সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধান ও পরাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার রোববার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন। সেখানে দুজনকে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় চারহাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
২০২৪ এর পরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়ের বিভিন্ন তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে। তাতে পাকিস্তানের আগ্রহ বেশী। বাংলাদেশের অনেকেরও আগ্রহ আছে। কিন্তু ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশর স্বাধীনতার পর থেকে যে বিষয়গুলো দুই দেশের সম্পর্কে কাঁটা হয়ে আছে তাতে পাকিস্তানের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। রোববার,(২৪ আগস্ট ২০২৫) তা আবার সাফ জানিয়ে দিলেন দেশটির ঢাকা সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
তিন অমীমাংসিত ইস্যু
১৯৭১ এ গণহত্যার জন্য পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চায়নি
যৌথ সম্পদের হিস্যায় পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা
৪ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানী বলে দাবীদারদের ফিরিয়ে নেয়নি ইসলামাবাদ
সমাধান আসলে
দুইবার হয়েছেঃ
ইসহাক দার
আমি অবশ্যই একমত
নাঃ তৌহিদ হোসেন
দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়ে রোববার ইসহাক দার জানিয়েছেন, এর ‘সমাধান হয়ে গেছে’। এবং তার ভাষ্য একবার নয় এর ‘সমাধান দুইবার হয়েছে’। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশীদের ‘হৃদয় পরিষ্কার’ করার নসিহতও দিয়েছেন।
তিনটি অমীমাংসিত বিষয় গত ৫৪ বছর ধরেই পাকিস্তানের অনাগ্রহে ঝুলে আছে। ১৯৭১ এ গণহত্যার (পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে ৩০ লাখ মানুষ নিহত এবং ৩ লাখ নারী ধর্ষিত) জন্য পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চায়নি। সে সময়কার যৌথ সম্পদের হিস্যায় পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশে পাওনা ৪ বিলিয়ন ডলার। বর্তমান সময়ে যা বহুগুন বেশী হবার কথা। পাকিস্তান এখনও তা পরিশোধ করেনি। বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানী বলে দাবীদারদের ফিরিয়ে নেয়নি ইসলামাবাদ।
গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের সব সরকারই ওই বিষয়গুলো পাকিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন ফোরামে তুলেছে।
গত শনিবার দু’দিনের সরকারী সফরে বাংলাদেশ এসেছেন ইসহাক দার, যিনি পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীও। ঢাকায় রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর ওই মন্তব্য করেন ইসহাক দার।
একাত্তরে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে এক প্রশ্নে সাংবাদিকদের পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই ইস্যুটির সমাধান আসলে দুইবার হয়েছে। একবার ১৯৭৪ সালে, আবার ২০০০ এর শুরুর দিকে, যখন জেনারেল (পারভেজ) মোশাররফ এখানে এসেছিলেন। তিনি গোটা পাকিস্তান জাতির পক্ষ থেকে গোটা বাংলাদেশ জাতির উদ্দেশ্যে কথাটা বলেছিলেন।’
তবে ইসহাক দারের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি অবশ্যই একমত না। একমত হলেতো সমস্যাটা সমাধান হয়ে যেত, তাই না? আমি তো বললাম আপনাকে যে, আমরা আমাদের অবস্থানটা বলেছি, উনারা উনাদের অবস্থানটা বলেছেন।’
রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ইসহাক দারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুদেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের
আলোচনায় একাত্তরের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা, প্রায় চার বিলিয়ন ডলার পাওনা পরিশোধ এবং আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ফেরানোর অমীমাংসিত বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে বলে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত সে বৈঠকের পর ইসহাক দার সাংবাদিকদের যখন তার দেশের অবস্থান জানান সে সময় তৌহিদ হোসেন তার পাশেই ছিলেন।
