সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ থেকে হংকং ভ্রমণে যান ব্যবসায়ী ওয়াহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হংকংয়ের সরাসরি দূরত্ব প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টার একটু বেশি। ওই রুটে সরাসরি একমাত্র ফ্লাইট পরিচালনা করে ক্যাথে প্যাসেফিক নামের একটি এয়ারলাইন্স সংস্থা। তারা ভাড়া নেয় ৭০০ ডলারের (৮৫ হাজার ২৬১ টাকা) বেশি।’
দেশি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফার চিন্তা, বিমানবন্দরের ফি ও শুল্ক-কর বেশি
টিকেটের দাম কমানো নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স সভা আজ
আমাদের এনফোর্সমেন্টের দরকার থাকলে সেই বিষয়ে যারা কাজ করতে পারবে সে সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ জানাবো : আব্দুন নাসের খান
তিনি বলেন, ‘এ রুটে ট্রান্জিট ফ্লাইটও আছে। যেমন; চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, থাই এয়ার ওয়েজ ও মালয়েশিয়ান এয়ার, বাতিক এয়ার ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে ফেয়ার কিছুটা কম পড়ে (মোটামুটি ৬৮- ৭০ হাজারের মধ্যে)।’
জানা গেছে, মালয়েশিয়া থেকে হংকংয়ের দুরত্ব প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। এই দুরত্ব অতিক্রম করতে একটি বিমানে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা । কিন্ত আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে মালয়েশিয়া থেকে হংকং যাতাযাতের টিকেটে দাম মাত্র বা ৬২৫ রিংগিত বা ১৮ হাজার ৩০০ টাকা। তবে রুটে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স ও ক্যাথে প্যাসেফিক ফেয়ার তুলনামূলক একটু বেশি। তা ২৪-২৫ হাজার টাকার মধ্যে। অথচ মালয়েশিয়া বা হংকংয়ের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের নাগরিকদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। অথচ ওই দেশগুলোর নাগরিকরা কয়েকগুণ কম ভাড়ায় যাতায়াত করেন।
দেশে ফেরার পর ওয়াহিদ উদ্দিনের প্রশ্ন কেন একই দূরত্ব একই বিমানে কেনো আড়াই গুণ থেকে ৫ গুণ ভাড়া গুণতে হয়। শুধু ওয়াহিদ উদ্দিন নয় বাংলাদেশ থেকে যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করে তাদের সবার প্রশ্নই কেন এতো ভাড়া গুণতে হয়।
তবে, উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর ‘অতি মুনাফার’ প্রবণতাকে দায়ী করছেন টিকেট বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। টিকেট ব্যবসায় যুক্ত এজেন্সিগুলো বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টিকেট বিক্রি নিয়ে একটি চক্র তৈরি হয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ নিজেই টিকেটের বেশি দাম রাখতে শুরু করে। কম দামের টিকেট আটকে রেখে বেশি দামেরটা তারা উন্মুক্ত করে দেয়। ফলে সবাই বেশি দামে কেনে। এরপর কম দামের টিকেটও বেশি দামে বিক্রি করে চক্রটি। এই প্রবণতা এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, ঢাকা থেকে বর্তমানে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ওমান, শারজাহ, কুয়ালালামপুর এই পাঁচটি রুটের টিকেট কাটলে যাত্রীপ্রতি বাংলাদেশ সরকার ৯ হাজার ৮৯০ ট্যাক্স আদায় করে। অথচ একই রুটে মালয়েশিয়ার সরকার ট্যাক্স নেয় ২ হাজার ৫৬৮ টাকা, সিঙ্গাপুর ৫ হাজার ৮৭৮, ওমান ৩ হাজার ৮৭৯, দুবাই ও শারজাহ নেয় ৪ হাজার ৩৩২ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে এক জন যাত্রী এই পাঁচটি রুটে যাত্রা করলে তাকে ৭ হাজার টাকা বেশি ট্যাক্স দিতে হচ্ছে।
তারা আরও বলছে, জেট ফুয়েলের দাম বেশি। দেশে জানুয়ারিতে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল কিনতে হয়েছে দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলারে। অথচ একই তেল ভারতের চেন্নাইয়ে দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার, দুবাই ৫৮, শারজাহ ৬৪, চীনের গুয়াংজু-তে ৫৪, কুয়ালালামপুর ৫৯ ও জেদ্দা দশমিক ৫৭ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়।
