জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে—এই বাধা শুধু বাহির থেকে নয়, ভেতর থেকেও আসছে। তিনি মনে করেন, যারা বিদ্যমান কাঠামো টিকিয়ে রাখতে চায়, বিশেষ করে পরাজিত শক্তিগুলো, তারাই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার পাঁয়তারা করছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা স্বৈরাচারী শাসনের জন্য সহায়ক। তাই কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে।
আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাও কার্যত ভেঙে পড়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘নাগরিকদের মতামত ছাড়া কোনো সংস্কার টেকসই হবে না। স্বাধীনতার পর থেকে নানা সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা থাকলেই হবে না, বাস্তবায়নও প্রয়োজন।’’
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ তিনটি—স্বৈরতন্ত্রের পুনরুত্থান রোধ, অপরাধীদের বিচার এবং রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। এগুলো একসঙ্গে সমান্তরালভাবে চালানো সম্ভব।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘‘৯০ শতাংশ মানুষ সংস্কার চায়। এটি এখন জাতীয় দাবি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কারের বাধ্য করতে হবে।’’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং প্রশাসনিক সংস্কার আনতে কমিশনের সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংবিধান কাউকে বদলাতে দেওয়া যাবে না। তবে এর ভেতরে সংযোজিত কালাকানুন ও অসংগতিগুলো সংশোধন করা জরুরি।’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ সাহান বলেন, ‘‘নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে চাপ অব্যাহত না থাকলে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ধীরে ধীরে থেমে যেতে পারে।’’
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বৈঠকের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যেখানে বলা হয়, ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ৬টি কমিশন ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘‘গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের মধ্যে যে আশা সৃষ্টি হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এবং রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।’’
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে—এই বাধা শুধু বাহির থেকে নয়, ভেতর থেকেও আসছে। তিনি মনে করেন, যারা বিদ্যমান কাঠামো টিকিয়ে রাখতে চায়, বিশেষ করে পরাজিত শক্তিগুলো, তারাই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার পাঁয়তারা করছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা স্বৈরাচারী শাসনের জন্য সহায়ক। তাই কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে।
আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাও কার্যত ভেঙে পড়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘নাগরিকদের মতামত ছাড়া কোনো সংস্কার টেকসই হবে না। স্বাধীনতার পর থেকে নানা সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা থাকলেই হবে না, বাস্তবায়নও প্রয়োজন।’’
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ তিনটি—স্বৈরতন্ত্রের পুনরুত্থান রোধ, অপরাধীদের বিচার এবং রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। এগুলো একসঙ্গে সমান্তরালভাবে চালানো সম্ভব।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘‘৯০ শতাংশ মানুষ সংস্কার চায়। এটি এখন জাতীয় দাবি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কারের বাধ্য করতে হবে।’’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং প্রশাসনিক সংস্কার আনতে কমিশনের সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংবিধান কাউকে বদলাতে দেওয়া যাবে না। তবে এর ভেতরে সংযোজিত কালাকানুন ও অসংগতিগুলো সংশোধন করা জরুরি।’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ সাহান বলেন, ‘‘নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে চাপ অব্যাহত না থাকলে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ধীরে ধীরে থেমে যেতে পারে।’’
সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বৈঠকের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যেখানে বলা হয়, ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ৬টি কমিশন ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘‘গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের মধ্যে যে আশা সৃষ্টি হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এবং রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।’’