বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ’ না পাওয়ায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ও দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে কথা হয়েছে, তবে প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো ডেডলাইন না দিয়ে আবারও ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন বলে জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকের আলোচনা নিয়ে ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।
যেহেতু প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের রোডম্যাপ দেননি, সে হিসেবে নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দলটি। আর ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ‘খারাপ হতে পারে’ বলেও আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বরাবরের মতোই নির্বাচনের নির্দিষ্ট কোনো ডেইট (তারিখ) দেননি। তাই আমরা এই বৈঠকের আলোচনায় একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’ তবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘বিএনপি আলোচনায় সন্তুষ্ট হয়নি বলেছে, এটা আমরা শুনেছি। তবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট হয়েছে।’
বুধবার, ১৬ এপ্রিল দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় (প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) পৌনে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে যমুনার সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকের বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট করে বলেননি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে না তাও তিনি বলেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা বলেছি, ডিসেম্বর নির্বাচনের কাট অফ সময়।’
বিএনপি ডিসেম্বরে নির্বাচন চাওয়ার পাশাপাশি এ নিয়ে রোডম্যাপ চেয়ে আসছিল। এর মাঝেই নির্বাচন নিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে এবং সরকারের অবস্থান জানতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপি। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যুমনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সময়ে প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি প্রতিনিধিদলকে বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তার সব কার্যক্রম চলছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির এই বৈঠকের সন্তুষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।’ আর এমন কিছু হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দেশের যে অবস্থা, অতিদ্রুত নির্বাচন দিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দলের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। এছাড়া আমাদের মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা আবার
আপনাদের সামনে আসব এবং আমাদের অবস্থান জানাবো।’
এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘বিএনপির সঙ্গে খুব খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তারা মন খুলে প্রশ্ন করেছে আমরা উত্তর দিয়েছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিক।’ সরকার বিএনপির মতামত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আসিফ নজরুল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে যা বলেছেন তাই শেষ কথা। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। ডিসেম্বর থেকে জুন বলতে ডিসেম্বর থেকে জুন, এর ব্যতিক্রম হবে না।’
সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ হলেও নির্বাচনে দেরি কেন বৈঠকে বিএনপি এমন প্রশ্ন রেখেছেন বলে জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘বিএনপির এই প্রশ্নের জবাবে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি জুনের মধ্যেই নির্বাচন। কোনো কারণেই এর থেকে বেশি সময় আমাদের ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নাই।’
বিএনপি যেসব আশঙ্কা করছে সেই সব আশঙ্কার ‘কোনো কারণ নেই’ বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে দুপুর ১২টার দিকে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল যমুনায় প্রবেশ করেন। বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মির্জা আব্বাস। এই বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির আরও দুই সদস্যের থাকার কথা ছিল। তারা হলেন, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। হাফিজ উদ্দিন অসুস্থ, তিনি সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি এবং গয়েশ্বর ভিন্ন কোনো কারণে বৈঠকে আসেননি বলে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে ‘সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ’ না পাওয়ায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ও দ্রুত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে কথা হয়েছে, তবে প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো ডেডলাইন না দিয়ে আবারও ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন বলে জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকের আলোচনা নিয়ে ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।
যেহেতু প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের রোডম্যাপ দেননি, সে হিসেবে নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দলটি। আর ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ‘খারাপ হতে পারে’ বলেও আশঙ্কা মির্জা ফখরুলের।
মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বরাবরের মতোই নির্বাচনের নির্দিষ্ট কোনো ডেইট (তারিখ) দেননি। তাই আমরা এই বৈঠকের আলোচনায় একেবারেই সন্তুষ্ট নই।’ তবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘বিএনপি আলোচনায় সন্তুষ্ট হয়নি বলেছে, এটা আমরা শুনেছি। তবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট হয়েছে।’
বুধবার, ১৬ এপ্রিল দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় (প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) পৌনে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে যমুনার সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকের বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট করে বলেননি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে না তাও তিনি বলেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা বলেছি, ডিসেম্বর নির্বাচনের কাট অফ সময়।’
বিএনপি ডিসেম্বরে নির্বাচন চাওয়ার পাশাপাশি এ নিয়ে রোডম্যাপ চেয়ে আসছিল। এর মাঝেই নির্বাচন নিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে এবং সরকারের অবস্থান জানতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপি। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যুমনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সময়ে প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি প্রতিনিধিদলকে বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তার সব কার্যক্রম চলছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির এই বৈঠকের সন্তুষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।’ আর এমন কিছু হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দেশের যে অবস্থা, অতিদ্রুত নির্বাচন দিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দলের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। এছাড়া আমাদের মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা আবার
আপনাদের সামনে আসব এবং আমাদের অবস্থান জানাবো।’
এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘বিএনপির সঙ্গে খুব খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তারা মন খুলে প্রশ্ন করেছে আমরা উত্তর দিয়েছি। আমাদের কাছে মনে হয়েছে সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত আন্তরিক।’ সরকার বিএনপির মতামত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আসিফ নজরুল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে যা বলেছেন তাই শেষ কথা। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। ডিসেম্বর থেকে জুন বলতে ডিসেম্বর থেকে জুন, এর ব্যতিক্রম হবে না।’
সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ হলেও নির্বাচনে দেরি কেন বৈঠকে বিএনপি এমন প্রশ্ন রেখেছেন বলে জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘বিএনপির এই প্রশ্নের জবাবে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি জুনের মধ্যেই নির্বাচন। কোনো কারণেই এর থেকে বেশি সময় আমাদের ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নাই।’
বিএনপি যেসব আশঙ্কা করছে সেই সব আশঙ্কার ‘কোনো কারণ নেই’ বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে দুপুর ১২টার দিকে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল যমুনায় প্রবেশ করেন। বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মির্জা আব্বাস। এই বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির আরও দুই সদস্যের থাকার কথা ছিল। তারা হলেন, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। হাফিজ উদ্দিন অসুস্থ, তিনি সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি এবং গয়েশ্বর ভিন্ন কোনো কারণে বৈঠকে আসেননি বলে দলের একটি সূত্র জানিয়েছে।