৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার,(১৯ জুন ২০২৫) উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পরিষদের ৯ জন সদস্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ তথ্য জানিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ১ জুলাই রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শুরু হবে। তবে মূল আয়োজন ১৪ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্য হচ্ছে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে পুরো বাংলাদেশ যে রকম এক হয়েছিল, সেই অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা। অনুভূতিটা আমাদের মাঝে আছে, সেটাকে জাস্ট রিইনফোর্স করা।’
গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে অনেক কর্মসূচি ঘোষণা পালন হবে জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আপাতত জানানো যাচ্ছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে ছুটি ঘোষণা করা হবে। এ বছর থেকে প্রতিবছরই এই ছুটি পালিত হবে।’
২০২৪ সালে জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। টানা ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
শুরুর দিকে এই আন্দোলনের শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক হলেও পরে তা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলন ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী নির্বিচারে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল আর লাঠি ব্যবহার করে।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও আন্দোলন ঠেকাতে সক্রিয় ছিল। প্রথমে ফেইসবুক ও ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়। তাতে হিতে বিপরীত হয়। আন্দোলন আরও তীব্র হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচারে বল প্রয়োগ ও প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহারের কারণে আন্দোলনের ২০ দিনের মধ্যেই প্রায় দেশব্যাপী ব্যাপক প্রাণহানি হয়। শত শত লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালিয়ে যান শেখ হাসিনা ও তার অনুগতরা।
সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের যে তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, তাতে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪। তবে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।
জুলাই সনদ ঘোষণা:
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জুলাই সনদ ছাত্র-জনতার একটি দাবি। আগামী ৫ আগস্টের আগেই যাতে জুলাই সনদ ঘোষণা করা যায়, সেজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আরও কয়েকজন উপদেষ্টা ওয়াহি উদ্দিন মাহমুদ স্যারের নেতৃত্বে কাজ করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে উনারা দ্রুতই এই প্রোকলেমেশন প্রকাশ করবেন।’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন:
প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির স্বায়ত্তশাসন নিয়েও বৈঠকে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার।
তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এসেছে, আগে যখন টেলিভিশনগুলোর লাইসেন্স দেয়া হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পলিটিক্যাল পার্টির ইডিওলজিকে সার্ভ করার জন্য দেয়া হয়েছে। এখন লাইসেন্সগুলো কীভাবে দেয়া হয়েছে, সামনে আরও যদি টিভি লাইসেন্স দেয়া হয় সেক্ষেত্রে কী কী নীতিমালা থাকবে সেগুলো উনারা পর্যালোচনা করবেন।’
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার,(১৯ জুন ২০২৫) উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পরিষদের ৯ জন সদস্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ তথ্য জানিয়ে বলেন, অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ১ জুলাই রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শুরু হবে। তবে মূল আয়োজন ১৪ জুলাই শুরু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্য হচ্ছে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে পুরো বাংলাদেশ যে রকম এক হয়েছিল, সেই অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা। অনুভূতিটা আমাদের মাঝে আছে, সেটাকে জাস্ট রিইনফোর্স করা।’
গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে অনেক কর্মসূচি ঘোষণা পালন হবে জানিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আপাতত জানানো যাচ্ছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে ছুটি ঘোষণা করা হবে। এ বছর থেকে প্রতিবছরই এই ছুটি পালিত হবে।’
২০২৪ সালে জুলাইয়ের প্রথম দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। টানা ৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
শুরুর দিকে এই আন্দোলনের শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক হলেও পরে তা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলন ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা
বাহিনী নির্বিচারে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল আর লাঠি ব্যবহার করে।
পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও আন্দোলন ঠেকাতে সক্রিয় ছিল। প্রথমে ফেইসবুক ও ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয়। তাতে হিতে বিপরীত হয়। আন্দোলন আরও তীব্র হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচারে বল প্রয়োগ ও প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহারের কারণে আন্দোলনের ২০ দিনের মধ্যেই প্রায় দেশব্যাপী ব্যাপক প্রাণহানি হয়। শত শত লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালিয়ে যান শেখ হাসিনা ও তার অনুগতরা।
সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের যে তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, তাতে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪। তবে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।
জুলাই সনদ ঘোষণা:
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জুলাই সনদ ছাত্র-জনতার একটি দাবি। আগামী ৫ আগস্টের আগেই যাতে জুলাই সনদ ঘোষণা করা যায়, সেজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আরও কয়েকজন উপদেষ্টা ওয়াহি উদ্দিন মাহমুদ স্যারের নেতৃত্বে কাজ করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে উনারা দ্রুতই এই প্রোকলেমেশন প্রকাশ করবেন।’
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন:
প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির স্বায়ত্তশাসন নিয়েও বৈঠকে একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার।
তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এসেছে, আগে যখন টেলিভিশনগুলোর লাইসেন্স দেয়া হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পলিটিক্যাল পার্টির ইডিওলজিকে সার্ভ করার জন্য দেয়া হয়েছে। এখন লাইসেন্সগুলো কীভাবে দেয়া হয়েছে, সামনে আরও যদি টিভি লাইসেন্স দেয়া হয় সেক্ষেত্রে কী কী নীতিমালা থাকবে সেগুলো উনারা পর্যালোচনা করবেন।’