ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আবারও ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি। সেখানকার আরাকান আর্মির সঙ্গে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ওইসব এলাকার রোহিঙ্গারা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকে নৌকায় নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন।
সীমান্তে কিছু লোক অনুপ্রবেশের ‘চেষ্টা করছে’ তবে বিজিবি কাউকে ‘ঢুকতে
দিচ্ছে না’
প্রত্যাবাসনে কক্সবাজারে রোববার থেকে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগ মুহূর্তে এই পরিস্থিতি
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি গ্রামে গোলাগুলি শুরু হয়। থেমে থেমে সেই গোলাগুলি শনিবার,(২৩ আগস্ট ২০২৫) ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলতে থাকে। ওপারের গুলির শব্দ এপারের (হোয়াইক্যং) লোকজন শুনতে পেয়েছেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে রোববার শুরু হওয়া কক্সবাজারে রোববার থেকে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগ মুহূর্তে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজারের উপকূলবর্তী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গারা জানান, রাখাইনে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে এ ধরনের খবর পাচ্ছেন তারা। স্বজনদের বয়ানে তারা বলছেন, রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের দক্ষিণে মেরুল্লা এলাকায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার নতুন করে সেনা মোতায়েন করেছে। আর এই খবরে সেখানকার স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এর আগে ১৯ আগস্ট রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যের ‘নারকেল বাগিচা’ এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আরাকান আর্মির দখলে থাকা দুটি সীমান্তচৌকির দখলে নিতে অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী এ হামলা চালায় বলে জানা গেছে। তার ১০ দিন আগেও একই এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল।
এদিকে, অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গা- এমন পরিপ্রেক্ষিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, “কিছু লোক সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। যেসব পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছে, সেখানে আমরা টহল বৃদ্ধি করেছি।”
টেকনাফের আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গারা জানান, ওপারে থাকা তাদের স্বজনদের কাছ থেকে খবর এসেছে, তারা জান্তা সেনা ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ আশঙ্কায় শত শত রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশের জালিয়া দ্বীপের বিপরীতে মিয়ানমারের লালদিয়া নামক দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছে।
তবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী-বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে শনিবার দুপুর পর্যন্ত তারা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মো. জুবায়ের বলেন, “মংডু এলাকায় সেনা ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের শঙ্কায় অনেক রোহিঙ্গা লালদিয়াতে জড়ো হয়েছে। তারা সুযোগ পেলে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে।”
টেকনাফের ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ কালাম বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মিয়ানমার নেভির একটি জাহাজে প্রায় ৩০০ জানতা সেনা মেরুল্লা এলাকায় অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার দিকে তারা স্থানীয়ভাবে ‘বিজিপি ক্যাম্প-৮’ নামে পরিচিত আরাকান আর্মির ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আরাকান আর্মির সদস্য নিহত হয় এবং বাকিরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
একই ক্যাম্পের আরেক শরণার্থী বলেন, “সংঘর্ষের পর স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে লালদিয়াতে আশ্রয় নেয় এবং বর্তমানে তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে।”
মাঝি মোহাম্মদ কালাম এসব খবর তার স্বজন ও ওপারের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে জানান।
টেকনাফে অবস্থানরত তিনজন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, জান্তা সেনারা মংডুর দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তবে কতজন রোহিঙ্গা লালদিয়াতে আশ্রয় নিয়েছে, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তাদের হিসেবে সংখ্যা ৪০০ থেকে ৭০০ এর মধ্যে হবে।
কিছুদিন আগে মংডু থেকে পালিয়ে আসা করিমুল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গাও জান্তা ও আরাকান আর্মির সংঘর্ষের খবরে শরণার্থীদের বাংলাদেশমুখী হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।
