গতকাল রাজধানীতে সিএনজিচালকদের বিক্ষোভে জনদুর্ভোগ ছিল চরমে -সংবাদ
পেট্রোল বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এই নির্দেশনা ৬ দিনের বেশি স্থায়ী হলো না। সিএনজিচালকরা রবিবার সকালে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করায় ওই নির্দেশনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় বিআরটিএ। এদিকে রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর-১, মিরপুর-১৪, ধোলাইরপাড়, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, মালিবাগ, গাবতলী মাজার রোড, হাতিরঝিল, আগারগাঁও, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় নগরজুড়ে। দীর্ঘক্ষণ যানজটে বসে থেকে বিরক্তি প্রকাশ করেন অনেকে। আবার অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। বিআরটিএ- নির্দেশনা প্রত্যাহারের পর সিএনজিচালকরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
অপরদিকে অবরোধ প্রত্যাহারের পর মহানগরের সঙ্গে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ-গাজীপুর- নরসিংদী-মানিকগঞ্জ জেলায় চলাচলের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশাচালক ঐক্য পরিষদ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাধ্যতামূলক মিটার ব্যবহারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নেমে অবরোধ করে সিএনজিচালকরা। এ সময় চালকরা নতুন নিয়ম বাতিল, ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ একাধিক দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা বলেন, মিটারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং মিটারে না চললে জরিমানার আইন বাতিল করতে
হবে। রামপুরা ওয়াপদা রোড অবরোধে অংশ নেয়া সিএনজিচালক নাসিম মোল্লা জানান, ‘মিটার পদ্ধতিতে ভাড়া চাই না। মিটার থাকলে পুলিশ, পাবলিক এবং মালিকের অত্যাচার চলতে থাকে। মিটার মানেই যন্ত্রণা। আমরা চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় গাড়ি চালাতে চাই। আরেক চালক তমাল হোসেন জানান, ‘এই মামলা বড়জোর দুই থেকে তিন হাজার হলে ভালো হতো। সরকার ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আইন করেছে এবং অনাদায়ে ছয় মাসের জেল। এই আইন আমরা মানি না।
গণপরিবহন না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন আরজু ভূঁইয়া। রামপুরা ওয়াপদা রোডে কথা হয় তার সঙ্গে। বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঢাকা এখন দুর্ভোগ আর আন্দোলনের নগরী। কিছু হলেই আন্দোলন। সাধারণ মানুষ এই দেশের জন্য বোঝার মতো, কিছুই বলার নেই। একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি। কোনো পরিবহন চলছে না। পা-ই ভরসা। এই সড়ক অবরোধ সংস্কৃতি থেকে বের হতে সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত। আরজু ভূঁইয়ার মতোই বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন।রবিবার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ খোলা থাকায় বিভিন্ন সড়কে লোকজনকে ছোটাছুটিও করতে দেখা গেছে। সিএনজিচালকরা জানান, বর্তমানে অটোরিকশার মালিকের জন্য দৈনিক জমা নির্ধারণ করা আছে ৯০০ টাকা। তবে চালকদের কথা-মালিকরা দিনে দুই বেলায় চালকের কাছে অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা আদায় করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে চলাচলকারী প্রায় ২৮ হাজার অটোরিকশার জন্য পৃথক নীতিমালা রয়েছে। এসব অটোরিকশাকে কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ বা ভাড়ায়চালিত যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নীতিমালা অনুসারে, সিএনজি ও পেট্রোলচালিত অটোরিকশার ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা নির্ধারণ করা রয়েছে। বিআরটিএ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে মামলার আদেশ দেয়ার পর বৃহস্পতিবারও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান সিএনজিচালকরা। দুর্ভোগের কথা নিজের ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন কাজী সালহ উদ্দীন। তিনি লিখেছেন, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে টঙ্গী-আব্দুলাহপুর থেকে বাসে উঠে বেলা ১টায় কমলাপুরে পৌঁছাতে পেরেছেন। স্বাভাবিক সময়ে দিনের বেলা এ পথ পাড়ি দিতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লাগে। ১০ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয় ঢাকার পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে। সেখানে বলা হয়, গ্যাস বা পেট্রোলচালিত ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা করার ‘নির্দেশক্রমে অনুরোধ’ করা হলো। আরও কয়েকটি রুটে চলাচলের সুযোগ দাবি : মহানগরের সঙ্গে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ-গাজীপুর- নরসিংদী-মানিকগঞ্জ জেলায় চলাচলের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশাচালক ঐক্য পরিষদ। একই সঙ্গে দৈনিক জমা না বাড়নো, পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না করে নো পার্কিং মামলা দিয়ে চালক হয়রানি বন্ধ করা, মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশার জন্য আলাদা লেন বা বাইলেন তৈরির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।রবিবার ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশাচালক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শেখ হানিফ ও সদস্য সচিব গোলাপ হোসেন সিদ্দিকীর যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের যুগ্ম-সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামের সই করা প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়।
গতকাল রাজধানীতে সিএনজিচালকদের বিক্ষোভে জনদুর্ভোগ ছিল চরমে -সংবাদ
