alt

এখনও ছাপার বাকি এক কোটি বই

‘উদ্বৃত্ত’ ৬২ লাখ বই ফেরত এসেছে

রাকিব উদ্দিন : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

এবার সারাদেশের অন্তত ২৯টি উপজেলা থেকে প্রায় ৬২ লাখ পাঠ্যবই ফেরত এসেছে। উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কেউ কেউ দ্বিগুণ ও তিনগুণ বেশি বইয়ের চাহিদাপত্র পাঠানোর কারণে এসব বই বেশি ছাপানো হয়েছে বলে এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উদ্বৃত্ত বইগুলো রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের’ (এনসিটিবি) গুদামে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে ‘প্রয়োজন ও চাহিদার’ ভিত্তিতে অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় পাঠানো হচ্ছে বলে সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান সংবাদকে বলেছেন, ‘কিছু কিছু উপজেলা থেকে অতিরিক্ত চাহিদা দিয়েছিল, সেসব বই সংগ্রহ করে আমরা গুদামে রেখেছি। এগুলো এখন রি-অ্যারেজ করা হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বাড্ডা, কাফরুল ও সাভারের দোহার; নরসিংদীর পলাশ ও রায়পুরা, কুড়িগ্রাম সদর, যশোরের মনিরামপুর, চাঁদপুরের কচুয়াসহ বিভিন্ন জেলার অন্তত ২৯টি উপজেলা থেকে ৬২ থেকে ৬৩ লাখ বই ফেরত এসেছে। এগুলোর সবই মাধ্যমিক স্তরের বই। এসব বই নিয়ে এনসিটিবি কিছুটা সমস্যায়ও পড়েছে। এখন বইগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সরবরাহ করতে হচ্ছে।

একটি বই ছাপতে কত টাকা খরচ হচ্ছে জানতে চাইলে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘মাধ্যমিকের প্রতিটি বই ছাপার খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মতো।’

জানতে চাইলে কাফরুল থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জহুরা খাতুন সংবাদকে বলেন, ‘থানায় উদ্বৃত্ত কোনো বই নেই। আমাদের প্রতিটি ক্লাসে ৫/৬ সেট বইয়ের বেশি চাহিদা দেয়া লাগে। এটা দেয়া লাগে, কারণ হুট করে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসে; তারা এসে বইয়ের চাহিদা দেয়। তখন আমাদের কিছু বই দিতেই হয়।’

স্কুলগুলোও বইয়ের ‘অতিরিক্ত চাহিদা’ দিয়ে থাকে জানিয়ে এই শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার হয়তো ১৫ থেকে ২০ সেট বই অতিরিক্ত হতে পারে। এছাড়া বিগত কয়েক বছরের ৫/৬ সেট করে উদ্বৃত্ত বই গুদামে রয়েছে।’

বাড্ডা থানার এক শিক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, তারা ‘ভুলবশত’ বেশি বইয়ের চাহিদাপত্র এনসিটিবিকে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা একাধিকবার সংশোধিত তালিকা পাঠিয়েছিল এনসিটিবিতে। এরপরও বইয়ের চাহিদাপত্র সংশোধন হয়নি।

উদ্বৃত্ত বইগুলো কাজে লাগানো হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান (ছাপাখানা) ঠিকমতো কাজ করতে পারছিল না, তাদের কাজ কমিয়ে দিয়েছি; ১৫টি টেন্ডার ক্যানসেল করেছি; সেসব উপজেলার গুদাম থেকে বই পাঠাচ্ছি।’

এখনও স্কুলপর্যায়ে পৌঁছেনি এক কোটি বই:

এনসিটিবির তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় এক কোটি পাঠ্যবই এখনও সরবরাহের বাকি রয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ২৫ লাখ বই ছাপা হয়নি। বাকি বইগুলো ছাপার কাজ শেষ হলেও বাঁধাইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব বই বাঁধাইয়ের পর স্কুলপর্যায়ে পাঠানো হবে।

বর্তমানে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ঈদের পর খুলবে সব

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আগে চলতি সপ্তাহেই পাঠ্যবই ছাপার কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে বলে বই ছাপার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা আশা করছেন। উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছালেও এসব বই স্কুলপর্যায়ে বিতরণ হবে ঈদের ছুটির পর।

এনসিটিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মঙ্গলবার সংবাদকে জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের মোট বইয়ের সংখ্যা ৩০ কোটি ১৯ লাখের মতো। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত পিডিআই (প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন) হয়েছে ২৯ কোটি ৪০ লাখ বই। সেই হিসাবে এখনও প্রায় ৮০ লাখ বই পিডিআইয়ের বাকি রয়েছে।

সাধারণত ছাপাখানায় কাগজ ও কালির মান পরীক্ষা করে পিডিআই রিপোর্ট দিয়ে থাকেন এনসিটিবি নিযুক্ত তদারকি সংস্থা। এরপর তা বাঁধাই করে উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করেন ছাপাখানার মালিকরা। সেই কারণে পিডিআই হলেও সব বই সরবরাহ হয়ে গেছে সেটি বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

