প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা
নগর ভবনের ফটক ‘তালাবন্ধ রেখেই’ নিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, সেবা কার্যক্রম শুরু করলেও এক্ষেত্রে আন্দোলন থেকে সরে আসার কোনো ‘সুযোগ নেই’। নগর ভবনের ফটকে ‘তালা ঝুলবেই’। কারণ বিষয়টিকে আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন তারা।
সংকট সুরাহায় মেয়র হিসেবে শপথ পড়ার অনুমতি দিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ইশরাক; না হলে বিরতিহীনভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। তবে ঈদের আগে তার ঘোষণা ছিল সরকার শপথ না পড়ালে নিজেই শপথ নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসবেন ইশরাক।
ঈদের ১০ দিনের ছুটির পর রোববার(১৫ জুন ২০২৫) সরকারি অফিস খুললেও তালা খোলেনি নগর ভবনের। ফলে ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে তার সমর্থক ও ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নের আন্দোলন গড়িয়েছে দ্বিতীয় মাসে।
শপথের দাবিতে স্লোগান
রোববার সকাল থেকেই নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নের কর্মী ও ইশরাক সমর্থকরা। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ‘শপথ শপথ, শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ সহ নানা স্লোগান দেন তারা।
ইশরাক নগর ভবনে প্রবেশ করেন বেলা ১১টার দিকে। ঘটনাস্থলে সমর্থকদের নিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন থেকে পিছু হটার আর কোনো সুযোগ তাদের সামনে নেই। না হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না বলে দাবি করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আহ্বান জানাবো আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচলাবস্থা কেটে যাবে। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।’
শুধু জরুরি সেবা
জন্ম নিবন্ধন সনদসহ দৈনন্দিন জরুরি সব সেবা চালু থাকার ঘোষণা দিয়ে ইশরাক বলেন, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘প্রধান ফটকের তালা খোলা হবে না, এটা আন্দোলনের একটা প্রতীক। জনগণের দৈনন্দিন সেবা, আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে।’
নগর ভবনের গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম কীভাবে এক সঙ্গে চলবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘সেটার ঘোষণা আসবে।’ কবে থেকে সেবা কার্যক্রম শুরু করা হবে প্রশ্নে ইশরাক বলেন, ‘এটা আমরা ইমিডিয়েটলি শুরু করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। জোনভিত্তিক যে অফিসগুলো আছে সেভাবে সেবাটা আমরা চালু করবো।’
উপদেষ্টার সমালোচনা
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমালোচনা করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন এই বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করে বিষয়টি দেখেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোন অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।’
অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইশরাক বলেন, ‘আমরা গায়ের জোরে নয়, সাংবিধানিকভাবে ও জনগণের ভোটে আমি বৈধ মেয়র। বরং ভবিষ্যতে সরকারের বিরুদ্ধে আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠবে। তাই সরকারকে বলবো, দ্রুত এই বিষয়ের সমাধান করুন। এখন থেকে বিরতিহীনভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’
*আন্দোলনের শুরু*
গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ইশরাক সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও তাতে যোগ দেয়।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলনে নামলে নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা
রোববার, ১৫ জুন ২০২৫
নগর ভবনের ফটক ‘তালাবন্ধ রেখেই’ নিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, সেবা কার্যক্রম শুরু করলেও এক্ষেত্রে আন্দোলন থেকে সরে আসার কোনো ‘সুযোগ নেই’। নগর ভবনের ফটকে ‘তালা ঝুলবেই’। কারণ বিষয়টিকে আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন তারা।
সংকট সুরাহায় মেয়র হিসেবে শপথ পড়ার অনুমতি দিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ইশরাক; না হলে বিরতিহীনভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। তবে ঈদের আগে তার ঘোষণা ছিল সরকার শপথ না পড়ালে নিজেই শপথ নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসবেন ইশরাক।
ঈদের ১০ দিনের ছুটির পর রোববার(১৫ জুন ২০২৫) সরকারি অফিস খুললেও তালা খোলেনি নগর ভবনের। ফলে ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়রের শপথ পড়ানোর দাবিতে তার সমর্থক ও ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নের আন্দোলন গড়িয়েছে দ্বিতীয় মাসে।
শপথের দাবিতে স্লোগান
রোববার সকাল থেকেই নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নের কর্মী ও ইশরাক সমর্থকরা। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ‘শপথ শপথ, শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘মেয়র নিয়ে তালবাহানা, সহ্য করা হবে না’, ‘চলছে লড়াই চলবে, ইশরাক ভাই লড়বে’, ‘নগর পিতা ইশরাক ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ সহ নানা স্লোগান দেন তারা।
ইশরাক নগর ভবনে প্রবেশ করেন বেলা ১১টার দিকে। ঘটনাস্থলে সমর্থকদের নিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন থেকে পিছু হটার আর কোনো সুযোগ তাদের সামনে নেই। না হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না বলে দাবি করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আহ্বান জানাবো আপনারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করেন। তাহলে অচলাবস্থা কেটে যাবে। নইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এই সংকটে চলবেই। এই সমস্যা সুরাহা না করা পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম চলবে, জনগণের জন্য ভোগান্তি না হয়। এগুলো আমাদের তত্ত্বাবধানে চলমান থাকবে।’
শুধু জরুরি সেবা
জন্ম নিবন্ধন সনদসহ দৈনন্দিন জরুরি সব সেবা চালু থাকার ঘোষণা দিয়ে ইশরাক বলেন, অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনা করা কর্মকর্তারা অফিস করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘প্রধান ফটকের তালা খোলা হবে না, এটা আন্দোলনের একটা প্রতীক। জনগণের দৈনন্দিন সেবা, আমাদের তত্ত্বাবধানে চালু থাকবে।’
নগর ভবনের গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম কীভাবে এক সঙ্গে চলবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘সেটার ঘোষণা আসবে।’ কবে থেকে সেবা কার্যক্রম শুরু করা হবে প্রশ্নে ইশরাক বলেন, ‘এটা আমরা ইমিডিয়েটলি শুরু করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। জোনভিত্তিক যে অফিসগুলো আছে সেভাবে সেবাটা আমরা চালু করবো।’
উপদেষ্টার সমালোচনা
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমালোচনা করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আন্দোলন চলমান থাকবে। এই লড়াই থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানাবো, তিনি যেন এই বিষয়টি সরাসরি নিজে তত্ত্বাবধান করে বিষয়টি দেখেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের আন্দোলন যেভাবে চলছে কোন অবস্থাতেই আমরা এখান থেকে ফিরে যেতে পারি না। আদালতের রায় জনগণের রায়কে আপনারা মেনে নিন।’
অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইশরাক বলেন, ‘আমরা গায়ের জোরে নয়, সাংবিধানিকভাবে ও জনগণের ভোটে আমি বৈধ মেয়র। বরং ভবিষ্যতে সরকারের বিরুদ্ধে আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠবে। তাই সরকারকে বলবো, দ্রুত এই বিষয়ের সমাধান করুন। এখন থেকে বিরতিহীনভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’
*আন্দোলনের শুরু*
গত ১৪ মে থেকে নগর ভবনের সামনে ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে ইশরাক সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে ডিএসসিসি কর্মচারী ইউনিয়নও তাতে যোগ দেয়।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে ইশরাক সমর্থকরা আন্দোলনে নামলে নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে।