alt

জাতীয়

সাংবিধানিক কাউন্সিলের বিপক্ষে বিএনপি, পক্ষে জামায়াত-এনসিপি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুতে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বুধবার,(১৮ জুন ২০২৫) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার তৃতীয় দিনের আলোচ্যসূচিতে এনসিসির বিষয়টি ছিল।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না এই কাউন্সিলে না রাখা এবং তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগ এই কাউন্সিলের কমিটির আওতায় না রাখার পক্ষে কথা বলেছেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও নাহিদ ইসলাম

জবাবদিহি নেই, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি সমর্থন জানাতে পারে না : সালাহউদ্দিন আহমদ

সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এখন এটা করা হলে সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার মনে হবে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন : রুহিন হোসেন প্রিন্স

সাংবিধানিক কাউন্সিলের বিষয়ে তাড়াহুড়ার চেয়ে জরুরি হলো ঐকমত্য; তবে জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরিতে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রত্যাশা আলী রীয়াজের

বিএনপি বরাবরের মতো বুধবার ও জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিরোধিতা করেছে। বুধবার আলোচনায় বিএনপির সমমনা ১২-দলীয় জোটও এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করেছে। তবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ পার্টিসহ (এবি পার্টি) কয়েকটি দল এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তারা এনসিসির গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু ভিন্নমতের কথা বলেছে।

রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।

প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই গতকাল মঙ্গলবার আবার শুরু হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবারের আলোচনায় অংশ না নিলেও বুধবার আলোচনায় অংশ নেয় জামায়াত। ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আজকের আলোচনার বিরতিতে জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আলোচনা শেষেও অনেক দলের নেতা গণমাধ্যমে কথা বলেন।

* পক্ষে জামায়াত-এনসিপি *

বুধবার বৈঠকের বিরতিতে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের পক্ষে। এর মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।

তবে কিছু বিষয়ে ভিন্নমতের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে তার দল। তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগও এই কমিটির আওতায় না রাখার পক্ষে জামায়াত। তবে বিষয়টি আরও আলোচনার দাবি রাখে বলে মন্তব্য করেন দলটির নায়েবে আমির।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের পক্ষে দলের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘যারা এনসিসি গঠনের বিপক্ষে, তারা মূলত ফ্যাসিবাদী কাঠামোয় থেকে যেতে চান।’

বুধবার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আলোচনার বিরতিতে

নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তার দল এনসিসি গঠনের প্রস্তাবকে সমর্থন জানায়। তবে গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে নাগরিক পার্টির দ্বিমত রয়েছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। পাশাপাশি এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে রাখা উচিত নয়। এটা নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের অতীত বিবেচনায় দেশকে ভবিতব্য স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করতে এনসিসি জরুরি।’

বুধবার সংলাপ শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার দল এনসিসির কাঠামোর মধ্যে রাষ্ট্রপতির অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এনসিসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও প্রধান নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছেই প্রস্তাব দেবে। এর ফলে রাষ্ট্রপতি নিজেই এনসিসির অংশ হলে সেটা বেমানান হয়। রাষ্ট্রপতিকে এনসিসির বাইরে এই কারণেও রাখা দরকার, যেন এনসিসির কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে অন্তত রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়া যায়। তবে প্রধান বিচারপতি অথবা বিচার বিভাগ থেকে একজনকে এনসিসির সদস্য করার ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন মতামত দিয়েছে।’

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘যারা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে অনাগ্রহী, তারাই কেবল এনসিসি নিয়ে দ্বিমত করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন এনসিসির কার্যপরিধির মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করে। এটা নির্বাহী বিভাগের হাতে থাকতে পারে। তবে বিচার বিভাগ যেহেতু স্বাধীন, তাই প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টিও এনসিসির কার্যপরিধির মধ্যে থাকার বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন মত দিয়েছে।’

সংলাপ শেষে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এবি পার্টি এনসিসি গঠন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজ পদ্ধতিতে সম্মত।’

এছাড়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ আরও কয়েকটি দল এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে।

* বিপক্ষে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল *

বিএনপি শুরু থেকেই এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করে আসছে। দলটি মনে করে, এনসিসি গঠিত হলে নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব খর্ব হবে। বুধবার আলোচনা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জবাবদিহি নেই, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি সমর্থন জানাতে পারে না।’

