বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। এই প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা’ বা ‘জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এ প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে, যেগুলো হলো টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ।
আজ শনিবার, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদসহ অন্য সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বিটিভি, বেতার এবং বাসস স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনায় চলে, কিন্তু কমিশন মনে করছে, এই তিনটি প্রতিষ্ঠান এক ছাদের নিচে নিয়ে আসলে তাদের সম্পদ, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যাবে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, টেলিভিশন ও বেতার একীভূতভাবে একটি সংঘবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের শাখা হিসেবে কাজ করলে সংস্থার কার্যক্রম আরও কার্যকর হবে। এর মতো একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবিসি ও ডয়চে ভেলের মডেল তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান দুটি সংবাদ ও সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠানমালার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ভিডিও ও অডিও ফরম্যাটের মধ্যে সীমাবদ্ধতা না রেখে, বেতারের অনেক অনুষ্ঠান এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিং করা হয়। বাংলাদেশ বেতার ঢাকাসহ আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে তা নিয়মিতভাবে করছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বিটিভি ও বেতারের মধ্যে সহযোগিতার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
কমিশন জানায়, বিটিভি ও বেতার উভয়ের বার্তাকক্ষ পেশাদার সাংবাদিকতার সাথে পরিচিত নয়, বরং এগুলো প্রধানত সরকারি তথ্যবিবরণী, রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের খবর ও উন্নয়ন বার্তা প্রচারে অভ্যস্ত। বর্তমানের পরিস্থিতি হলো, সরকারি তথ্য (সম্প্রচার) কর্মকর্তারা বার্তা বিভাগের নেতৃত্ব দেন এবং রিপোর্টারদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ খুবই সীমিত। অন্যদিকে, বাসসে কিছু পেশাদার সাংবাদিকতা রয়েছে, কিন্তু সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও দলীয়করণের কারণে এটি একটি আদর্শ বার্তা সংস্থা হতে পারেনি। প্রথম প্রেস কমিশনের রিপোর্টে সরকারের মালিকানায় বার্তা সংস্থা না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক মানের সংবাদ সংস্থা তৈরির প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
কমিশন মনে করছে, বাসসকে একীভূত করার মাধ্যমে বিটিভি ও বেতারের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার সম্ভব হবে। এই কেন্দ্রীয় বার্তা কক্ষের তৈরি খবর বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হবে। বিটিভি, বেতার এবং বাসসের সমন্বয়ে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হতে পারে, যার নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা’ বা ‘জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এই প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে—টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ। নতুন প্রতিষ্ঠানে বার্তা বিভাগ তার বর্তমান গ্রাহকদের সেবা অব্যাহত রাখবে। প্রতিটি বিভাগের প্রধান হিসেবে একজন পরিচালক থাকবেন, এবং একীভূত প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে একজন মহাপরিচালক নিয়োগ করা হবে।
এছাড়া, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এবং প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন’ গঠনের সুপারিশ করেছে। নতুন এই কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
এই সুপারিশগুলো যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর মধ্যে নতুন একটি যুগের সূচনা হতে পারে, যেখানে সরকারি প্রচারণার পাশাপাশি পেশাদার সাংবাদিকতা ও সৃজনশীলতা একীভূত হবে।
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। এই প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা’ বা ‘জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এ প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে, যেগুলো হলো টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ।
আজ শনিবার, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদসহ অন্য সদস্যরা প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর সংবাদ ব্রিফিংয়ে কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে বিটিভি, বেতার এবং বাসস স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনায় চলে, কিন্তু কমিশন মনে করছে, এই তিনটি প্রতিষ্ঠান এক ছাদের নিচে নিয়ে আসলে তাদের সম্পদ, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা সর্বোত্তমভাবে ব্যবহার করা যাবে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, টেলিভিশন ও বেতার একীভূতভাবে একটি সংঘবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের শাখা হিসেবে কাজ করলে সংস্থার কার্যক্রম আরও কার্যকর হবে। এর মতো একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবিসি ও ডয়চে ভেলের মডেল তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান দুটি সংবাদ ও সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠানমালার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ভিডিও ও অডিও ফরম্যাটের মধ্যে সীমাবদ্ধতা না রেখে, বেতারের অনেক অনুষ্ঠান এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিং করা হয়। বাংলাদেশ বেতার ঢাকাসহ আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলোতে তা নিয়মিতভাবে করছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বিটিভি ও বেতারের মধ্যে সহযোগিতার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
কমিশন জানায়, বিটিভি ও বেতার উভয়ের বার্তাকক্ষ পেশাদার সাংবাদিকতার সাথে পরিচিত নয়, বরং এগুলো প্রধানত সরকারি তথ্যবিবরণী, রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের খবর ও উন্নয়ন বার্তা প্রচারে অভ্যস্ত। বর্তমানের পরিস্থিতি হলো, সরকারি তথ্য (সম্প্রচার) কর্মকর্তারা বার্তা বিভাগের নেতৃত্ব দেন এবং রিপোর্টারদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ খুবই সীমিত। অন্যদিকে, বাসসে কিছু পেশাদার সাংবাদিকতা রয়েছে, কিন্তু সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও দলীয়করণের কারণে এটি একটি আদর্শ বার্তা সংস্থা হতে পারেনি। প্রথম প্রেস কমিশনের রিপোর্টে সরকারের মালিকানায় বার্তা সংস্থা না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক মানের সংবাদ সংস্থা তৈরির প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
কমিশন মনে করছে, বাসসকে একীভূত করার মাধ্যমে বিটিভি ও বেতারের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার সম্ভব হবে। এই কেন্দ্রীয় বার্তা কক্ষের তৈরি খবর বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হবে। বিটিভি, বেতার এবং বাসসের সমন্বয়ে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হতে পারে, যার নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা’ বা ‘জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এই প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে—টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ। নতুন প্রতিষ্ঠানে বার্তা বিভাগ তার বর্তমান গ্রাহকদের সেবা অব্যাহত রাখবে। প্রতিটি বিভাগের প্রধান হিসেবে একজন পরিচালক থাকবেন, এবং একীভূত প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে একজন মহাপরিচালক নিয়োগ করা হবে।
এছাড়া, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এবং প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ গণমাধ্যম কমিশন’ গঠনের সুপারিশ করেছে। নতুন এই কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
এই সুপারিশগুলো যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর মধ্যে নতুন একটি যুগের সূচনা হতে পারে, যেখানে সরকারি প্রচারণার পাশাপাশি পেশাদার সাংবাদিকতা ও সৃজনশীলতা একীভূত হবে।