ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার মৎস্য ভবনের সামনে তার সমর্থকদের মিছিল -সোহরাব আলম
অন্তর্বর্তী সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। এই সময়ের মধ্যে সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানান তিনি। সরকারের কার্যক্রম ও পদক্ষেপ দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনরত তার সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন ইশরাক।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক দল, যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। হাইকোর্টের আদেশের পর দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আপাতত আমরা আন্দোলন স্থগিত রাখব।’ তবে বর্তমান সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকার ঘোষণা দেন ইশরাক। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করব। এর মধ্যে দুই ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ না করলে আমরা আবারও মাঠে নামব।’
বৃহস্পতিবার,(২২ মে ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ের আন্দোলনস্থলে এসে ইশরাক আন্দোলন স্থগিতের এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে। তাই আপাতত আন্দোলন স্থগিত করা হলো।’ ইশরাক বলেন, ‘শুরুতে আমাদের পরিকল্পনা ছিলো না আন্দোলনে যাওয়ার। কিন্তু সরকার আমাদের বাধ্য করেছে। বর্তমান সরকারে যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা রয়েছেন, যারা নতুন দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। যেহেতু বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপাতত আন্দোলন সাময়িক বন্ধ থাকবে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করবো। সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে নির্দেশনা দেয়া হবে। তবে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের আন্দোলন চলবে।’
আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট জনভোগান্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের এসব কর্মসূচির কারণে রাস্তাঘাটে রাজধানীবাসীর অনেক ভোগান্তি হয়েছে, নগর ভবনের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন নাগরিকরা। তাই আমি ঢাকাবাসীর কাছে আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তবে জনগণ একদিন বুঝবে, আমরা কেন এ আন্দোলন করেছিলাম। আমাদের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি।’
অবিভক্ত ঢাকার প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আজ আমাদের যে বিজয়, তার শতভাগ কৃতিত্ব বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের এবং ঢাকাবাসীর। ঢাকাবাসী তাদের অধিকার আদায় করেছে। আজকে শুধু আমি মেয়র হইনি, আপনারা সবাই মেয়র হয়েছেন। এ বিজয় আপনাদের সবার।’ তিনি আরও বলেন, ‘আটদিন নিরলস পরিশ্রম করে ঝড়-বৃষ্টিতে আন্দোলন করে আমাকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসায় দেশনায়ক (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমান আপনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আমি ইশরাক আপনাদের কাছে আজীবন ঋণী থাকবো।’
গতকাল বুধবার সকাল থেকে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কাকরাইলে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। তারা সারারাত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ‘যমুনারে যমুনা আমরা কিন্তু যাব না’, ‘এই মাত্র খবর এলো ইশরাক ভাই মেয়র হলো’, ‘এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার’, ‘দফা এক দাবি এক নির্বাচিত সরকার’, ‘যামুনারে যমুনা, শপথ ছাড়া যাব না’ এই ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।
মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর জন্য দায়ের হওয়া রিট হাইকোর্টে খারিজ হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ইশরাক বলেন, ‘আপনারা জানেন হাইকোর্টে রিট দিয়ে আমাকে মেয়র পদে শপথ গ্রহণে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। সবশেষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আশা করবো, কালক্ষেপণ না করে দ্রুত শপথের আয়োজন করবেন। যদি আবারও টালবাহানা করেন বা কালক্ষেপণ করেন, তাহলে আগামীকালই আবার আন্দোলনে যাবো।’
২০২০ সালের এক ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
সবশেষ চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এখনও তা কার্যকর হয়নি।
ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার মৎস্য ভবনের সামনে তার সমর্থকদের মিছিল -সোহরাব আলম
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। এই সময়ের মধ্যে সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানান তিনি। সরকারের কার্যক্রম ও পদক্ষেপ দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনরত তার সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন ইশরাক।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক দল, যারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। হাইকোর্টের আদেশের পর দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আপাতত আমরা আন্দোলন স্থগিত রাখব।’ তবে বর্তমান সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকার ঘোষণা দেন ইশরাক। তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করব। এর মধ্যে দুই ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ না করলে আমরা আবারও মাঠে নামব।’
বৃহস্পতিবার,(২২ মে ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ের আন্দোলনস্থলে এসে ইশরাক আন্দোলন স্থগিতের এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আজ আদালতের রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসনের বিজয় হয়েছে। তাই আপাতত আন্দোলন স্থগিত করা হলো।’ ইশরাক বলেন, ‘শুরুতে আমাদের পরিকল্পনা ছিলো না আন্দোলনে যাওয়ার। কিন্তু সরকার আমাদের বাধ্য করেছে। বর্তমান সরকারে যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা রয়েছেন, যারা নতুন দলের প্রতিনিধিত্ব করেন, তাদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। যেহেতু বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক, নিয়মতান্ত্রিক ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাই আমাদের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপাতত আন্দোলন সাময়িক বন্ধ থাকবে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করবো। সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে নির্দেশনা দেয়া হবে। তবে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের আন্দোলন চলবে।’
আন্দোলনের কারণে সৃষ্ট জনভোগান্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের এসব কর্মসূচির কারণে রাস্তাঘাটে রাজধানীবাসীর অনেক ভোগান্তি হয়েছে, নগর ভবনের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন নাগরিকরা। তাই আমি ঢাকাবাসীর কাছে আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা করছি। তবে জনগণ একদিন বুঝবে, আমরা কেন এ আন্দোলন করেছিলাম। আমাদের যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি।’
অবিভক্ত ঢাকার প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আজ আমাদের যে বিজয়, তার শতভাগ কৃতিত্ব বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের এবং ঢাকাবাসীর। ঢাকাবাসী তাদের অধিকার আদায় করেছে। আজকে শুধু আমি মেয়র হইনি, আপনারা সবাই মেয়র হয়েছেন। এ বিজয় আপনাদের সবার।’ তিনি আরও বলেন, ‘আটদিন নিরলস পরিশ্রম করে ঝড়-বৃষ্টিতে আন্দোলন করে আমাকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসায় দেশনায়ক (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমান আপনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আমি ইশরাক আপনাদের কাছে আজীবন ঋণী থাকবো।’
গতকাল বুধবার সকাল থেকে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে কাকরাইলে অবস্থান নেন তার সমর্থকরা। তারা সারারাত সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ‘যমুনারে যমুনা আমরা কিন্তু যাব না’, ‘এই মাত্র খবর এলো ইশরাক ভাই মেয়র হলো’, ‘এই মুহূর্তে দরকার নির্বাচিত সরকার’, ‘দফা এক দাবি এক নির্বাচিত সরকার’, ‘যামুনারে যমুনা, শপথ ছাড়া যাব না’ এই ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা।
মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর জন্য দায়ের হওয়া রিট হাইকোর্টে খারিজ হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে ইশরাক বলেন, ‘আপনারা জানেন হাইকোর্টে রিট দিয়ে আমাকে মেয়র পদে শপথ গ্রহণে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। সবশেষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আশা করবো, কালক্ষেপণ না করে দ্রুত শপথের আয়োজন করবেন। যদি আবারও টালবাহানা করেন বা কালক্ষেপণ করেন, তাহলে আগামীকালই আবার আন্দোলনে যাবো।’
২০২০ সালের এক ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হন।
সবশেষ চলতি বছরের ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এখনও তা কার্যকর হয়নি।