তবে অমীমাংসিত তিন বিষয় সমাধানে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করার বিষয়ে ‘একমত’ হওয়ার কথা পরে সাংবাদিকদের জানান তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তিনটি বিষয়ে কিন্তু নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছি। দুই পক্ষই একটি বিষয় আমরা ঠিক করেছি যে, এই জিনিসগুলোকে আমাদেরকে সমাধান করতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যাতে খুব স্মুদলি এগোতে পারে এজন্য এদেরকে পিছনে ফেলতে হবে। এবং দুই পক্ষই এটুকু এগ্রি করেছি যে আমরা এ নিয়ে কথা বলব এবং চেষ্টা করব এই ইস্যুগুলি যেন আগামীতে বা কোনো এক পর্যায়ে, এক দিনে হয়ে যাবে না, এটা আমরা এটাও স্বীকার করেছি, ঝট করে আমরা একদিনে বসে এটা সমাধান করতে পারব না, ৫৪ বছরের ইস্যু।”
তবে ২০০২ সালে পাকিস্তানের তখনকার প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশাররফ বাংলাদেশ সফরে এসে একাত্তরের ভূমিকার জন্য সাধারণভাবে ‘দুঃখ প্রকাশ’করেছিলেন কেবল। গত এপ্রিলে ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানকে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকে যখন বাংলাদেশের ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের (১৯৭১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধ) দায়ে এদেশের অভিযুক্তদের বিচারের উদ্যোগ নেয়। কয়েকজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায়ের পর পাকিস্তান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায়। সেদেশের সংসদে এ নিয়ে নিন্দা প্রস্তাবও নেওয়া হয়। বাংলাদেশে যাদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে তাদের অধিকাংশই জামায়াতে ইসলামীর সে সময়কার শীর্ষ নেতা।
আর রোববার দুপুরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার জামায়াতে ইসলামীর ‘অসুস্থ্য’ আমির শফিকুর রহমানকে দেখতে তার বসুন্ধরায় বাসভবনে যান। সেখানে জামায়াতের সিনিয়র নেতারা তাকে শুভেচ্ছা জানান।
#কী বললেন ইসহাক দার#
ইসহাক সাংবাদিকদের বলেন, “অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়ে আপনার প্রশ্ন, দেখুন, প্রিয় ভাই, ১৯৭৪ সালে ইস্যুটি লিখিতভাবে সমাধান হয়েছে। এই ডকুমেন্টটি ঐতিহাসিক এবং দুই দেশের কাছেই আছে। আর তারপর, যখন জেনারেল মোশাররফ এখানে এসেছিলেন; খুব খোলামেলা এবং অকপটে তিনি এই ইস্যুটি তুলে ধরেছিলেন। এবং আমি মনে করি, পরিবারের মধ্যে, দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো কিছুর একবার সমাধান হলে, সেটা হয়ে গেছে।”
এ কথা বলার সময় ‘হাদিসের উদ্বৃতি’ দিয়ে ইসহাক দার বলেন, ‘ইসলাম বলেছে- হৃদয় পরিষ্কার করতে। আপনারা আপনাদের হৃদয় পরিষ্কার করুন। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
#কী বলছেন তৌহিদ হোসেন#
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি ইসহাক দারের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষন করেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা চাই যে, হিসাবপত্র হোক এবং আমাদের টাকা-পয়সার যে ব্যাপার, সেটা সমাধান হোক। আমরা চাই যে এই যে এখানে গণহত্যা হয়েছে, সেটার ব্যাপারে তারা দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাক এবং আমরা চাই যে, আটকেপড়া যে মানুষগুলি আছে, তাদেরকে তারা ফেরত নিক।’
আটকেপড়া মানুষদের ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয়েরর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি হাই কোর্টের রায় আছে। এটা নিয়ে কিন্তু এখানে যারা হিউম্যান রাইটস নিয়ে কাজ করেন, তারা কিন্তু এটা নিয়ে বলছেন। ইন্টারনালি বসে সমস্যাটা সমাধান করতে হবে। কিন্তু পাকিস্তানের সাথে বিষয়টা এখনো (অমীমাংসিত)।’
বৈঠকে ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কি-না, এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ধরনের স্পেসিফিকে আপনার না যাওয়া উচিত এখন। যেহেতু, আমি তো বলেছি যে, আমরা আমাদের অবস্থানটাকে তুলে ধরেছি। এটা আমার উপরে ছেড়ে দিন, এটুকু বিশ্বাস করেন যে, আমি বাংলাদেশের অবস্থান খুব শক্তভাবে ব্যক্ত করেছি।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় প্রত্যাশা করেন না যে ৫৪ বছরের সমস্যা, আজকের একদিনের মিটিংয়ে, যে মিটিংটা কত বছর, ১২-১৩ বছর পরে, ১৩ বছর পরে এবং তাও কিন্তু পূর্ববর্তী হিনা রব্বানী খারের মিটিং কিছু একটা দাওয়াত দেওয়ার জন্য, দ্বিপক্ষীয় সফর ছিল না। কাজেই এখানে বসে এক ঘণ্টায় আমরা এটা সমাধান করে ফেলতে পারব, এটা আপনারা নিশ্চয় আশা করবেন না।’
এক প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘আনরিজলভড ইস্যুতে দুই দেশে তাদের নিজেদের অবস্থানটাই পুনর্ব্যক্ত করেছে।’
পাকিস্তান নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে একমত কি-না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘না। আপনি এটা বলতে পারেন না। কারণ আমি কি বলেছি, ডোন্ট পুট ওয়ার্ডস ইন মাই মাউথ। সেটা হল যে, আমি বলেছি যে, নিজ নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছি।
‘শুধু একটি অগ্রগতি মনে করি আমি, ছোট্ট একটু, সেটা হল যে আমরা দুই পক্ষ একমত হয়েছি যে এই বিষয়গুলো আলোচনা করে সমাধান করা প্রয়োজন, যাতে করে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এগুলো বাধা হয়ে না আসে।’
#চীনের ‘ত্রিপক্ষীয়’ উদ্যোগ#
চীন ত্রিপক্ষীয় যে প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগ নিয়েছে, সে কারণে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ধারাবাহিক বৈঠকগুলো হচ্ছে কি-না, এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে না।’
ওই উদ্যোগে তিন দেশের মধ্যে না রেখে পরিসর বাড়ানোর প্রস্তাব বাংলাদেশ দিয়েছে জানান তৌহিদ হোসেন।
তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক গত সরকারের আমলে, ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। আমি আপনাদেরকে আগেও বলেছি, এখন আবার বলছি, আমরা একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই পাকিস্তানের সাথে, যেমন আমরা অন্যান্য বন্ধু দেশের সাথে চাই। ঠিক সেরকমই, এর চেয়ে বেশি কিছু না।’
# চুক্তি-সমঝোতা স্মারক সই #
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সোনারগাও হোটেলে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি, চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি কর্মসূচি (প্রোগ্রাম) সই হয়েছে।
চুক্তি হলো : দুই দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ ।
এমওইউ : দুই দেশের বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন। দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার (বাসস ও এপিপিসি) মধ্যে সহযোগিতা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সঙ্গে পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের (আইএসএসআই) সহযোগিতা।
এর আগে রোববার সকালে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠক করেন।
ইসহাক দার ঢাকা সফরের প্রথম দিনে শনিবার বিকেলে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন।
#জামায়াত আমিরের বাসায় ইসহাক দার#
রোববার দুপুরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার জামায়াতেরআমির শফিকুর রহমানের বাসভবনে জাবার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্সে (আগের টুইটার) এক বারতায় জানায়, ‘(পাকিস্তানের) উপ-প্রধানমন্ত্রী (ইসহাক দার) পাকিস্তান ও তার নিজের পক্ষ থেকে ডা. রহমানের দ্রুত সুস্থতার জন্য শুভ কামনা জানান। তিনি আমিরের রাজনৈতিক, শিক্ষা এবং সামাজিক কল্যাণে আজীবন ইতিবাচক অবদানের প্রশংসা করেন।’
জামায়াত জানিয়েছে শফিকুর রহমান বর্তমানে হৃদরোগের সার্জারির পর সুস্থতার পথে রয়েছেন।সাক্ষাতের পর জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের সাংবাদিকদের জানান, দুই নেতার মধ্যে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হয়েছে।
এ সময় ইসহাক দারের সঙ্গে ছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী তারিক বাজওয়া, পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল (সাউথ এশিয়া ও সার্ক) ইলিয়াস মেহমুদ নিজামী, ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, ডেপুটি হাইকমিশনার মুহাম্মাদ ওয়াসিফ, পলিটিক্যাল কাউন্সেলর কামরান দাঙ্গল প্রমুখ।