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এনসিসিকে সাংবিধানিকভাবে অনেক অনেক ক্ষমতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের জবাবদিহি নেই। যদি অথরিটি থাকে, পাওয়ার ফাংশন থাকে, কিন্তু অ্যাকাউন্টেবিলিটি না থাকে, সেই রকম কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমরা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে সমর্থন জানাতে পারি না। এই ফাংশনগুলো আলাদা করে আরেকটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার মধ্য দিয়ে একটা ইমব্যালেন্স (ভারসাম্যহীনতা) সৃষ্ট করা হবে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেত্রী, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দল কর্তৃক ডেপুটি স্পিকারকে নিয়ে এসসিসি গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতির কাছে এই এনসিসির প্রস্তাব করবেন। আমরা এ ধারণার সঙ্গে একমত নই। একটি ভারসাম্যমূলক রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কী করতে পারি, সেটা আমাদের চিন্তা করা উচিত।’

আলোচনার বিরতিতে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য যেসব কাজ করা দরকার, সরকারকে সেসব বিষয় সম্পন্ন করার জন্য আমরা বলেছি। এনসিসি গঠনের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক মত দিলেও বিষয়টি নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।’

এই মুহূর্তে সিপিবি এনসিসি গঠনের প্রয়োজন মনে করছে না উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘এটা করা হলে সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার মনে হবে। তবে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় আগামীতে আমরা এটাকে ভাবনায় রাখব। এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন। সেটাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া দরকার।’

আলোচনার বিরতিতে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘আমরা এনসিসি গঠনের বিপক্ষে। এই মুহূর্তে এনসিসি গঠনের জন্য সময়ক্ষেপণ করা অপ্রয়োজনীয়।’

* বড় অগ্রগতির আশা আলী রিয়াজের *

সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ নিয়ে ‘বড় ধরনের অগ্রগতি হবে’ বলে বুধবার সংলাপের সূচনা বক্তব্যে আশা প্রকাশ করেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা আলোচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছি যে, প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল যেটি সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বাইরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জেলা সমন্বয়ন কাউন্সিল। এগুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব। আমরা আশা করছি যে, এসব আলোচনায় আমরা বড় রকমের অগ্রগতি অর্জন করতে পারব।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগের আলোচনায় এনসিসি বা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের ব্যাপারে এক ধরনের মতামত এসেছে এগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কিছু বিকল্প প্রস্তাব বা আলোচনার মধ্যে প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। সেগুলোও আপনাদেরকে (রাজনৈতিক দলগুলো) জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, এ বিষয়ে আমরা বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করতে পারবো। আমরা সবচেয়ে খুশি হবো যে, এই বিষয়গুলোতে আমরা যদি সিদ্ধান্তে আসতে পারি আজকে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেটা আমরাও বলেছি, তাড়াহুড়ার চেয়ে জরুরি দরকার যেটা, সেটা হচ্ছে সমস্ত বিষয়ে যেন আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যেটাকে আমরা বলি যে, সবার আলোচনার মধ্য দিয়ে যেন আমরা একটা জায়গায় আসতে পারি, সেই চেষ্টাটা আমাদের থাকবে।’

হাতে সময়ের স্বল্পতার কারণে জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরিতে তাগিদ দিয়ে দেন আলী রিয়াজ। তাতে সব দলে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

কেরাণীগঞ্জে ধর্ষণের দায়ে সৎবাবার মৃত্যুদণ্ড

যশোরে নগদের টাকা ছিনতাই: গাড়িচালকসহ ৭ জন গ্রেপ্তার

‘হতাশা’ রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র বিদ্রোহে ঠেলে দিতে পারে -ক্রাইসিস গ্রুপ

ছবি

চান্দিনার মাধাইয়া-নবাবপুর সড়ক যেন মরণফাঁদ

নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ডিএমপিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ আইজিপির

বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে অস্ট্রেলিয়া

তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় বাংলাদেশের কূটনীতিকের বাসভবন বিধ্বস্ত

ছবি

ডেঙ্গুর বিস্তার সারাদেশে, বরগুনায় মহামারী

সাধারণ স্কুলে কমছে শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় বাড়ছে ভর্তি

ছবি

সরকার নাগরিক সেবায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছেন : ইশরাক

‘নিরপেক্ষ থাকার প্রতিশ্রুতিতে’ প্রধান উপদেষ্টার ‘ফোন’, ‘আশ্বস্ত’ জামায়াত ফের সংলাপে

ছবি

গুরুত্ব হারানোর ভয়ে একটি দল নির্বাচনের সময় নিয়ে নারাজ : মির্জা ফখরুল

চাকরি আইন বাতিলের দাবিতে রোববার কঠোর কর্মসূচি ‘ঘোষণা’ সচিবালয় কর্মচারীদের

মিথ্যা তথ্য দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে জেল-জরিমানা: অধ্যাদেশ জারি

ছবি

ট্রাম্পের ডাক প্রত্যাখ্যান করে খামেনি বললেন, ইরানিরা আত্মসমর্পণ করে না

ছবি

তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় গুঁড়িয়ে গেল বাংলাদেশি কূটনীতিকের বাসভবন

ছবি

তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের সরাতে জটিল পরিস্থিতির মুখে সরকার