তবে, সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, প্রতিযোগিতা কম থাকায় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে সুযোগ নিচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে কয়েকমাস আগে, আকাশপথে যাত্রীদের ‘স্বার্থ রক্ষায়’ উড়োজাহাজের টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এতে বিমানের সিটের দাম কমে এসেছে। টিকেটের দাম কমানো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। সেখানে তারা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সহায়তায় অপরাধীদের সনাক্তের চেষ্ঠা করছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ)আব্দুন নাসের খান সংবাদকে বলেন, ‘পরিপত্র দেয়ার পর যে স্টেপগুলো নেয়া হয়েছিল তাতে বিমানের টিকেটের ফেয়ারটা কমে এসেছিলো। জননিরাপত্তা সচিবকে নিয়ে কমিটি করা হয়েছে সেই কমিটি একটি রিপোর্টও দিয়েছে। সেই রিপোর্ট এপ্রুভও হয়েছে, সেই অনুযায়ী যার যা দায়িত্ব আর সেখানে যে বিষয়গুলো ছিল সেগুলো আমরা জানিয়ে দিয়েছি, ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।’
আব্দুন নাসের খান আরো বলেন, ‘টাস্কফোর্স আমরা আগামীকাল (আজ) মঙ্গলবার বসবো। সেখানে আমরা টিকেটের ফেয়ার বাড়তির কোনো বিষয় আছে কিনা অথবা আমাদের যে যে বিষয় আছে সেসব নিয়ে আলোচনা হবে। আমাদের এনফোর্সমেন্টের দরকার থাকলে সেই বিষয়ে যারা কাজ করতে পারবে যে সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ জানাবো।’
পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে উড়োজাহাজের টিকেট বুকিংয়ের নতুন নিয়ম চালু হওয়ায় টিকেটের দাম এখনও তুলনামূলকভাবে কম। এতে যাত্রীরা স্বস্তিতে থাকলেও ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আটাব) বলছে, ‘সিন্ডিকেট’ এখনও পুরোপুরি ভাঙা যায়নি। এ কারণে টিকেট বিক্রিতে এয়ারলাইনসগুলোর ওপর নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। এতে দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে।
আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘সিন্ডিকেট পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আমরা বলবো, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। আরও মনিটরিং করলে এটা আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর মধ্যে কিছু এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইট কমিয়েছে। যখনই সরবরাহ কমে যায়, তখন চাহিদা বেড়ে যায়। তাই চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য এখানে বড় ভূমিকা রাখে।’
তবে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, বাংলাদেশে সরকারের শুল্ক-কর ও বিমানবন্দরের বিভিন্ন সেবার ফি বেশি থাকায় তাদের পরিচালন খরচ বেশি। তাই টিকেটের দাম বেশি পড়ছে। তাদের অনেকেই বলছে, বাংলাদেশে প্রচুর খরচ এইটা আছে। বাংলাদেশে অপারেশনাল কস্ট অনেক কিছুতেই অনেক বেশি।
গালফ এয়ারের জিএসএ সেলস ম্যানেজার মোহাম্মদ আসিফুল গনি সংবাদকে বলেন, ‘এজেন্সিগুলো যে লোয়ার ক্লাসের সিট কম দামে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করতেছে সেই ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে মনিটর করা উচিত। তাদের বলতে হবে তোমরা এয়ারলাইনস থেকে যে কম ফেয়ারে গ্রুপ নিচ্ছ সেটার সাব এজেন্সির সঙ্গে প্রফিট শেয়ারিং এয়ারলাইনস প্রদত্ত ৭ শতাংশ কমিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে যা প্যসেঞ্জারের জন্য এয়ারলাইনস প্রদত্ত ভাড়ার থেকে বেশি হতে পারবে না।’
বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো যারা টিকেট ব্লক করছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে
বিমান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুন নাসের খান বলেন, ‘এয়ারলাইন্স তো ওইভাবে ব্লক করে না। এয়ারলাইন্সগুলো ফেয়ার নির্ধারণ করে সে দিয়ে দেয় জিএসএ কে । এখানে পরবর্তীতে সমস্যা তৈরি করে জিএসএ ও জিএসএগুলোর নির্ধারিত কিছু ট্রাভেল এসেন্সি আছে তারা। ট্রাভেল এসেন্সিগুলো করে কী তারা সাব-এজেন্সিকে দিয়ে দেয় ওরা ভাড়া বিক্রি করে। ওই চক্রটাকে আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করছি। আর এয়ারলাইন্স আসলে সরাসরি ওইভাবে টিকেট ব্লক করে না।’