কিন্তু শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। তবে কমিশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির সদস্যদের তৎপরতা বেড়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন বলেছেন, এপারে নতুন করে অনুপ্রবেশের কোনো তথ্য তার কাছে নেই।
গোলার শব্দ পেয়েছেন একই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডর মেম্বার হাজি জালাল আহমদ। তিনি বলেন, “আমি অসুস্থ। ভোরে উঠেছিলাম, তখন বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ পেয়েছি।”
হোয়াইক্যংয়ে বেড়িবাঁধের কাছাকাছি চিংড়ি প্রজেক্টে বসবাসকারী কয়েকজন জানান, “শুক্রবার রাত থেকে মিয়ানমারের ওপার থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার ভোরেও সকালে কয়েকবার গোলার বিকট আওয়াজ পেয়ে পার্শ্ববর্তী বাজারের কাছাকাছি দৌড়ে আসি। এই সীমান্তের ওপারে ফের যুদ্ধের মতো গোলার শব্দ ভেসে আসছে।”
বিজিবি-২ টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘গেল রাতে সীমান্তের ওপার থেকে গোলার শব্দের বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু সেটি আমার ইউনিটের বাইরে।’
গোলাগুলির শব্দ আসা টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত ৬৪ বিজিবির আওয়াতাধীন।
৬৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জসিম উদ্দিন জানান, ওপারে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে বিজেপি সতর্ক আছে। তবে কাদের মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
বিজিবি ও পুলিশ জানায়, ১১ আগস্ট আরাকান আর্মির একজন সদস্য একটি একে-৪৭ রাইফেল ও ৫২ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন নিয়ে বাংলাদেশের উখিয়ায় পালিয়ে এসে বিজিবি সদস্যের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর নাম জীবন তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি বিজিবির হেফাজতে আছেন। জীবন তঞ্চঙ্গ্যা নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করেন। ১৭ আগস্ট দুপুরে বিজিবি সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত থেকে আরকান আর্মির সহযোগী আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসরুল হক বলেন, এ পর্যন্ত বিজিবি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। তাদের মধ্যে তিনজন মিয়ানমারের নাগরিক, দুজন বাংলাদেশি। সবাই বান্দরবান কারাগারে রয়েছেন।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
আবারও ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি। সেখানকার আরাকান আর্মির সঙ্গে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ওইসব এলাকার রোহিঙ্গারা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকে নৌকায় নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন।
সীমান্তে কিছু লোক অনুপ্রবেশের ‘চেষ্টা করছে’ তবে বিজিবি কাউকে ‘ঢুকতে
দিচ্ছে না’
প্রত্যাবাসনে কক্সবাজারে রোববার থেকে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগ মুহূর্তে এই পরিস্থিতি
সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি গ্রামে গোলাগুলি শুরু হয়। থেমে থেমে সেই গোলাগুলি শনিবার,(২৩ আগস্ট ২০২৫) ভোর পাঁচটা পর্যন্ত চলতে থাকে। ওপারের গুলির শব্দ এপারের (হোয়াইক্যং) লোকজন শুনতে পেয়েছেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে রোববার শুরু হওয়া কক্সবাজারে রোববার থেকে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আগ মুহূর্তে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজারের উপকূলবর্তী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গারা জানান, রাখাইনে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে এ ধরনের খবর পাচ্ছেন তারা। স্বজনদের বয়ানে তারা বলছেন, রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের দক্ষিণে মেরুল্লা এলাকায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার নতুন করে সেনা মোতায়েন করেছে। আর এই খবরে সেখানকার স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এর আগে ১৯ আগস্ট রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যের ‘নারকেল বাগিচা’ এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আরাকান আর্মির দখলে থাকা দুটি সীমান্তচৌকির দখলে নিতে অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী এ হামলা চালায় বলে জানা গেছে। তার ১০ দিন আগেও একই এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছিল।
এদিকে, অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গা- এমন পরিপ্রেক্ষিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, “কিছু লোক সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। যেসব পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছে, সেখানে আমরা টহল বৃদ্ধি করেছি।”
