জানিনা মেয়ের হত্যার বিচার পাবো কিনা : বাবা শিগগিরই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবো : পিবিআইয়ের নতুন তদন্ত কর্মকর্তা
দেশব্যাপী বহুল আলোচিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের ৯ বছরেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। শুরুতে পুলিশ, ডিবি ও পরে সিআইডি মামলা তদন্ত করে কোনো কুল-কিনারা খুঁজে পায়নি। সর্বশেষ পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলার নথি পিবিআই-ঢাকা কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকার পতনের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা পুনরায় পরিবর্তন করা হয়েছে। দফায় দফায় তদন্ত সংস্থা এবং তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনেও এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলেনি। এছাড়া দুই দফায় করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও তার মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তাই মামলার তদন্তে মৃত্যুর রহস্য বের না হওয়া এবং বিচার না পাওয়ার শংকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তনুর পরিবার। তবে গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই কর্মকর্তা।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তনুর মরদেহের প্রথম দফায় ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ বের না হওয়ায় ৩০ মার্চ কবর থেকে মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। এতেও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়নি। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সর্বশেষ ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে কুমিল্লা সিআইডি থেকে মামলার ডকেট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকায় হস্তান্তর হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৫ আগস্টের পর তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই ঢাকা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. তরিকুল ইসলাম।
তনুর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেল বলেন, বর্তমানে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ইলেকট্রিক্যাল পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করছি। আমার বাবা ইয়ার হোসেন একই অফিস থেকে গত জানুয়ারি মাসে অবসরে যান। তিনি আরও বলেন, নতুন তদন্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব পেয়ে একবার বাবাকে কল করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে এ পর্যন্ত আর যোগাযোগ নেই। তনুর মা আনোয়ারা বলেন, রোজার সময় আমার মেয়ে তনু ইফতারি তৈরী ও সেহরির আয়োজন করতো। রাত-দিন শুধু মেয়েটার কথা মনে হয়। চোখের পানি ফেলে যাচ্ছি, দেশে সব হত্যার বিচার হয়, আমরার তনুর বিচার পাইলাম না। আমার তনুকে কারা মেরেছে আল্লাহ দেখেছে, এ জগতে বিচার না পাইলে পরকালে তো পাবো।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়েটা সুস্থ্য ছিল। তাহলে সে মরলো কিভাবে? ঘটনার রাতে তাকে জঙ্গলে কে নিয়ে গেল ? শুরুতে তনুর পরিধেয় বস্ত্র ও কিছু সন্দেহভাজন লোকের ডিএনএ সংগ্রহ করার কথা বলা হলেও এর ফলাফল কি এসেছে তা আজও আমরা জানতে পারিনি। তিনি বলেন, সিআইডির তৎকালীন পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ মামলাটির তদন্তে বিশেষ তদারকী করতে কুমিল্লার এসপি অফিসে আসেন। সিআইডির সদর দপ্তরে গিয়েও আমরা একাধিকবার সাক্ষ্য দিয়েছি, কিন্তু কোনো ফল পেলাম না। সিআইডি মামলাটি ফেলে রেখে পিবিআইয়ে দেয়। তারাও (পিবিআই) আগের অবস্থায় ফেলে রেখে আবার নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে। জানি না মেয়ে হত্যার বিচার পাবো কিনা।
মামলার নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তনুর পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। রমজানের শেষ দিকে কিংবা ঈদের পর ঘটনাস্থলে যাবো। এজন্য কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে। তদন্তের অগ্রগতি কিংবা ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, এ মুহুর্তে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            জানিনা মেয়ের হত্যার বিচার পাবো কিনা : বাবা শিগগিরই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবো : পিবিআইয়ের নতুন তদন্ত কর্মকর্তা
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
দেশব্যাপী বহুল আলোচিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের ৯ বছরেও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। শুরুতে পুলিশ, ডিবি ও পরে সিআইডি মামলা তদন্ত করে কোনো কুল-কিনারা খুঁজে পায়নি। সর্বশেষ পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলার নথি পিবিআই-ঢাকা কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকার পতনের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা পুনরায় পরিবর্তন করা হয়েছে। দফায় দফায় তদন্ত সংস্থা এবং তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনেও এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলেনি। এছাড়া দুই দফায় করা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেও তার মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তাই মামলার তদন্তে মৃত্যুর রহস্য বের না হওয়া এবং বিচার না পাওয়ার শংকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তনুর পরিবার। তবে গুরুত্ব দিয়ে মামলার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই কর্মকর্তা।
জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তার বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তনুর মরদেহের প্রথম দফায় ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ বের না হওয়ায় ৩০ মার্চ কবর থেকে মরদেহ তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। এতেও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়নি। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সর্বশেষ ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে কুমিল্লা সিআইডি থেকে মামলার ডকেট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকায় হস্তান্তর হয়। সর্বশেষ গত বছরের ৫ আগস্টের পর তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআই ঢাকা কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. তরিকুল ইসলাম।
তনুর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেল বলেন, বর্তমানে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের ইলেকট্রিক্যাল পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করছি। আমার বাবা ইয়ার হোসেন একই অফিস থেকে গত জানুয়ারি মাসে অবসরে যান। তিনি আরও বলেন, নতুন তদন্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব পেয়ে একবার বাবাকে কল করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে এ পর্যন্ত আর যোগাযোগ নেই। তনুর মা আনোয়ারা বলেন, রোজার সময় আমার মেয়ে তনু ইফতারি তৈরী ও সেহরির আয়োজন করতো। রাত-দিন শুধু মেয়েটার কথা মনে হয়। চোখের পানি ফেলে যাচ্ছি, দেশে সব হত্যার বিচার হয়, আমরার তনুর বিচার পাইলাম না। আমার তনুকে কারা মেরেছে আল্লাহ দেখেছে, এ জগতে বিচার না পাইলে পরকালে তো পাবো।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়েটা সুস্থ্য ছিল। তাহলে সে মরলো কিভাবে? ঘটনার রাতে তাকে জঙ্গলে কে নিয়ে গেল ? শুরুতে তনুর পরিধেয় বস্ত্র ও কিছু সন্দেহভাজন লোকের ডিএনএ সংগ্রহ করার কথা বলা হলেও এর ফলাফল কি এসেছে তা আজও আমরা জানতে পারিনি। তিনি বলেন, সিআইডির তৎকালীন পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ মামলাটির তদন্তে বিশেষ তদারকী করতে কুমিল্লার এসপি অফিসে আসেন। সিআইডির সদর দপ্তরে গিয়েও আমরা একাধিকবার সাক্ষ্য দিয়েছি, কিন্তু কোনো ফল পেলাম না। সিআইডি মামলাটি ফেলে রেখে পিবিআইয়ে দেয়। তারাও (পিবিআই) আগের অবস্থায় ফেলে রেখে আবার নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে। জানি না মেয়ে হত্যার বিচার পাবো কিনা।
মামলার নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছি। তনুর পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। রমজানের শেষ দিকে কিংবা ঈদের পর ঘটনাস্থলে যাবো। এজন্য কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে। তদন্তের অগ্রগতি কিংবা ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, এ মুহুর্তে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।