এনসিটিবি জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু ব্রেইল বই এবং শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা বই ছাপার কথা ছিল। পরবর্তীতে বইয়ের সংখ্যা কিছু কমেছে।

তবে এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান মঙ্গলবার সংবাদকে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে যে হিসাব এসেছে, তাতে এখনও এক কোটির বেশি বই ছাপার বাকি রয়েছে। আর পিডিআই’র বরাত দিয়ে যে তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন আছে। কারণ তারা এনসিটিবির চাহিদা অনুযায়ী রিপোর্ট দেয়। ছাপা শেষ করতে কয়েকটি ছাপাখানা আরও সময় চেয়ে এনসিটিবির কাছে আবেদন করছে।’

মোট বইয়ের মধ্যে এবার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের দুই কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই ছেপেছে এনসিটিবি।

আর ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর দুই কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপা হচ্ছে।

ছবি

ভারতের লঘুচাপের প্রভাবে বাংলাদেশে তিনটি বিভাগে ভারি বৃষ্টির আভাস

সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অনিবন্ধিত মুঠোফোনের ব্যবহার বন্ধে ১৬ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে এনইআইআর

দুর্ঘটনার সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর সিলেট ছাড়লো লন্ডনগামী বিমান

‘তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ মুখে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ: কর্মশালায় বিশ্লেষণ

ছবি

দুদক সংস্কার কমিশনের ‘কৌশলগত সুপারিশ বাদ দিয়ে’ খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদন, টিআইবির উদ্বেগ

ছবি

ভিন্ন কোনো দেশের কারণে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না: চীনের রাষ্ট্রদূত

ছবি

ভোট কবে, জানা যাবে ‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে’

টিভি সূচি

ছবি

পরিবেশ ধ্বংসের বিনিময়ে উন্নয়ন ‘টেকসই হতে পারে না’: সৈয়দা রিজওয়ানা

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু

ছবি

হালদা নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ছবি

‘সেনা কর্মকর্তাদের চাকরিতে থাকা’ নিয়ে মন্তব্যের ব্যাখ্যা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের

ছবি

নির্বাচন ভবনের নিরাপত্তা বাড়াতে ডিএমপিকে ইসির চিঠি

ছবি

সংবিধান সংস্কার ‘জুলাই সনদ অনুসারে’: ২৭০ পঞ্জিকা দিবসে না হলে ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল পাস’

আইনি প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বেসরকারি স্কুল ও কলেজে এমপিও নীতিমালায় বড় পরিবর্তন: জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বিলুপ্ত, অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ যোগ্যতায় পরিবর্তন

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অতীত থেকে মুক্তির পথ দেখাবে: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই সনদে সংবিধান সংস্কারে সরকারের জন্য দুটি বিকল্প পথ প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশনের

ছবি

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বডি-ওর্ন-ক্যামেরা কেনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

শীতের কম্বল ফেব্রুয়ারিতে দিয়ে লাভ নেই বিভাগীয় কমিশনার

ছবি

দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষকরা সম্মুখসারির যোদ্ধা খাদ্য উপদেষ্টা

ছবি

নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের সুপারিশ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন উভয়ের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক গভীর: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’, ভারতের অন্ধ্র উপকূলে আঘাতের শঙ্কা

ছবি

ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’

ছবি

আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৬ জনের মৃত্যু: হাসপাতালে ভর্তি ৯৮৩ জন

ছবি

জেইসির মাধ্যমে বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত, আজ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর

চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন

ছবি

এক লাখ কর্মী নিয়োগ, প্রধান উপদেষ্টাকে অগ্রগতি জানালো জাপানি প্রতিনিধিদল

ছবি

মঙ্গলবার সরকারের হাতে যাবে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা

ছবি

নভেম্বরের পরও চলবে উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম: অন্তর্বর্তী সরকারের স্পষ্টীকরণ

ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ৭৬১

ছবি

অর্থ পাচারের মামলায় সম্রাট ও আরমানের জামিন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

tab

এখনও ছাপার বাকি এক কোটি বই

‘উদ্বৃত্ত’ ৬২ লাখ বই ফেরত এসেছে

রাকিব উদ্দিন

মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

এবার সারাদেশের অন্তত ২৯টি উপজেলা থেকে প্রায় ৬২ লাখ পাঠ্যবই ফেরত এসেছে। উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কেউ কেউ দ্বিগুণ ও তিনগুণ বেশি বইয়ের চাহিদাপত্র পাঠানোর কারণে এসব বই বেশি ছাপানো হয়েছে বলে এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উদ্বৃত্ত বইগুলো রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের’ (এনসিটিবি) গুদামে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে ‘প্রয়োজন ও চাহিদার’ ভিত্তিতে অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় পাঠানো হচ্ছে বলে সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমান সংবাদকে বলেছেন, ‘কিছু কিছু উপজেলা থেকে অতিরিক্ত চাহিদা দিয়েছিল, সেসব বই সংগ্রহ করে আমরা গুদামে রেখেছি। এগুলো এখন রি-অ্যারেজ করা হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বাড্ডা, কাফরুল ও সাভারের দোহার; নরসিংদীর পলাশ ও রায়পুরা, কুড়িগ্রাম সদর, যশোরের মনিরামপুর, চাঁদপুরের কচুয়াসহ বিভিন্ন জেলার অন্তত ২৯টি উপজেলা থেকে ৬২ থেকে ৬৩ লাখ বই ফেরত এসেছে। এগুলোর সবই মাধ্যমিক স্তরের বই। এসব বই নিয়ে এনসিটিবি কিছুটা সমস্যায়ও পড়েছে। এখন বইগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সরবরাহ করতে হচ্ছে।