টেকনাফের আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গারা জানান, ওপারে থাকা তাদের স্বজনদের কাছ থেকে খবর এসেছে, তারা জান্তা সেনা ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ আশঙ্কায় শত শত রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশের জালিয়া দ্বীপের বিপরীতে মিয়ানমারের লালদিয়া নামক দ্বীপে আশ্রয় নিয়েছে।
তবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী-বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে শনিবার দুপুর পর্যন্ত তারা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারেনি।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মো. জুবায়ের বলেন, “মংডু এলাকায় সেনা ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের শঙ্কায় অনেক রোহিঙ্গা লালদিয়াতে জড়ো হয়েছে। তারা সুযোগ পেলে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে।”
টেকনাফের ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ কালাম বলেন, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মিয়ানমার নেভির একটি জাহাজে প্রায় ৩০০ জানতা সেনা মেরুল্লা এলাকায় অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার দিকে তারা স্থানীয়ভাবে ‘বিজিপি ক্যাম্প-৮’ নামে পরিচিত আরাকান আর্মির ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আরাকান আর্মির সদস্য নিহত হয় এবং বাকিরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
একই ক্যাম্পের আরেক শরণার্থী বলেন, “সংঘর্ষের পর স্থানীয় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৭০০ রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে লালদিয়াতে আশ্রয় নেয় এবং বর্তমানে তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে।”
মাঝি মোহাম্মদ কালাম এসব খবর তার স্বজন ও ওপারের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে জানান।
টেকনাফে অবস্থানরত তিনজন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা নিশ্চিত করেছেন যে, জান্তা সেনারা মংডুর দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তবে কতজন রোহিঙ্গা লালদিয়াতে আশ্রয় নিয়েছে, তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তাদের হিসেবে সংখ্যা ৪০০ থেকে ৭০০ এর মধ্যে হবে।
কিছুদিন আগে মংডু থেকে পালিয়ে আসা করিমুল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গাও জান্তা ও আরাকান আর্মির সংঘর্ষের খবরে শরণার্থীদের বাংলাদেশমুখী হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।
কিন্তু শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তার কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই। তবে কমিশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির সদস্যদের তৎপরতা বেড়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন বলেছেন, এপারে নতুন করে অনুপ্রবেশের কোনো তথ্য তার কাছে নেই।
গোলার শব্দ পেয়েছেন একই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডর মেম্বার হাজি জালাল আহমদ। তিনি বলেন, “আমি অসুস্থ। ভোরে উঠেছিলাম, তখন বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ পেয়েছি।”
হোয়াইক্যংয়ে বেড়িবাঁধের কাছাকাছি চিংড়ি প্রজেক্টে বসবাসকারী কয়েকজন জানান, “শুক্রবার রাত থেকে মিয়ানমারের ওপার থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার ভোরেও সকালে কয়েকবার গোলার বিকট আওয়াজ পেয়ে পার্শ্ববর্তী বাজারের কাছাকাছি দৌড়ে আসি। এই সীমান্তের ওপারে ফের যুদ্ধের মতো গোলার শব্দ ভেসে আসছে।”
বিজিবি-২ টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘গেল রাতে সীমান্তের ওপার থেকে গোলার শব্দের বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু সেটি আমার ইউনিটের বাইরে।’
গোলাগুলির শব্দ আসা টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্ত ৬৪ বিজিবির আওয়াতাধীন।
৬৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জসিম উদ্দিন জানান, ওপারে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে বিজেপি সতর্ক আছে। তবে কাদের মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
বিজিবি ও পুলিশ জানায়, ১১ আগস্ট আরাকান আর্মির একজন সদস্য একটি একে-৪৭ রাইফেল ও ৫২ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন নিয়ে বাংলাদেশের উখিয়ায় পালিয়ে এসে বিজিবি সদস্যের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর নাম জীবন তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি বিজিবির হেফাজতে আছেন। জীবন তঞ্চঙ্গ্যা নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করেন। ১৭ আগস্ট দুপুরে বিজিবি সদস্যরা তুমব্রু সীমান্ত থেকে আরকান আর্মির সহযোগী আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসরুল হক বলেন, এ পর্যন্ত বিজিবি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। তাদের মধ্যে তিনজন মিয়ানমারের নাগরিক, দুজন বাংলাদেশি। সবাই বান্দরবান কারাগারে রয়েছেন।