ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারের একদিন পরই জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
ফারিয়ার আইনজীবী মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান, জামিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের পর মঙ্গলবারই তার কারামুক্তি হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।
এর আগে রোববার সকালে থাইল্যান্ড সফরে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মার্চ মাসে এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি ঢাকার একটি আদালতে ২৮৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াসহ আরও কয়েকজন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে এনামুল আহত হন। ওই ঘটনার সঙ্গে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা দাবি করেন তিনি।
তবে শুনানিতে ফারিয়ার আইনজীবীরা দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি দেশে ছিলেন না। কানাডায় শুটিংয়ে ছিলেন এবং ১৪ আগস্ট দেশে ফেরেন। তার বিদেশ সফরের প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী ফারহান মোহাম্মদ আরাভ বলেন, “নুসরাত ফারিয়া একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং তিনি আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্টও রয়েছে। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।”
আরেক আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন বলেন, “ঘটনার সময় তিনি দেশে ছিলেন না। একজন অভিনয়শিল্পীর ওপর এই ধরনের মামলা দুঃখজনক ও আইনবিরোধী।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, “নুসরাত ফারিয়া এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি দেশত্যাগের চেষ্টা করেছিলেন বলেই তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারগুলো দেশি তারকাদের নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করে। কেউ কেউ সে ফাঁদে পা দেয়।”
শুনানি শেষে আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন, ঘটনার সময় ফারিয়া দেশে ছিলেন কিনা এবং তিনি আন্দোলনের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে কিছু লিখেছেন কিনা—সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে। ২২ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
তবে পরে বিশেষ আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক মঙ্গলবারই জামিন মঞ্জুর করেন।
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার ভূমিকায় অভিনয়ের কারণে তাকে টার্গেট করা হয়েছে বলেও মত দিয়েছেন অনেকে।
এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য একইভাবে নুসরাত ইমরোজ তিশাও সমালোচনার শিকার হন। তিশার স্বামী ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর এবং এটি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।”
তিনি মনে করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ঘিরে তৈরি উত্তেজনার কারণেই এই ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া’ হতে পারে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “নুসরাত ফরিয়াদের গ্রেপ্তার করে গণহত্যার বিচারকে হালকা করা হচ্ছে।”
রেডিও জকি ও উপস্থাপক হিসেবে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করা নুসরাত ফারিয়া ২০১৫ সালে ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক করেন। এরপর ‘হিরো ৪২০’, ‘বাদশা: দ্য ডন’, ‘বস-টু’সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সংগীতশিল্পী হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। ২০১৮ সালে ‘পটাকা’ গান দিয়ে গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। পরে ‘হাবিবি’ ও ‘আমি চাই থাকতে’সহ আরও কিছু গান জনপ্রিয়তা পায়।
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তারের একদিন পরই জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
ফারিয়ার আইনজীবী মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান, জামিনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের পর মঙ্গলবারই তার কারামুক্তি হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।
এর আগে রোববার সকালে থাইল্যান্ড সফরে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মার্চ মাসে এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি ঢাকার একটি আদালতে ২৮৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াসহ আরও কয়েকজন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে এনামুল আহত হন। ওই ঘটনার সঙ্গে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ততা দাবি করেন তিনি।
তবে শুনানিতে ফারিয়ার আইনজীবীরা দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি দেশে ছিলেন না। কানাডায় শুটিংয়ে ছিলেন এবং ১৪ আগস্ট দেশে ফেরেন। তার বিদেশ সফরের প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবী ফারহান মোহাম্মদ আরাভ বলেন, “নুসরাত ফারিয়া একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। বরং তিনি আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, সামাজিক মাধ্যমে তার পোস্টও রয়েছে। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।”
আরেক আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন বলেন, “ঘটনার সময় তিনি দেশে ছিলেন না। একজন অভিনয়শিল্পীর ওপর এই ধরনের মামলা দুঃখজনক ও আইনবিরোধী।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, “নুসরাত ফারিয়া এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি দেশত্যাগের চেষ্টা করেছিলেন বলেই তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারগুলো দেশি তারকাদের নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করে। কেউ কেউ সে ফাঁদে পা দেয়।”
শুনানি শেষে আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন, ঘটনার সময় ফারিয়া দেশে ছিলেন কিনা এবং তিনি আন্দোলনের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে কিছু লিখেছেন কিনা—সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে। ২২ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
তবে পরে বিশেষ আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক মঙ্গলবারই জামিন মঞ্জুর করেন।
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার ভূমিকায় অভিনয়ের কারণে তাকে টার্গেট করা হয়েছে বলেও মত দিয়েছেন অনেকে।
এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য একইভাবে নুসরাত ইমরোজ তিশাও সমালোচনার শিকার হন। তিশার স্বামী ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর এবং এটি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।”
তিনি মনে করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ ঘিরে তৈরি উত্তেজনার কারণেই এই ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া’ হতে পারে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “নুসরাত ফরিয়াদের গ্রেপ্তার করে গণহত্যার বিচারকে হালকা করা হচ্ছে।”
রেডিও জকি ও উপস্থাপক হিসেবে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করা নুসরাত ফারিয়া ২০১৫ সালে ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক করেন। এরপর ‘হিরো ৪২০’, ‘বাদশা: দ্য ডন’, ‘বস-টু’সহ একাধিক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সংগীতশিল্পী হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। ২০১৮ সালে ‘পটাকা’ গান দিয়ে গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। পরে ‘হাবিবি’ ও ‘আমি চাই থাকতে’সহ আরও কিছু গান জনপ্রিয়তা পায়।