ছবি

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ’ এর গেজেট প্রকাশ

কুলাউড়ায় স্কুলছাত্রীকে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

ছবি

আমের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজার

সিংগাইরে দেড় হাজার টাকায়ও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক

ছবি

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর দাবি

তেহরানে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার

ডেঙ্গুতে আরও ২৪৪ জন হাসপাতালে ভর্তি

ছবি

মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই খুলনায় জলজট, বেকার ৮২৩ কোটির প্রকল্প

দুদকের ৬ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ

ছবি

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা সচিবালয় কর্মচারীদের

মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাকে, ১০ মাস পর হত্যা মামলা হলো হাসিনাসহ ৫৪ জনের নামে

উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ চান ইশরাক, আন্দোলন রাজপথে নেয়ার হুঁশিয়ারি

ঠিকাদারদের নামে ‘অগ্রিম’ ও ‘অতিরিক্ত’ বিল, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৬ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা

এখনই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তাভাবনা নেই: অর্থ উপদেষ্টা

অসমাপ্ত আলোচনা শেষ করতে চায় ঐকমত্য কমিশন, বৈঠকে যোগ দেয়নি জামায়াত

ভিসা, নির্বাচন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকিতে তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাস ও নাগরিকদের নিরাপত্তা উদ্যোগ

ঢাকায় পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার হচ্ছেন ইমরান হায়দার

ছবি

তেহরানে বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ

tab

জাতীয়

সাংবিধানিক কাউন্সিলের বিপক্ষে বিএনপি, পক্ষে জামায়াত-এনসিপি

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুতে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বুধবার,(১৮ জুন ২০২৫) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার তৃতীয় দিনের আলোচ্যসূচিতে এনসিসির বিষয়টি ছিল।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না এই কাউন্সিলে না রাখা এবং তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগ এই কাউন্সিলের কমিটির আওতায় না রাখার পক্ষে কথা বলেছেন সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও নাহিদ ইসলাম

জবাবদিহি নেই, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি সমর্থন জানাতে পারে না : সালাহউদ্দিন আহমদ

সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এখন এটা করা হলে সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার মনে হবে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন : রুহিন হোসেন প্রিন্স

সাংবিধানিক কাউন্সিলের বিষয়ে তাড়াহুড়ার চেয়ে জরুরি হলো ঐকমত্য; তবে জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরিতে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রত্যাশা আলী রীয়াজের

বিএনপি বরাবরের মতো বুধবার ও জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিরোধিতা করেছে। বুধবার আলোচনায় বিএনপির সমমনা ১২-দলীয় জোটও এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করেছে। তবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ পার্টিসহ (এবি পার্টি) কয়েকটি দল এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তারা এনসিসির গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে কিছু ভিন্নমতের কথা বলেছে।

রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।

প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই গতকাল মঙ্গলবার আবার শুরু হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবারের আলোচনায় অংশ না নিলেও বুধবার আলোচনায় অংশ নেয় জামায়াত। ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আজকের আলোচনার বিরতিতে জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আলোচনা শেষেও অনেক দলের নেতা গণমাধ্যমে কথা বলেন।

* পক্ষে জামায়াত-এনসিপি *

বুধবার বৈঠকের বিরতিতে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জামায়াত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের পক্ষে। এর মাধ্যমে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।

তবে কিছু বিষয়ে ভিন্নমতের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছে তার দল। তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগও এই কমিটির আওতায় না রাখার পক্ষে জামায়াত। তবে বিষয়টি আরও আলোচনার দাবি রাখে বলে মন্তব্য করেন দলটির নায়েবে আমির।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের পক্ষে দলের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘যারা এনসিসি গঠনের বিপক্ষে, তারা মূলত ফ্যাসিবাদী কাঠামোয় থেকে যেতে চান।’

বুধবার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আলোচনার বিরতিতে

নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তার দল এনসিসি গঠনের প্রস্তাবকে সমর্থন জানায়। তবে গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে নাগরিক পার্টির দ্বিমত রয়েছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখানে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। পাশাপাশি এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে রাখা উচিত নয়। এটা নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের অতীত বিবেচনায় দেশকে ভবিতব্য স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা করতে এনসিসি জরুরি।’

বুধবার সংলাপ শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার দল এনসিসির কাঠামোর মধ্যে রাষ্ট্রপতির অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘এনসিসি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও প্রধান নিয়োগে রাষ্ট্রপতির কাছেই প্রস্তাব দেবে। এর ফলে রাষ্ট্রপতি নিজেই এনসিসির অংশ হলে সেটা বেমানান হয়। রাষ্ট্রপতিকে এনসিসির বাইরে এই কারণেও রাখা দরকার, যেন এনসিসির কোনো বিষয়ে সমস্যা হলে অন্তত রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়া যায়। তবে প্রধান বিচারপতি অথবা বিচার বিভাগ থেকে একজনকে এনসিসির সদস্য করার ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন মতামত দিয়েছে।’