আব্দুল্লাহ মো. তাহের ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান চৌধুরী।
সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধান ও পরাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার রোববার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেন। সেখানে দুজনকে হাস্যোজ্জ্বল অবস্থায় চারহাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে ছবি: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়
রোববার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
২০২৪ এর পরিবর্তনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়ের বিভিন্ন তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে। তাতে পাকিস্তানের আগ্রহ বেশী। বাংলাদেশের অনেকেরও আগ্রহ আছে। কিন্তু ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশর স্বাধীনতার পর থেকে যে বিষয়গুলো দুই দেশের সম্পর্কে কাঁটা হয়ে আছে তাতে পাকিস্তানের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। রোববার,(২৪ আগস্ট ২০২৫) তা আবার সাফ জানিয়ে দিলেন দেশটির ঢাকা সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
তিন অমীমাংসিত ইস্যু
১৯৭১ এ গণহত্যার জন্য পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চায়নি
যৌথ সম্পদের হিস্যায় পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা
৪ বিলিয়ন ডলার
বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানী বলে দাবীদারদের ফিরিয়ে নেয়নি ইসলামাবাদ
সমাধান আসলে
দুইবার হয়েছেঃ
ইসহাক দার
আমি অবশ্যই একমত
নাঃ তৌহিদ হোসেন
দুই দেশের অমীমাংসিত বিষয়ে রোববার ইসহাক দার জানিয়েছেন, এর ‘সমাধান হয়ে গেছে’। এবং তার ভাষ্য একবার নয় এর ‘সমাধান দুইবার হয়েছে’। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশীদের ‘হৃদয় পরিষ্কার’ করার নসিহতও দিয়েছেন।
তিনটি অমীমাংসিত বিষয় গত ৫৪ বছর ধরেই পাকিস্তানের অনাগ্রহে ঝুলে আছে। ১৯৭১ এ গণহত্যার (পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে ৩০ লাখ মানুষ নিহত এবং ৩ লাখ নারী ধর্ষিত) জন্য পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চায়নি। সে সময়কার যৌথ সম্পদের হিস্যায় পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশে পাওনা ৪ বিলিয়ন ডলার। বর্তমান সময়ে যা বহুগুন বেশী হবার কথা। পাকিস্তান এখনও তা পরিশোধ করেনি। বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিস্তানী বলে দাবীদারদের ফিরিয়ে নেয়নি ইসলামাবাদ।
গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের সব সরকারই ওই বিষয়গুলো পাকিস্তানের সঙ্গে বিভিন্ন ফোরামে তুলেছে।
গত শনিবার দু’দিনের সরকারী সফরে বাংলাদেশ এসেছেন ইসহাক দার, যিনি পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীও। ঢাকায় রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর ওই মন্তব্য করেন ইসহাক দার।
একাত্তরে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারে এক প্রশ্নে সাংবাদিকদের পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই ইস্যুটির সমাধান আসলে দুইবার হয়েছে। একবার ১৯৭৪ সালে, আবার ২০০০ এর শুরুর দিকে, যখন জেনারেল (পারভেজ) মোশাররফ এখানে এসেছিলেন। তিনি গোটা পাকিস্তান জাতির পক্ষ থেকে গোটা বাংলাদেশ জাতির উদ্দেশ্যে কথাটা বলেছিলেন।’
তবে ইসহাক দারের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি অবশ্যই একমত না। একমত হলেতো সমস্যাটা সমাধান হয়ে যেত, তাই না? আমি তো বললাম আপনাকে যে, আমরা আমাদের অবস্থানটা বলেছি, উনারা উনাদের অবস্থানটা বলেছেন।’
রোববার পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ইসহাক দারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুদেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের
আলোচনায় একাত্তরের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনা, প্রায় চার বিলিয়ন ডলার পাওনা পরিশোধ এবং আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ফেরানোর অমীমাংসিত বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে বলে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত সে বৈঠকের পর ইসহাক দার সাংবাদিকদের যখন তার দেশের অবস্থান জানান সে সময় তৌহিদ হোসেন তার পাশেই ছিলেন।
