকটের কথা বলছেন... তারা এখন কম টাকায় বাঁধাই কাজ করাতে চান; বাঁধাইকর্মীদের সঙ্গে তারা আগে চুক্তি করেননি। এটা তাদেরই সমস্যা। আগামীতে এই বিষয়ে দরপত্রে কঠোর শর্তারোপ করা হবে।’ এনসিটিবি জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি ব্রেইল বই এবং শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা বই ছাপা হচ্ছে। মোট বইয়ের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের দুই কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই। প্রাথমিকের প্রায় ৮০ শতাংশ বই ছাপা শেষ হয়েছে বলে এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আর ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর দুই কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ বই ছাপা হচ্ছে। মাধ্যমিকের বই ছাপার কার্যক্রম সমন্বয় করছেন এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাধ্যমিকের মোট ১৩ কোটি ১০ লাখ বই ছাপা হয়েছে।’ সেই হিসেবে এখনও মাধ্যমিকের ১৭ কোটি ৮৬ লাখের মতো বই ছাপা বাকি। ছাপাখানাগুলো ‘দৈনিক গড়ে ৪০ লাখের মতো’ বই ছাপতে পারছে- এনসিটিবির চেয়ারম্যানের এই তথ্যানুযায়ী বাকি প্রায় ১৮ কোটি বই ছাপতে আরও অন্তত দেড় মাস লাগবে। তবে হাফিজুর রহমান বলছেন, ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যেই’ তারা সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে ‘অগ্রাধিকারভিত্তিতে’ দশম শ্রেণীর সব বই ইতোমধ্যে ছাপা শেষ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কারণ দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এই শ্রেণীর সব বই স্কুলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।’ এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, ‘বই ছাপার কাজ আরও দ্রুত শেষ করতে....যাদের কাছে বেশি বইয়ের কাজ রয়েছে তাদের আমরা বলেছি, তারা যাতে অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বা সমন্বয় করে (যাদের কাজ শেষ হয়েছে বা যারা কোনো কাজ পায়নি) দ্রুত ছাপা শেষ করে। ইতোমধ্যে ৪/৫টি প্রতিষ্ঠা এভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

#সক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ#

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, এবার মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপার কাজ পেয়েছে মোট ১১৬টি ছাপাখানা। প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দেয়ার পর সংস্থার কর্মকর্তারা জানতে পান অনেক প্রতিষ্ঠানেরই বই ছাপার সক্ষমতা সেভাবে নেই। আবার কাউকে কাউকে নিজস্ব সক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি কাজ দেয়া হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র আহ্বানের সময় প্রিন্টার্সরা (ছাপাখানা মালিক) বলেছিলেন তারা দৈনিক এক কোটি ৪২ লাখ বই ছাপাতে পারবেন। প্রকৃতপক্ষে তাদের সেই সক্ষমতা নেই। সম্প্রতি তারা কাজের গতি কিছুটা বাড়িয়েছে; তাতেও তারা দৈনিক ৪০ লাখের বেশি বই ছাপতে পারছে না।’ এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান সংবাদকে বলেন, ‘মূল সমস্যা হলো কাগজ ও বাঁধাইকর্মী সংকট। নোট-গাইডের প্রকাশকরা বেশি দামে বাজার থেকে কাগজ কিনে নিচ্ছেন; বেশি টাকায় বাঁধাইকর্মীও কাজে লাগাচ্ছেন। এই সংকটের কারণে দৈনিক ১৬ ঘণ্টার স্থলে ১২ ঘণ্টার মতো পাঠ্যবই ছাপার কাজ করা যাচ্ছে।’ তিনি বলছেন ‘মার্চের মধ্যে’ পাঠ্যবই ছাপার কাজ ‘পুরোপুরি’ শেষ হবে। তার কথা, ‘এখন বই ছাপার কাজ দ্রুত এগোচ্ছে; কিন্তু বাঁধাইয়ে পিছিয়ে পড়ছে প্রিন্টার্সরা।’

#নোট-গাইড বইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান#

এবার পাঠ্যবই ছাপার কাজ নেয়ার পর অনেক ছাপাখানার মালিক ‘নোট-গাইড’ বা সহায়ক বই ছাপার কাজে বেশি জোর দিচ্ছেন। এর মধ্যে দেশে কাগজের দাম বেড়ে যাওয়া, বাঁধাইকর্মীর স্বল্পতা ও এ সংক্রান্ত ব্যয় বাড়ায় অনেক ছাপাখানার মালিক ‘সংকটে’ পড়েছেন বলে তাদের দাবি। এনসিটিবি চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘একুশে বইমেলা, নোট-গাইড ছাপা এবং আমাদের পাঠ্যবই প্রতিবারই একই সময়ে ছাপা শুরু হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বাঁধাইয়ের কাজ করলে বেশি টাকা পাওয়া যায়। সেজন্য আমরা এবার নোট-গাইডের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান শুরু করেছি।’ এক শ্রেণীর প্রেস পাঠ্যবই ছাপার কাজ নিয়ে ‘ধীরগতিতে’ বই সরবরাহ করছেন বলে বলছেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা। এ রকম প্রেস বা ছাপাখানা মালিকরা পাঠ্যবইয়ের ‘প্রিন্টিং লাইনে’ প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করে তা ছেপে খোলাবাজারে বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ। রিয়াজুল হাসানও বললেন, ‘আমরা এ ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছি; যেসব বইয়ের প্রিন্টিং লাইনে কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ নেই। এসব বই বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এদের ধরতে অভিযান চলছে।

back to top