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
পেট্রোল বা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এই নির্দেশনা ৬ দিনের বেশি স্থায়ী হলো না। সিএনজিচালকরা রবিবার সকালে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক অবরোধ করায় ওই নির্দেশনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় বিআরটিএ। এদিকে রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর-১, মিরপুর-১৪, ধোলাইরপাড়, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, মালিবাগ, গাবতলী মাজার রোড, হাতিরঝিল, আগারগাঁও, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় নগরজুড়ে। দীর্ঘক্ষণ যানজটে বসে থেকে বিরক্তি প্রকাশ করেন অনেকে। আবার অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। বিআরটিএ- নির্দেশনা প্রত্যাহারের পর সিএনজিচালকরা সড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়।
অপরদিকে অবরোধ প্রত্যাহারের পর মহানগরের সঙ্গে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ-গাজীপুর- নরসিংদী-মানিকগঞ্জ জেলায় চলাচলের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশাচালক ঐক্য পরিষদ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাধ্যতামূলক মিটার ব্যবহারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নেমে অবরোধ করে সিএনজিচালকরা। এ সময় চালকরা নতুন নিয়ম বাতিল, ভাড়া বৃদ্ধি ও পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ একাধিক দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা বলেন, মিটারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং মিটারে না চললে জরিমানার আইন বাতিল করতে
হবে। রামপুরা ওয়াপদা রোড অবরোধে অংশ নেয়া সিএনজিচালক নাসিম মোল্লা জানান, ‘মিটার পদ্ধতিতে ভাড়া চাই না। মিটার থাকলে পুলিশ, পাবলিক এবং মালিকের অত্যাচার চলতে থাকে। মিটার মানেই যন্ত্রণা। আমরা চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় গাড়ি চালাতে চাই। আরেক চালক তমাল হোসেন জানান, ‘এই মামলা বড়জোর দুই থেকে তিন হাজার হলে ভালো হতো। সরকার ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আইন করেছে এবং অনাদায়ে ছয় মাসের জেল। এই আইন আমরা মানি না।
গণপরিবহন না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন আরজু ভূঁইয়া। রামপুরা ওয়াপদা রোডে কথা হয় তার সঙ্গে। বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঢাকা এখন দুর্ভোগ আর আন্দোলনের নগরী। কিছু হলেই আন্দোলন। সাধারণ মানুষ এই দেশের জন্য বোঝার মতো, কিছুই বলার নেই। একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি। কোনো পরিবহন চলছে না। পা-ই ভরসা। এই সড়ক অবরোধ সংস্কৃতি থেকে বের হতে সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত। আরজু ভূঁইয়ার মতোই বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন।রবিবার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ খোলা থাকায় বিভিন্ন সড়কে লোকজনকে ছোটাছুটিও করতে দেখা গেছে। সিএনজিচালকরা জানান, বর্তমানে অটোরিকশার মালিকের জন্য দৈনিক জমা নির্ধারণ করা আছে ৯০০ টাকা। তবে চালকদের কথা-মালিকরা দিনে দুই বেলায় চালকের কাছে অটোরিকশা ভাড়া দিয়ে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা আদায় করেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে চলাচলকারী প্রায় ২৮ হাজার অটোরিকশার জন্য পৃথক নীতিমালা রয়েছে। এসব অটোরিকশাকে কন্ট্রাক্ট ক্যারিজ বা ভাড়ায়চালিত যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নীতিমালা অনুসারে, সিএনজি ও পেট্রোলচালিত অটোরিকশার ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমা নির্ধারণ করা রয়েছে। বিআরটিএ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে মামলার আদেশ দেয়ার পর বৃহস্পতিবারও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান সিএনজিচালকরা। দুর্ভোগের কথা নিজের ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন কাজী সালহ উদ্দীন। তিনি লিখেছেন, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে টঙ্গী-আব্দুলাহপুর থেকে বাসে উঠে বেলা ১টায় কমলাপুরে পৌঁছাতে পেরেছেন। স্বাভাবিক সময়ে দিনের বেলা এ পথ পাড়ি দিতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লাগে। ১০ ফেব্রুয়ারি বিআরটিএ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয় ঢাকার পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে। সেখানে বলা হয়, গ্যাস বা পেট্রোলচালিত ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা করার ‘নির্দেশক্রমে অনুরোধ’ করা হলো। আরও কয়েকটি রুটে চলাচলের সুযোগ দাবি : মহানগরের সঙ্গে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ-গাজীপুর- নরসিংদী-মানিকগঞ্জ জেলায় চলাচলের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশাচালক ঐক্য পরিষদ। একই সঙ্গে দৈনিক জমা না বাড়নো, পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না করে নো পার্কিং মামলা দিয়ে চালক হয়রানি বন্ধ করা, মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশার জন্য আলাদা লেন বা বাইলেন তৈরির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।রবিবার ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশাচালক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শেখ হানিফ ও সদস্য সচিব গোলাপ হোসেন সিদ্দিকীর যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের যুগ্ম-সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামের সই করা প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়।