একটি বই ছাপতে কত টাকা খরচ হচ্ছে জানতে চাইলে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, ‘মাধ্যমিকের প্রতিটি বই ছাপার খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মতো।’

জানতে চাইলে কাফরুল থানার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জহুরা খাতুন সংবাদকে বলেন, ‘থানায় উদ্বৃত্ত কোনো বই নেই। আমাদের প্রতিটি ক্লাসে ৫/৬ সেট বইয়ের বেশি চাহিদা দেয়া লাগে। এটা দেয়া লাগে, কারণ হুট করে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসে; তারা এসে বইয়ের চাহিদা দেয়। তখন আমাদের কিছু বই দিতেই হয়।’

স্কুলগুলোও বইয়ের ‘অতিরিক্ত চাহিদা’ দিয়ে থাকে জানিয়ে এই শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার হয়তো ১৫ থেকে ২০ সেট বই অতিরিক্ত হতে পারে। এছাড়া বিগত কয়েক বছরের ৫/৬ সেট করে উদ্বৃত্ত বই গুদামে রয়েছে।’

বাড্ডা থানার এক শিক্ষা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, তারা ‘ভুলবশত’ বেশি বইয়ের চাহিদাপত্র এনসিটিবিকে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তারা একাধিকবার সংশোধিত তালিকা পাঠিয়েছিল এনসিটিবিতে। এরপরও বইয়ের চাহিদাপত্র সংশোধন হয়নি।

উদ্বৃত্ত বইগুলো কাজে লাগানো হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান (ছাপাখানা) ঠিকমতো কাজ করতে পারছিল না, তাদের কাজ কমিয়ে দিয়েছি; ১৫টি টেন্ডার ক্যানসেল করেছি; সেসব উপজেলার গুদাম থেকে বই পাঠাচ্ছি।’

এখনও স্কুলপর্যায়ে পৌঁছেনি এক কোটি বই:

এনসিটিবির তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় এক কোটি পাঠ্যবই এখনও সরবরাহের বাকি রয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ২৫ লাখ বই ছাপা হয়নি। বাকি বইগুলো ছাপার কাজ শেষ হলেও বাঁধাইয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব বই বাঁধাইয়ের পর স্কুলপর্যায়ে পাঠানো হবে।

বর্তমানে বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ঈদের পর খুলবে সব

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর আগে চলতি সপ্তাহেই পাঠ্যবই ছাপার কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে বলে বই ছাপার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা আশা করছেন। উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছালেও এসব বই স্কুলপর্যায়ে বিতরণ হবে ঈদের ছুটির পর।

এনসিটিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মঙ্গলবার সংবাদকে জানিয়েছেন, মাধ্যমিকের মোট বইয়ের সংখ্যা ৩০ কোটি ১৯ লাখের মতো। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত পিডিআই (প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন) হয়েছে ২৯ কোটি ৪০ লাখ বই। সেই হিসাবে এখনও প্রায় ৮০ লাখ বই পিডিআইয়ের বাকি রয়েছে।

সাধারণত ছাপাখানায় কাগজ ও কালির মান পরীক্ষা করে পিডিআই রিপোর্ট দিয়ে থাকেন এনসিটিবি নিযুক্ত তদারকি সংস্থা। এরপর তা বাঁধাই করে উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করেন ছাপাখানার মালিকরা। সেই কারণে পিডিআই হলেও সব বই সরবরাহ হয়ে গেছে সেটি বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।

এনসিটিবি জানিয়েছে, চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য মোট ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু ব্রেইল বই এবং শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা বই ছাপার কথা ছিল। পরবর্তীতে বইয়ের সংখ্যা কিছু কমেছে।

তবে এ বিষয়ে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান মঙ্গলবার সংবাদকে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে যে হিসাব এসেছে, তাতে এখনও এক কোটির বেশি বই ছাপার বাকি রয়েছে। আর পিডিআই’র বরাত দিয়ে যে তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন আছে। কারণ তারা এনসিটিবির চাহিদা অনুযায়ী রিপোর্ট দেয়। ছাপা শেষ করতে কয়েকটি ছাপাখানা আরও সময় চেয়ে এনসিটিবির কাছে আবেদন করছে।’

মোট বইয়ের মধ্যে এবার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের দুই কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ শিক্ষার্থীর জন্য ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই ছেপেছে এনসিটিবি।

আর ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর দুই কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপা হচ্ছে।

back to top