সোমবার, ১২ মে ২০২৫
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ থেকে হংকং ভ্রমণে যান ব্যবসায়ী ওয়াহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হংকংয়ের সরাসরি দূরত্ব প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এই দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টার একটু বেশি। ওই রুটে সরাসরি একমাত্র ফ্লাইট পরিচালনা করে ক্যাথে প্যাসেফিক নামের একটি এয়ারলাইন্স সংস্থা। তারা ভাড়া নেয় ৭০০ ডলারের (৮৫ হাজার ২৬১ টাকা) বেশি।’
দেশি ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফার চিন্তা, বিমানবন্দরের ফি ও শুল্ক-কর বেশি
টিকেটের দাম কমানো নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স সভা আজ
আমাদের এনফোর্সমেন্টের দরকার থাকলে সেই বিষয়ে যারা কাজ করতে পারবে সে সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ জানাবো : আব্দুন নাসের খান
তিনি বলেন, ‘এ রুটে ট্রান্জিট ফ্লাইটও আছে। যেমন; চায়না ইস্টার্ন, চায়না সাউদার্ন, থাই এয়ার ওয়েজ ও মালয়েশিয়ান এয়ার, বাতিক এয়ার ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে ফেয়ার কিছুটা কম পড়ে (মোটামুটি ৬৮- ৭০ হাজারের মধ্যে)।’
জানা গেছে, মালয়েশিয়া থেকে হংকংয়ের দুরত্ব প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। এই দুরত্ব অতিক্রম করতে একটি বিমানে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা । কিন্ত আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে মালয়েশিয়া থেকে হংকং যাতাযাতের টিকেটে দাম মাত্র বা ৬২৫ রিংগিত বা ১৮ হাজার ৩০০ টাকা। তবে রুটে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স ও ক্যাথে প্যাসেফিক ফেয়ার তুলনামূলক একটু বেশি। তা ২৪-২৫ হাজার টাকার মধ্যে। অথচ মালয়েশিয়া বা হংকংয়ের নাগরিকদের মাথাপিছু আয় বাংলাদেশের নাগরিকদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। অথচ ওই দেশগুলোর নাগরিকরা কয়েকগুণ কম ভাড়ায় যাতায়াত করেন।
দেশে ফেরার পর ওয়াহিদ উদ্দিনের প্রশ্ন কেন একই দূরত্ব একই বিমানে কেনো আড়াই গুণ থেকে ৫ গুণ ভাড়া গুণতে হয়। শুধু ওয়াহিদ উদ্দিন নয় বাংলাদেশ থেকে যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করে তাদের সবার প্রশ্নই কেন এতো ভাড়া গুণতে হয়।
তবে, উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর ‘অতি মুনাফার’ প্রবণতাকে দায়ী করছেন টিকেট বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। টিকেট ব্যবসায় যুক্ত এজেন্সিগুলো বলছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টিকেট বিক্রি নিয়ে একটি চক্র তৈরি হয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান বাংলাদেশ নিজেই টিকেটের বেশি দাম রাখতে শুরু করে। কম দামের টিকেট আটকে রেখে বেশি দামেরটা তারা উন্মুক্ত করে দেয়। ফলে সবাই বেশি দামে কেনে। এরপর কম দামের টিকেটও বেশি দামে বিক্রি করে চক্রটি। এই প্রবণতা এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, ঢাকা থেকে বর্তমানে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ওমান, শারজাহ, কুয়ালালামপুর এই পাঁচটি রুটের টিকেট কাটলে যাত্রীপ্রতি বাংলাদেশ সরকার ৯ হাজার ৮৯০ ট্যাক্স আদায় করে। অথচ একই রুটে মালয়েশিয়ার সরকার ট্যাক্স নেয় ২ হাজার ৫৬৮ টাকা, সিঙ্গাপুর ৫ হাজার ৮৭৮, ওমান ৩ হাজার ৮৭৯, দুবাই ও শারজাহ নেয় ৪ হাজার ৩৩২ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে এক জন যাত্রী এই পাঁচটি রুটে যাত্রা করলে তাকে ৭ হাজার টাকা বেশি ট্যাক্স দিতে হচ্ছে।
তারা আরও বলছে, জেট ফুয়েলের দাম বেশি। দেশে জানুয়ারিতে প্রতি লিটার জেট ফুয়েল কিনতে হয়েছে দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলারে। অথচ একই তেল ভারতের চেন্নাইয়ে দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার, দুবাই ৫৮, শারজাহ ৬৪, চীনের গুয়াংজু-তে ৫৪, কুয়ালালামপুর ৫৯ ও জেদ্দা দশমিক ৫৭ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়।
