টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ব্যাংক ও জেলা প্রশাসনের আলাদা মামলা অভিযুক্তের সন্ধান এখনও পায়নি পুলিশ
রূপালী ব্যাংকে জমি মর্টগেজ রেখে ঋণ নেয়া হয় ৫০ কোটি টাকা। সেই জমির একাংশ ভৈরব সেতু নির্মাণে অধিগ্রহণ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। তবে সেই ঋণের তথ্য গোপন করে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি এ অর্থ তুলে নিয়েছেন পাটরপ্তানিকারক ঢাকা জুট টেডিং হাউস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান। সম্প্রতি ঘটনাটি প্রকাশ্যে এলে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ব্যাংক ও জেলা প্রশাসন পৃথক দুটি মামলা করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১২ সালের ১৯ মার্চ রূপালী ব্যাংক দৌলতপুর করপোরেট শাখা থেকে ৫০ কোটি টাকা সিপি হাইপো ঋণ গ্রহণ করেন পাটরপ্তানিকারক টিপু সুলতান। এই ঋণের মর্টগেজ (বন্ধক) হিসাবে খুলনার রেলগেটস্থ ঢাকা ট্রেডিং হাউসের ১১ দশমিক ২২ একর জমি ওই ব্যাংকে রাখা হয়। গত ২০১২ সালে থেকে গত ২০১৬ সাল পর্যন্ত কয়েক দফায় ওই ঋণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে নবায়ন করেন টিপু সুলতান। এরপর গত ২০১২ সাল থেকে গত ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঋণের সুদসহ সব লেজার স্থিতি ১০ বছরে পরিশোধের ব্লক সুবিধা গ্রহণ ও নবায়ন করেন। এরপর ফের গত ২০১৮ সাল থেকে গত ২০২২ সাল পর্যন্ত ওই ঋণ নবায়ন করেন। সর্বশেষ গত ২০২৩ সালের ২২ জুন ঋণের সুদসহ সব লেজার স্থিতি ১০ বছরে পরিশোধের ব্লক সুবিধা গ্রহণ করেন।
খুলনা শহরের সঙ্গে দিঘলিয়া উপজেলার যোগাযোগ সহজ করতে ভৈরব নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য ওই জমির একাংশ অধিগ্রহণ করে খুলনা জেলা প্রশাসন। বহুবিধ সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও টিপু সুলতান মর্টগেজের হলফনামার তথ্য গোপন করে গত ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট ১ দশমিক ৭৫ একর জমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অধিগ্রহণে সহায়তা হিসাবে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪৪ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ২৯০ টাকা তুলে নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে ব্যাংকের বন্ধক থাকা জমি বিক্রির জন্য লিগ্যাল নোটিশ দেন। কিন্তু এতে সাড়া না মেলায় গত ডিসেম্বর মাসে রূপালী ব্যাংক দৌলতপুর করপোরেট শাখার প্রধান উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. ইমন আলী বাদী হয়ে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে একটি মামলা করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা দেয়া সত্ত্বেও ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সম্পত্তির হলফনামার তথ্য গোপন করে এই টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। মামলাটি আদালত গ্রহণ করে পিবিআই খুলনাকে তদন্তর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে খুলনার পিবিআই পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন জানান, তিনি মামলাটি তদন্ত
করছেন, তবে টিপু সুলতানের সন্ধান এখনও পাননি। তার সন্ধান পেতে সব ঠিকানায় অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
বক্তব্য পেতে টিপু সুলতানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গেলেও প্রসঙ্গটি নিয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সার্ভেয়ার (অধিগ্রহণ শাখা) মো. মোতালেব জানান, দীর্ঘদিন অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চললেও উভয়পক্ষের কেউ বিষয়টি অবহিত করেনি। ওই জমিতে ব্যাংকের কোনো সাইনবোর্ডও ছিল না। তবে ব্যাংক থেকে জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হলে তদন্তপূর্বক জেলা প্রশাসনকে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য টিপু সুলতানকে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু টিপু সুলতান টাকা ফেরত না দেয়ার তার বিরুদ্ধে গত ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ব্যাংক ও জেলা প্রশাসনের আলাদা মামলা অভিযুক্তের সন্ধান এখনও পায়নি পুলিশ
