রমজানে সহনশীল থাকবে ডিম ও মাংসের দাম
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তিন দিনের ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো। বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের পসরা নিয়ে এতে হাজির হবেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘রেজিলিয়েন্ট পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ: ইভল্যুশন, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানায় ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরাম (এফএলজেএফ) সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে জানানো হয়, ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক পোলট্রি সেমিনার। আর ২০-২২ ফেব্রুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো। পোলট্রি মেলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কুড়িল বিশ্ব রোডের ৩০০ ফিট থেকে সারাদিন ফ্রি সাঁটল বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, আসন্ন রমজানে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম সহনশীল থাকবে। আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে পুরো রমজান মাস সুলভ মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রি করবো।
তিনি বলেন, অতিবৃষ্টি, খরা, রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ এবং বাজারদরের অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের কারণে ২০২৪ সাল ছিল পোল্ট্রি শিল্পের জন্য একটি দুর্যোগপূর্ণ বছর। অসংখ্য খামারি নিঃস্ব হয়েছেন। বেশ কয়েকটি বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও তাদের ব্যবসা সংকুচিত করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০৫০ সালকে সামনে রেখে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প। স্বল্পতম সময়ে মানসম্মত প্রোটিন উৎপাদন করতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, খামার ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন ঘটাতে হবে এবং গবেষণা কাজে ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য সরকারকে পোলট্রি শিল্পের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। পোলট্রি বিজ্ঞান সম্পর্কে আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের এবারের মেলার আয়োজনের লক্ষ্যই হচ্ছে সেই সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের খামারিদের সাহায্য করা।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, ২০২০ সালের পর ফিডের উৎপাদন বেশ খানিকটা হ্রাস পেয়েছিল। গত বছর উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে। আশা করা যায় চলতি বছরে আরও বাড়বে অর্থাৎ ডিম-মুরগির উৎপাদনও বাড়বে।
তিনি বলেন, যেকোনো কিছু খেলেই হবে না, খাদ্যকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ হতে হবে। যেহেতু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যম আয়ের, এ কারণে ডিম কিংবা মুরগির মাংস কীভাবে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা যায়, এ লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করছে ওয়াপসা বাংলাদেশ শাখা।
ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের আমলে খামারিদের লোকসান হলেও তা জোর গলায় বলার মত পরিস্থিতি ছিল না। সে সময় যারাই পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সামনে এসেছিলেন তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখনও অনেকগুলো মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। এর রকম পরিস্থিতি আমরা আর দেখতে চাই না।
মাহাবুব বলেন, সরকার ডিমের খুচরা মূল্য ১১ দশমিক ৮৭ টাকা নির্ধারণ করেছেন কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র সাড়ে ১০ টাকায়। সামনের রমজানে দাম আরও কমার আশংকা রয়েছে। এ লোকসান সামাল দেয়া তৃণমূল খামারিদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তাদের সাহায্য করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।
ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, খামারি ও উদ্যোক্তাদের ঝরে পড়া ঠেকাতে হবে, পোল্ট্রি শিল্পকে টেকসই ও মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করাতে হবে।
এফএলজেএফ সভাপতি মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম, আরটিভির হেড অব নিউজ ইলিয়াস হোসেন ও এফএলজেএফের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান।
রমজানে সহনশীল থাকবে ডিম ও মাংসের দাম
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তিন দিনের ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো। বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের পসরা নিয়ে এতে হাজির হবেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘রেজিলিয়েন্ট পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ: ইভল্যুশন, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানায় ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরাম (এফএলজেএফ) সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে জানানো হয়, ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক পোলট্রি সেমিনার। আর ২০-২২ ফেব্রুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো। পোলট্রি মেলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কুড়িল বিশ্ব রোডের ৩০০ ফিট থেকে সারাদিন ফ্রি সাঁটল বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, আসন্ন রমজানে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম সহনশীল থাকবে। আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে পুরো রমজান মাস সুলভ মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রি করবো।
তিনি বলেন, অতিবৃষ্টি, খরা, রোগ-জীবাণুর সংক্রমণ এবং বাজারদরের অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের কারণে ২০২৪ সাল ছিল পোল্ট্রি শিল্পের জন্য একটি দুর্যোগপূর্ণ বছর। অসংখ্য খামারি নিঃস্ব হয়েছেন। বেশ কয়েকটি বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও তাদের ব্যবসা সংকুচিত করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০৫০ সালকে সামনে রেখে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প। স্বল্পতম সময়ে মানসম্মত প্রোটিন উৎপাদন করতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, খামার ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন ঘটাতে হবে এবং গবেষণা কাজে ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য সরকারকে পোলট্রি শিল্পের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। পোলট্রি বিজ্ঞান সম্পর্কে আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের এবারের মেলার আয়োজনের লক্ষ্যই হচ্ছে সেই সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের খামারিদের সাহায্য করা।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, ২০২০ সালের পর ফিডের উৎপাদন বেশ খানিকটা হ্রাস পেয়েছিল। গত বছর উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে। আশা করা যায় চলতি বছরে আরও বাড়বে অর্থাৎ ডিম-মুরগির উৎপাদনও বাড়বে।
তিনি বলেন, যেকোনো কিছু খেলেই হবে না, খাদ্যকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ হতে হবে। যেহেতু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যম আয়ের, এ কারণে ডিম কিংবা মুরগির মাংস কীভাবে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা যায়, এ লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করছে ওয়াপসা বাংলাদেশ শাখা।
ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের আমলে খামারিদের লোকসান হলেও তা জোর গলায় বলার মত পরিস্থিতি ছিল না। সে সময় যারাই পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সামনে এসেছিলেন তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখনও অনেকগুলো মামলা নিষ্পত্তি হয়নি। এর রকম পরিস্থিতি আমরা আর দেখতে চাই না।
মাহাবুব বলেন, সরকার ডিমের খুচরা মূল্য ১১ দশমিক ৮৭ টাকা নির্ধারণ করেছেন কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র সাড়ে ১০ টাকায়। সামনের রমজানে দাম আরও কমার আশংকা রয়েছে। এ লোকসান সামাল দেয়া তৃণমূল খামারিদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তাদের সাহায্য করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।
ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, খামারি ও উদ্যোক্তাদের ঝরে পড়া ঠেকাতে হবে, পোল্ট্রি শিল্পকে টেকসই ও মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করাতে হবে।
এফএলজেএফ সভাপতি মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম, আরটিভির হেড অব নিউজ ইলিয়াস হোসেন ও এফএলজেএফের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান।