সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও ইমারত বিধি লঙ্ঘনের মামলার বিচার এক যুগেও শেষ হয়নি। হত্যা মামলায় ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হলেও, মামলার নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট সময় বলা কঠিন। ইমারত বিধি না মেনে ভবন নির্মাণের মামলার কার্যক্রমও দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রয়েছে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইকবাল হোসেন জানালেন, "বিচার কার্যক্রম এতদিন স্থগিত থাকার পিছনে বিগত সরকারের অবহেলা রয়েছে।" রানা প্লাজা ধসের পরপর বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হলেও, হত্যা ও ইমারত বিধি লঙ্ঘন সম্পর্কিত দুটি মামলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ে, যেখানে কয়েকটি পোশাক কারখানার প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক আটকা পড়েন। উদ্ধার অভিযান শেষে ১,১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং ২,৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দাখিল হয়, তবে মামলার কার্যক্রম একাধিক স্থগিতাদেশের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়।
হত্যা মামলার প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে, তবে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে প্রায় পাঁচ বছর মামলা আটকে ছিল। ২০২২ সালে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও, এখনও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।
সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ছিল। তবে ওইদিন কোনো সাক্ষী আদালতে আসেননি। এজন্য আদালত আগামী ১৫ মে সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
এ বিষয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইকবাল হোসেন বলেন, আগামী তারিখে সাক্ষ্য দিতে ১৭ সাক্ষীর বিরুদ্ধে সমন দেওয়া হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি মামলা নিষ্পত্তি করতে। এজন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বিচার শেষ হতে কেমন সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতদিন সময় লাগবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে দ্রুত সময়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার বিচার শেষ করা হবে। এতদিনেও বিচার কাজ শেষ না হওয়ার পেছনে বিগত সরকারের অবহেলা রয়েছে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল কালাম খান বলেন, “এ মামলায় চার্জগঠনের আদেশের বিরুদ্ধে কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে যান। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় প্রায় ৫ বছর মামলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এরপর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। বর্তমানে ৯৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আমরা গত বছর শেষের দিকে দায়িত্ব নিয়েছি। আশা করছি, সাক্ষী হাজির করে আগামী বছরে মধ্যে এ মামলা বিচার শেষ করতে পারব।
আসামি সোহেল রানার আইনজীবী মাসুদ খান খোকন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে সাক্ষী হাজির করতে পারে না। এ কারণে বিচার কাজ এগোচ্ছে না। আমরা চাই, এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ হোক। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক।
রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক মৃত্যু: মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ
রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর : ‘আমার স্বপ্নও ভেঙে গেছে’
রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর : ৫৪.৫ শতাংশ শ্রমিক কর্মহীন আজও
রানা প্লাজা : সেই বিভীষিকা আজও তাড়িয়ে বেড়ায় ইয়াসমিন, রুবি, জেসমিনদের
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও ইমারত বিধি লঙ্ঘনের মামলার বিচার এক যুগেও শেষ হয়নি। হত্যা মামলায় ৫৯৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হলেও, মামলার নিষ্পত্তির জন্য নির্দিষ্ট সময় বলা কঠিন। ইমারত বিধি না মেনে ভবন নির্মাণের মামলার কার্যক্রমও দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রয়েছে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইকবাল হোসেন জানালেন, "বিচার কার্যক্রম এতদিন স্থগিত থাকার পিছনে বিগত সরকারের অবহেলা রয়েছে।" রানা প্লাজা ধসের পরপর বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হলেও, হত্যা ও ইমারত বিধি লঙ্ঘন সম্পর্কিত দুটি মামলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ে, যেখানে কয়েকটি পোশাক কারখানার প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক আটকা পড়েন। উদ্ধার অভিযান শেষে ১,১৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় এবং ২,৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ২০১৫ সালে অভিযোগপত্র দাখিল হয়, তবে মামলার কার্যক্রম একাধিক স্থগিতাদেশের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়।
হত্যা মামলার প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে, তবে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে প্রায় পাঁচ বছর মামলা আটকে ছিল। ২০২২ সালে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলেও, এখনও মামলার নিষ্পত্তি হয়নি।
সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ছিল। তবে ওইদিন কোনো সাক্ষী আদালতে আসেননি। এজন্য আদালত আগামী ১৫ মে সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
এ বিষয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইকবাল হোসেন বলেন, আগামী তারিখে সাক্ষ্য দিতে ১৭ সাক্ষীর বিরুদ্ধে সমন দেওয়া হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি মামলা নিষ্পত্তি করতে। এজন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বিচার শেষ হতে কেমন সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতদিন সময় লাগবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে দ্রুত সময়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলার বিচার শেষ করা হবে। এতদিনেও বিচার কাজ শেষ না হওয়ার পেছনে বিগত সরকারের অবহেলা রয়েছে।
ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবুল কালাম খান বলেন, “এ মামলায় চার্জগঠনের আদেশের বিরুদ্ধে কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে যান। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় প্রায় ৫ বছর মামলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এরপর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। বর্তমানে ৯৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আমরা গত বছর শেষের দিকে দায়িত্ব নিয়েছি। আশা করছি, সাক্ষী হাজির করে আগামী বছরে মধ্যে এ মামলা বিচার শেষ করতে পারব।
আসামি সোহেল রানার আইনজীবী মাসুদ খান খোকন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে সাক্ষী হাজির করতে পারে না। এ কারণে বিচার কাজ এগোচ্ছে না। আমরা চাই, এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ হোক। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক।
রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক মৃত্যু: মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ
রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর : ‘আমার স্বপ্নও ভেঙে গেছে’
রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর : ৫৪.৫ শতাংশ শ্রমিক কর্মহীন আজও
রানা প্লাজা : সেই বিভীষিকা আজও তাড়িয়ে বেড়ায় ইয়াসমিন, রুবি, জেসমিনদের