‘বহুত্ববাদের’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একই সঙ্গে শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’র বিচারসহ সংগঠনের নেতারা পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা দেড়টার দিকে হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ সভা শেষে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এ কথা জানান।
এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে এ সভা শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আমির শাহ মহীবুল্লাহ বাবুনগরী।
হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ফ্যাসিবাদী’ আমলে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’, ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনে ‘হত্যা’সহ বিভিন্ন সময় হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার এবং হেফাজত ইসলামের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় কিছু বিতর্কিত বিষয় স্থান পেয়েছে বলে মনে করে হেফাজতে ইসলাম। বিশেষ করে ‘বহুত্ববাদের’ প্রস্তাবনাকে প্রত্যাখ্যান হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলেন, ‘এই প্রস্তাবনা বাতিল করে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিল করতে হবে বলেও হেফাজতে ইসলামের নেতারা জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, বিশেষ করে দেশটির পার্লামেন্টে সম্প্রতি যে ‘ওয়াক্ফ’ আইন সংশোধনী পাস হয়েছে, সেটি বাতিল করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
এ ছাড়া তারা প্যালেস্টাইনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদ এবং সেই গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতৃত্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
মামুনুল হক আরও বলেন, ‘শনিবার (১৯ এপ্রিল) নারী অধিকার সংস্কার কমিশন কর্তৃক যে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে, সেটি ঐকমত্য কমিশনে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। আমরা এই প্রস্তাবনা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি এবং এই প্রস্তাবনা বাতিলের দাবি করছি।’
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের বিতর্কিত, ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী, সরাসরি ইসলামবিরোধী, কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ন্যক্কারজনক কটাক্ষপূর্ণ প্রস্তাবনা দেয়ার কারণে এই কমিশন বাতিলের দাবি করছি। প্রধান উপদেষ্টার ফেইসবুক পেইজ থেকে এই প্রস্তাবনা প্রচারণা এবং সেটি এই সরকারের আমলে বাস্তবায়নের প্রত্যয় করা হয়েছে। আমরা এই ঘোষণা প্রত্যাহারেরও দাবি জানাচ্ছি।’
আগামী ৩ মের আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এই ঘোষণা ও নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা প্রত্যাহার এবং ইসলামকে ‘কটাক্ষপূর্ণ’ প্রস্তাবনা দেয়ার দায়ে এই কমিশনকে বাতিল করা না হলে ৩ মের মহাসমাবেশ থেকে হেফাজতে ইসলাম পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলেও জানান মামুনুল হক।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, তাদের বিশেষ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ৩ মে শনিবার রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ সমাবেশ হবে। সেখানে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হবে।
মহাসমাবেশ সফল করতে আগামীকাল থেকে পরবর্তী সপ্তাহের সোমবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশব্যাপী গণসংযোগ করা হবে বলে জানিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৮ নভেম্বর ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে। ১৯ এপ্রিল এ কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়া হয়।
‘বহুত্ববাদের’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একই সঙ্গে শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’র বিচারসহ সংগঠনের নেতারা পাঁচটি দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা দেড়টার দিকে হেফাজতে ইসলামের কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ সভা শেষে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এ কথা জানান।
এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে এ সভা শুরু হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আমির শাহ মহীবুল্লাহ বাবুনগরী।
হেফাজতে ইসলামের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ফ্যাসিবাদী’ আমলে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’, ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনে ‘হত্যা’সহ বিভিন্ন সময় হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার এবং হেফাজত ইসলামের নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় কিছু বিতর্কিত বিষয় স্থান পেয়েছে বলে মনে করে হেফাজতে ইসলাম। বিশেষ করে ‘বহুত্ববাদের’ প্রস্তাবনাকে প্রত্যাখ্যান হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলেন, ‘এই প্রস্তাবনা বাতিল করে আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিল করতে হবে বলেও হেফাজতে ইসলামের নেতারা জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, বিশেষ করে দেশটির পার্লামেন্টে সম্প্রতি যে ‘ওয়াক্ফ’ আইন সংশোধনী পাস হয়েছে, সেটি বাতিল করতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানোর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
এ ছাড়া তারা প্যালেস্টাইনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদ এবং সেই গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতৃত্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
মামুনুল হক আরও বলেন, ‘শনিবার (১৯ এপ্রিল) নারী অধিকার সংস্কার কমিশন কর্তৃক যে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে, সেটি ঐকমত্য কমিশনে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। আমরা এই প্রস্তাবনা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি এবং এই প্রস্তাবনা বাতিলের দাবি করছি।’
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের বিতর্কিত, ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী, সরাসরি ইসলামবিরোধী, কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ন্যক্কারজনক কটাক্ষপূর্ণ প্রস্তাবনা দেয়ার কারণে এই কমিশন বাতিলের দাবি করছি। প্রধান উপদেষ্টার ফেইসবুক পেইজ থেকে এই প্রস্তাবনা প্রচারণা এবং সেটি এই সরকারের আমলে বাস্তবায়নের প্রত্যয় করা হয়েছে। আমরা এই ঘোষণা প্রত্যাহারেরও দাবি জানাচ্ছি।’
আগামী ৩ মের আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এই ঘোষণা ও নারী অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা প্রত্যাহার এবং ইসলামকে ‘কটাক্ষপূর্ণ’ প্রস্তাবনা দেয়ার দায়ে এই কমিশনকে বাতিল করা না হলে ৩ মের মহাসমাবেশ থেকে হেফাজতে ইসলাম পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলেও জানান মামুনুল হক।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, তাদের বিশেষ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামী ৩ মে শনিবার রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এ সমাবেশ হবে। সেখানে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হবে।
মহাসমাবেশ সফল করতে আগামীকাল থেকে পরবর্তী সপ্তাহের সোমবার (২৮ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশব্যাপী গণসংযোগ করা হবে বলে জানিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক।
অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৮ নভেম্বর ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে। ১৯ এপ্রিল এ কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়া হয়।