শিশু ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি কথা দু’দিন আগে শোনা গেলেও আবারও তার অবস্থার অবনতির খবর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শিশুটির জন্য সবার দোয়া চেয়ে তিনি বলেছেন, ‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তার সিজিএস কমা লেভেল চার থেকে তিনে নেমে এসেছে। ব্রেইন স্টেম এবং চোখের মণির প্রসারণ কমে গেছে মঙ্গলবারের তুলনায়।
‘সিএমএইচের চিকিৎসকরা প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করি যাতে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়।’ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা বুধবার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে তুলে ধরেন প্রেস সচিব।
এর আগে সোমবার শিশুটির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতির খবর দিয়ে বলা হয়, ‘পাঁচ দিনের মাথায় তার চোখের পাতা নড়েছে।’ চিকিৎসকদের বরাতে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে।
‘তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘিœত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুয়েক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।’সোমবার উপ প্রেস সচিবের ওই বক্তব্যের দু’দিনের মাথায় বুধবার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শিশুটির শারীরিক অবস্থা আরও অবনতির খবর দিলেন।
তিন আসামির ডিএনএ
নমুনা সংগ্রহ
৮ বছরের শিশু ‘ধর্ষণের’ ঘটনায় করা মামলার তদন্তে স্বার্থে কারাগারের থাকা চার আসামির মধ্যে তিনজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।মঙ্গলবার তিন পুরুষ আসামিকে ঢাকায় সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে নিয়ে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় বলে জানান মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিরাজুল ইসলাম। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিশুর ডিএনএ নমুনাও জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী শিশুটির যখন মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আসামিদের মধ্যে একজন নারী। বাকি পুরুষ আসামিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা সিআইডি ডিএনএ ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের নমুনা সংগ্রহের পর আবার তাদের মাগুরা জেলা কারাগারে নেয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম।
শিশু ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন
শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। এ সময় মাগুরা মেডিকেল কলেজ বাতিলের পাঁয়তারা ও মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবি করেছেন নেতারা। বুধবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন গণকমিটি মাগুরা জেলা শাখা। গণকমিটির আহ্বায়ক এ টি এম মহব্বত আলীর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় সমাবেশে মাগুরা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক এ টি এম আনিসুর রহমান এবং সদস্য বাসারল হায়দার বাচ্চু বক্তব্য দেন। সমাবেশে নেতারা বলেন, সারাদেশে নারী ও শিশু
নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ, সহিংসতা বেড়েই চলেছে। এর বড় একটি কারণ বিচারহীনতার রেওয়াজ। ক্ষমতা ও অর্থের দিয়ে অনেক সময় অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এতে সমাজে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়তে থাকে। সম্প্রতি নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক কর্মকা- বেড়েই চলছে। সমাবেশ থেকে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণসহ সারাদেশে ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও সহিংসতার ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি করেছেন নেতারা।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮), বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), অপ্রাপ্তবয়স্ক এক কিশোর (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)।
শিশু ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি কথা দু’দিন আগে শোনা গেলেও আবারও তার অবস্থার অবনতির খবর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শিশুটির জন্য সবার দোয়া চেয়ে তিনি বলেছেন, ‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তার সিজিএস কমা লেভেল চার থেকে তিনে নেমে এসেছে। ব্রেইন স্টেম এবং চোখের মণির প্রসারণ কমে গেছে মঙ্গলবারের তুলনায়।
‘সিএমএইচের চিকিৎসকরা প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন। আমরা সবাই মিলে প্রার্থনা করি যাতে শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়।’ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে শিশুটির চিকিৎসা চলছে। তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা বুধবার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে তুলে ধরেন প্রেস সচিব।
এর আগে সোমবার শিশুটির শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতির খবর দিয়ে বলা হয়, ‘পাঁচ দিনের মাথায় তার চোখের পাতা নড়েছে।’ চিকিৎসকদের বরাতে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে।
‘তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘিœত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুয়েক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।’সোমবার উপ প্রেস সচিবের ওই বক্তব্যের দু’দিনের মাথায় বুধবার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শিশুটির শারীরিক অবস্থা আরও অবনতির খবর দিলেন।
তিন আসামির ডিএনএ
নমুনা সংগ্রহ
৮ বছরের শিশু ‘ধর্ষণের’ ঘটনায় করা মামলার তদন্তে স্বার্থে কারাগারের থাকা চার আসামির মধ্যে তিনজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।মঙ্গলবার তিন পুরুষ আসামিকে ঢাকায় সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে নিয়ে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় বলে জানান মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিরাজুল ইসলাম। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগী শিশুর ডিএনএ নমুনাও জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী শিশুটির যখন মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানে তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আসামিদের মধ্যে একজন নারী। বাকি পুরুষ আসামিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য ঢাকা সিআইডি ডিএনএ ল্যাবে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের নমুনা সংগ্রহের পর আবার তাদের মাগুরা জেলা কারাগারে নেয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম।
শিশু ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন
শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। এ সময় মাগুরা মেডিকেল কলেজ বাতিলের পাঁয়তারা ও মব ভায়োলেন্স বন্ধের দাবি করেছেন নেতারা। বুধবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন গণকমিটি মাগুরা জেলা শাখা। গণকমিটির আহ্বায়ক এ টি এম মহব্বত আলীর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব প্রকৌশলী শম্পা বসুর পরিচালনায় সমাবেশে মাগুরা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক এ টি এম আনিসুর রহমান এবং সদস্য বাসারল হায়দার বাচ্চু বক্তব্য দেন। সমাবেশে নেতারা বলেন, সারাদেশে নারী ও শিশু
নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ, সহিংসতা বেড়েই চলেছে। এর বড় একটি কারণ বিচারহীনতার রেওয়াজ। ক্ষমতা ও অর্থের দিয়ে অনেক সময় অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এতে সমাজে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়তে থাকে। সম্প্রতি নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক কর্মকা- বেড়েই চলছে। সমাবেশ থেকে মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণসহ সারাদেশে ধর্ষণ, নারী নিপীড়ন ও সহিংসতার ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি করেছেন নেতারা।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮), বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), অপ্রাপ্তবয়স্ক এক কিশোর (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)।