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
রূপালী ব্যাংকে জমি মর্টগেজ রেখে ঋণ নেয়া হয় ৫০ কোটি টাকা। সেই জমির একাংশ ভৈরব সেতু নির্মাণে অধিগ্রহণ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। তবে সেই ঋণের তথ্য গোপন করে অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি এ অর্থ তুলে নিয়েছেন পাটরপ্তানিকারক ঢাকা জুট টেডিং হাউস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান। সম্প্রতি ঘটনাটি প্রকাশ্যে এলে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ব্যাংক ও জেলা প্রশাসন পৃথক দুটি মামলা করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী ওই ব্যক্তি রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১২ সালের ১৯ মার্চ রূপালী ব্যাংক দৌলতপুর করপোরেট শাখা থেকে ৫০ কোটি টাকা সিপি হাইপো ঋণ গ্রহণ করেন পাটরপ্তানিকারক টিপু সুলতান। এই ঋণের মর্টগেজ (বন্ধক) হিসাবে খুলনার রেলগেটস্থ ঢাকা ট্রেডিং হাউসের ১১ দশমিক ২২ একর জমি ওই ব্যাংকে রাখা হয়। গত ২০১২ সালে থেকে গত ২০১৬ সাল পর্যন্ত কয়েক দফায় ওই ঋণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে নবায়ন করেন টিপু সুলতান। এরপর গত ২০১২ সাল থেকে গত ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঋণের সুদসহ সব লেজার স্থিতি ১০ বছরে পরিশোধের ব্লক সুবিধা গ্রহণ ও নবায়ন করেন। এরপর ফের গত ২০১৮ সাল থেকে গত ২০২২ সাল পর্যন্ত ওই ঋণ নবায়ন করেন। সর্বশেষ গত ২০২৩ সালের ২২ জুন ঋণের সুদসহ সব লেজার স্থিতি ১০ বছরে পরিশোধের ব্লক সুবিধা গ্রহণ করেন।
খুলনা শহরের সঙ্গে দিঘলিয়া উপজেলার যোগাযোগ সহজ করতে ভৈরব নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য ওই জমির একাংশ অধিগ্রহণ করে খুলনা জেলা প্রশাসন। বহুবিধ সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও টিপু সুলতান মর্টগেজের হলফনামার তথ্য গোপন করে গত ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট ১ দশমিক ৭৫ একর জমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অধিগ্রহণে সহায়তা হিসাবে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪৪ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ২৯০ টাকা তুলে নেন। বিষয়টি জানতে পেরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে ব্যাংকের বন্ধক থাকা জমি বিক্রির জন্য লিগ্যাল নোটিশ দেন। কিন্তু এতে সাড়া না মেলায় গত ডিসেম্বর মাসে রূপালী ব্যাংক দৌলতপুর করপোরেট শাখার প্রধান উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. ইমন আলী বাদী হয়ে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে একটি মামলা করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা দেয়া সত্ত্বেও ঋণের বিপরীতে বন্ধকীকৃত সম্পত্তির হলফনামার তথ্য গোপন করে এই টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। মামলাটি আদালত গ্রহণ করে পিবিআই খুলনাকে তদন্তর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে খুলনার পিবিআই পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন জানান, তিনি মামলাটি তদন্ত
করছেন, তবে টিপু সুলতানের সন্ধান এখনও পাননি। তার সন্ধান পেতে সব ঠিকানায় অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
বক্তব্য পেতে টিপু সুলতানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গেলেও প্রসঙ্গটি নিয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সার্ভেয়ার (অধিগ্রহণ শাখা) মো. মোতালেব জানান, দীর্ঘদিন অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চললেও উভয়পক্ষের কেউ বিষয়টি অবহিত করেনি। ওই জমিতে ব্যাংকের কোনো সাইনবোর্ডও ছিল না। তবে ব্যাংক থেকে জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হলে তদন্তপূর্বক জেলা প্রশাসনকে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য টিপু সুলতানকে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু টিপু সুলতান টাকা ফেরত না দেয়ার তার বিরুদ্ধে গত ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা হয়েছে।