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘যারা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে অনাগ্রহী, তারাই কেবল এনসিসি নিয়ে দ্বিমত করতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন এনসিসির কার্যপরিধির মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান নিয়োগের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করে। এটা নির্বাহী বিভাগের হাতে থাকতে পারে। তবে বিচার বিভাগ যেহেতু স্বাধীন, তাই প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টিও এনসিসির কার্যপরিধির মধ্যে থাকার বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন মত দিয়েছে।’

সংলাপ শেষে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এবি পার্টি এনসিসি গঠন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেকট্রোরাল কলেজ পদ্ধতিতে সম্মত।’

এছাড়া বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ আরও কয়েকটি দল এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে।

* বিপক্ষে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল *

বিএনপি শুরু থেকেই এনসিসি গঠনের বিরোধিতা করে আসছে। দলটি মনে করে, এনসিসি গঠিত হলে নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব খর্ব হবে। বুধবার আলোচনা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জবাবদিহি নেই, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি সমর্থন জানাতে পারে না।’

সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এনসিসিকে সাংবিধানিকভাবে অনেক অনেক ক্ষমতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের জবাবদিহি নেই। যদি অথরিটি থাকে, পাওয়ার ফাংশন থাকে, কিন্তু অ্যাকাউন্টেবিলিটি না থাকে, সেই রকম কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমরা গণতান্ত্রিক দল হিসেবে সমর্থন জানাতে পারি না। এই ফাংশনগুলো আলাদা করে আরেকটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার মধ্য দিয়ে একটা ইমব্যালেন্স (ভারসাম্যহীনতা) সৃষ্ট করা হবে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে প্রধান করে নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংবিধানিক কাউন্সিলের প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেত্রী, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দল কর্তৃক ডেপুটি স্পিকারকে নিয়ে এসসিসি গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতির কাছে এই এনসিসির প্রস্তাব করবেন। আমরা এ ধারণার সঙ্গে একমত নই। একটি ভারসাম্যমূলক রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজব্যবস্থা, রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কী করতে পারি, সেটা আমাদের চিন্তা করা উচিত।’

আলোচনার বিরতিতে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য যেসব কাজ করা দরকার, সরকারকে সেসব বিষয় সম্পন্ন করার জন্য আমরা বলেছি। এনসিসি গঠনের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক মত দিলেও বিষয়টি নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।’

এই মুহূর্তে সিপিবি এনসিসি গঠনের প্রয়োজন মনে করছে না উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘এটা করা হলে সরকারের মধ্যে আরেকটি সরকার মনে হবে। তবে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় আগামীতে আমরা এটাকে ভাবনায় রাখব। এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন। সেটাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া দরকার।’

আলোচনার বিরতিতে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘আমরা এনসিসি গঠনের বিপক্ষে। এই মুহূর্তে এনসিসি গঠনের জন্য সময়ক্ষেপণ করা অপ্রয়োজনীয়।’

* বড় অগ্রগতির আশা আলী রিয়াজের *

সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ নিয়ে ‘বড় ধরনের অগ্রগতি হবে’ বলে বুধবার সংলাপের সূচনা বক্তব্যে আশা প্রকাশ করেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা আলোচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছি যে, প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল যেটি সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বাইরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও জেলা সমন্বয়ন কাউন্সিল। এগুলো নিয়ে আজকে আলোচনা করব। আমরা আশা করছি যে, এসব আলোচনায় আমরা বড় রকমের অগ্রগতি অর্জন করতে পারব।’

আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগের আলোচনায় এনসিসি বা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের ব্যাপারে এক ধরনের মতামত এসেছে এগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কিছু বিকল্প প্রস্তাব বা আলোচনার মধ্যে প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। সেগুলোও আপনাদেরকে (রাজনৈতিক দলগুলো) জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, এ বিষয়ে আমরা বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করতে পারবো। আমরা সবচেয়ে খুশি হবো যে, এই বিষয়গুলোতে আমরা যদি সিদ্ধান্তে আসতে পারি আজকে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেটা আমরাও বলেছি, তাড়াহুড়ার চেয়ে জরুরি দরকার যেটা, সেটা হচ্ছে সমস্ত বিষয়ে যেন আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যেটাকে আমরা বলি যে, সবার আলোচনার মধ্য দিয়ে যেন আমরা একটা জায়গায় আসতে পারি, সেই চেষ্টাটা আমাদের থাকবে।’

হাতে সময়ের স্বল্পতার কারণে জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরিতে তাগিদ দিয়ে দেন আলী রিয়াজ। তাতে সব দলে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

back to top