alt

রাষ্ট্র সংস্কারে বাধা আসছে ভেতর-বাইরে থেকে: আলী রীয়াজ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে—এই বাধা শুধু বাহির থেকে নয়, ভেতর থেকেও আসছে। তিনি মনে করেন, যারা বিদ্যমান কাঠামো টিকিয়ে রাখতে চায়, বিশেষ করে পরাজিত শক্তিগুলো, তারাই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার পাঁয়তারা করছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা স্বৈরাচারী শাসনের জন্য সহায়ক। তাই কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে।

আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাও কার্যত ভেঙে পড়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘‘নাগরিকদের মতামত ছাড়া কোনো সংস্কার টেকসই হবে না। স্বাধীনতার পর থেকে নানা সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা থাকলেই হবে না, বাস্তবায়নও প্রয়োজন।’’

বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ তিনটি—স্বৈরতন্ত্রের পুনরুত্থান রোধ, অপরাধীদের বিচার এবং রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। এগুলো একসঙ্গে সমান্তরালভাবে চালানো সম্ভব।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘‘৯০ শতাংশ মানুষ সংস্কার চায়। এটি এখন জাতীয় দাবি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কারের বাধ্য করতে হবে।’’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং প্রশাসনিক সংস্কার আনতে কমিশনের সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংবিধান কাউকে বদলাতে দেওয়া যাবে না। তবে এর ভেতরে সংযোজিত কালাকানুন ও অসংগতিগুলো সংশোধন করা জরুরি।’’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ সাহান বলেন, ‘‘নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে চাপ অব্যাহত না থাকলে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ধীরে ধীরে থেমে যেতে পারে।’’

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বৈঠকের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যেখানে বলা হয়, ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ৬টি কমিশন ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘‘গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের মধ্যে যে আশা সৃষ্টি হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এবং রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।’’

ছবি

সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

টিআইবির প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ মন্ত্রীদের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি কেনায় অতি আগ্রহ কেন?

ছবি

নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি: ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে অপমানিত করা হয়েছে

ছবি

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ

ছবি

আমি যে কাজ করেছি তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনদিন হয় নি: সিলেটে আসিফ নজরুল

ছবি

অগ্রণী ব্যাংকে শেখ হাসিনার দুটি লকার জব্দ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৬২২

ছবি

মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘে যাচ্ছেন ফখরুল-তাহের-আখতার

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে চারটি পদ্ধতির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ছবি

ডেমু ট্রেন কেনায় রাষ্ট্রের ক্ষতি, দুদকের মামলা

ছবি

বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের প্রধান বিচারপতির বৈঠক

ছবি

ট্রাইব্যুনাল: নাহিদের সাক্ষ্য বুধবার, মাহমুদুর রহমানের জেরা শুরু

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, দলগুলোর সঙ্গে বুধবার আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন

ছবি

ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা: বাংলাদেশ-ভারতের ভৌগোলিক নৈকট্য ও আন্তঃনির্ভতা নতুন সুযোগে রূপান্তরের সম্ভাবনা

ছবি

ধর্মীয় উৎসবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নয়, সমান নাগরিক অধিকারের বাংলাদেশ চান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি

ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য বুধবার

ছবি

জুলাই আন্দোলন: ইনু-নূরসহ ৯ আসামির ভার্চুয়াল হাজিরা

ছবি

বাংলাদেশে উষ্ণায়নের প্রভাব: কর্মদিবস নষ্ট, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যে বড় ক্ষতি

ছবি

এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য সচিব

ছবি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ দফা জরুরি নির্দেশনা

ছবি

দুর্গাপূজা প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অতিরিক্ত মহাপরিচালকদের দপ্তর বদল, একজনকে ওএসডি

ছবি

ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাল বাংলাদেশ

ছবি

আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

ছবি

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ছাড়াল ৩৮ হাজার

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে অঙ্গীকার ইউনূসের

ছবি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি : মাইকেল মিলার

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার হাতে ১২ তরুণ পেলেন ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’

ছবি

ইসিতে নিবন্ধন: নতুন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চলছে

ছবি

সেপ্টেম্বরের শেষে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি

ছবি

দ্বিমতের কোনো জায়গা নাই, এই সুযোগ আর আসবে না: ইউনূস

ছবি

নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারিত সময়ের আগেই

ছবি

মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানোতে ১১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাত: ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা সিদ্ধান্ত

ছবি

টাইফয়েড টিকা কর্মসূচি: দেড় মাসে নিবন্ধন প্রায় ৮৯ লাখ শিশু

tab

রাষ্ট্র সংস্কারে বাধা আসছে ভেতর-বাইরে থেকে: আলী রীয়াজ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে—এই বাধা শুধু বাহির থেকে নয়, ভেতর থেকেও আসছে। তিনি মনে করেন, যারা বিদ্যমান কাঠামো টিকিয়ে রাখতে চায়, বিশেষ করে পরাজিত শক্তিগুলো, তারাই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার পাঁয়তারা করছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিদ্যমান শাসনব্যবস্থা স্বৈরাচারী শাসনের জন্য সহায়ক। তাই কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে।

আলী রীয়াজ বলেন, নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংস্কার এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছরে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাও কার্যত ভেঙে পড়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘‘নাগরিকদের মতামত ছাড়া কোনো সংস্কার টেকসই হবে না। স্বাধীনতার পর থেকে নানা সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা লেখা থাকলেই হবে না, বাস্তবায়নও প্রয়োজন।’’

বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ তিনটি—স্বৈরতন্ত্রের পুনরুত্থান রোধ, অপরাধীদের বিচার এবং রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর। এগুলো একসঙ্গে সমান্তরালভাবে চালানো সম্ভব।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘‘৯০ শতাংশ মানুষ সংস্কার চায়। এটি এখন জাতীয় দাবি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কারের বাধ্য করতে হবে।’’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং প্রশাসনিক সংস্কার আনতে কমিশনের সুপারিশগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংবিধান কাউকে বদলাতে দেওয়া যাবে না। তবে এর ভেতরে সংযোজিত কালাকানুন ও অসংগতিগুলো সংশোধন করা জরুরি।’’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ সাহান বলেন, ‘‘নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে চাপ অব্যাহত না থাকলে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম ধীরে ধীরে থেমে যেতে পারে।’’

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বৈঠকের শুরুতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, যেখানে বলা হয়, ১১টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে ৬টি কমিশন ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘‘গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের মধ্যে যে আশা সৃষ্টি হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এবং রাষ্ট্রে ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।’’

back to top