তবে, সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, প্রতিযোগিতা কম থাকায় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে সুযোগ নিচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে কয়েকমাস আগে, আকাশপথে যাত্রীদের ‘স্বার্থ রক্ষায়’ উড়োজাহাজের টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এতে বিমানের সিটের দাম কমে এসেছে। টিকেটের দাম কমানো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। সেখানে তারা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সহায়তায় অপরাধীদের সনাক্তের চেষ্ঠা করছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ)আব্দুন নাসের খান সংবাদকে বলেন, ‘পরিপত্র দেয়ার পর যে স্টেপগুলো নেয়া হয়েছিল তাতে বিমানের টিকেটের ফেয়ারটা কমে এসেছিলো। জননিরাপত্তা সচিবকে নিয়ে কমিটি করা হয়েছে সেই কমিটি একটি রিপোর্টও দিয়েছে। সেই রিপোর্ট এপ্রুভও হয়েছে, সেই অনুযায়ী যার যা দায়িত্ব আর সেখানে যে বিষয়গুলো ছিল সেগুলো আমরা জানিয়ে দিয়েছি, ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।’
আব্দুন নাসের খান আরো বলেন, ‘টাস্কফোর্স আমরা আগামীকাল (আজ) মঙ্গলবার বসবো। সেখানে আমরা টিকেটের ফেয়ার বাড়তির কোনো বিষয় আছে কিনা অথবা আমাদের যে যে বিষয় আছে সেসব নিয়ে আলোচনা হবে। আমাদের এনফোর্সমেন্টের দরকার থাকলে সেই বিষয়ে যারা কাজ করতে পারবে যে সংস্থাগুলোকে আমরা অনুরোধ জানাবো।’
পাসপোর্টের তথ্য দিয়ে উড়োজাহাজের টিকেট বুকিংয়ের নতুন নিয়ম চালু হওয়ায় টিকেটের দাম এখনও তুলনামূলকভাবে কম। এতে যাত্রীরা স্বস্তিতে থাকলেও ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আটাব) বলছে, ‘সিন্ডিকেট’ এখনও পুরোপুরি ভাঙা যায়নি। এ কারণে টিকেট বিক্রিতে এয়ারলাইনসগুলোর ওপর নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। এতে দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে।
আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘সিন্ডিকেট পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। আমরা বলবো, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। আরও মনিটরিং করলে এটা আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর মধ্যে কিছু এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইট কমিয়েছে। যখনই সরবরাহ কমে যায়, তখন চাহিদা বেড়ে যায়। তাই চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য এখানে বড় ভূমিকা রাখে।’
তবে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো বলছে, বাংলাদেশে সরকারের শুল্ক-কর ও বিমানবন্দরের বিভিন্ন সেবার ফি বেশি থাকায় তাদের পরিচালন খরচ বেশি। তাই টিকেটের দাম বেশি পড়ছে। তাদের অনেকেই বলছে, বাংলাদেশে প্রচুর খরচ এইটা আছে। বাংলাদেশে অপারেশনাল কস্ট অনেক কিছুতেই অনেক বেশি।
গালফ এয়ারের জিএসএ সেলস ম্যানেজার মোহাম্মদ আসিফুল গনি সংবাদকে বলেন, ‘এজেন্সিগুলো যে লোয়ার ক্লাসের সিট কম দামে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করতেছে সেই ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে মনিটর করা উচিত। তাদের বলতে হবে তোমরা এয়ারলাইনস থেকে যে কম ফেয়ারে গ্রুপ নিচ্ছ সেটার সাব এজেন্সির সঙ্গে প্রফিট শেয়ারিং এয়ারলাইনস প্রদত্ত ৭ শতাংশ কমিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে যা প্যসেঞ্জারের জন্য এয়ারলাইনস প্রদত্ত ভাড়ার থেকে বেশি হতে পারবে না।’
বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো যারা টিকেট ব্লক করছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে
বিমান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুন নাসের খান বলেন, ‘এয়ারলাইন্স তো ওইভাবে ব্লক করে না। এয়ারলাইন্সগুলো ফেয়ার নির্ধারণ করে সে দিয়ে দেয় জিএসএ কে । এখানে পরবর্তীতে সমস্যা তৈরি করে জিএসএ ও জিএসএগুলোর নির্ধারিত কিছু ট্রাভেল এসেন্সি আছে তারা। ট্রাভেল এসেন্সিগুলো করে কী তারা সাব-এজেন্সিকে দিয়ে দেয় ওরা ভাড়া বিক্রি করে। ওই চক্রটাকে আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করছি। আর এয়ারলাইন্স আসলে সরাসরি ওইভাবে টিকেট ব্লক করে না।’