তবে অমীমাংসিত তিন বিষয় সমাধানে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করার বিষয়ে ‘একমত’ হওয়ার কথা পরে সাংবাদিকদের জানান তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তিনটি বিষয়ে কিন্তু নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছি। দুই পক্ষই একটি বিষয় আমরা ঠিক করেছি যে, এই জিনিসগুলোকে আমাদেরকে সমাধান করতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যাতে খুব স্মুদলি এগোতে পারে এজন্য এদেরকে পিছনে ফেলতে হবে। এবং দুই পক্ষই এটুকু এগ্রি করেছি যে আমরা এ নিয়ে কথা বলব এবং চেষ্টা করব এই ইস্যুগুলি যেন আগামীতে বা কোনো এক পর্যায়ে, এক দিনে হয়ে যাবে না, এটা আমরা এটাও স্বীকার করেছি, ঝট করে আমরা একদিনে বসে এটা সমাধান করতে পারব না, ৫৪ বছরের ইস্যু।”
তবে ২০০২ সালে পাকিস্তানের তখনকার প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশাররফ বাংলাদেশ সফরে এসে একাত্তরের ভূমিকার জন্য সাধারণভাবে ‘দুঃখ প্রকাশ’করেছিলেন কেবল। গত এপ্রিলে ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সমাধান করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানকে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকে যখন বাংলাদেশের ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের (১৯৭১ এ মানবতাবিরোধী অপরাধ) দায়ে এদেশের অভিযুক্তদের বিচারের উদ্যোগ নেয়। কয়েকজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায়ের পর পাকিস্তান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায়। সেদেশের সংসদে এ নিয়ে নিন্দা প্রস্তাবও নেওয়া হয়। বাংলাদেশে যাদের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে তাদের অধিকাংশই জামায়াতে ইসলামীর সে সময়কার শীর্ষ নেতা।
আর রোববার দুপুরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার জামায়াতে ইসলামীর ‘অসুস্থ্য’ আমির শফিকুর রহমানকে দেখতে তার বসুন্ধরায় বাসভবনে যান। সেখানে জামায়াতের সিনিয়র নেতারা তাকে শুভেচ্ছা জানান।
#কী বললেন ইসহাক দার#
ইসহাক সাংবাদিকদের বলেন, “অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়ে আপনার প্রশ্ন, দেখুন, প্রিয় ভাই, ১৯৭৪ সালে ইস্যুটি লিখিতভাবে সমাধান হয়েছে। এই ডকুমেন্টটি ঐতিহাসিক এবং দুই দেশের কাছেই আছে। আর তারপর, যখন জেনারেল মোশাররফ এখানে এসেছিলেন; খুব খোলামেলা এবং অকপটে তিনি এই ইস্যুটি তুলে ধরেছিলেন। এবং আমি মনে করি, পরিবারের মধ্যে, দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনো কিছুর একবার সমাধান হলে, সেটা হয়ে গেছে।”
এ কথা বলার সময় ‘হাদিসের উদ্বৃতি’ দিয়ে ইসহাক দার বলেন, ‘ইসলাম বলেছে- হৃদয় পরিষ্কার করতে। আপনারা আপনাদের হৃদয় পরিষ্কার করুন। আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
#কী বলছেন তৌহিদ হোসেন#
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি ইসহাক দারের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষন করেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা চাই যে, হিসাবপত্র হোক এবং আমাদের টাকা-পয়সার যে ব্যাপার, সেটা সমাধান হোক। আমরা চাই যে এই যে এখানে গণহত্যা হয়েছে, সেটার ব্যাপারে তারা দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাক এবং আমরা চাই যে, আটকেপড়া যে মানুষগুলি আছে, তাদেরকে তারা ফেরত নিক।’
আটকেপড়া মানুষদের ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয়েরর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি হাই কোর্টের রায় আছে। এটা নিয়ে কিন্তু এখানে যারা হিউম্যান রাইটস নিয়ে কাজ করেন, তারা কিন্তু এটা নিয়ে বলছেন। ইন্টারনালি বসে সমস্যাটা সমাধান করতে হবে। কিন্তু পাকিস্তানের সাথে বিষয়টা এখনো (অমীমাংসিত)।’
বৈঠকে ‘গণহত্যা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কি-না, এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ধরনের স্পেসিফিকে আপনার না যাওয়া উচিত এখন। যেহেতু, আমি তো বলেছি যে, আমরা আমাদের অবস্থানটাকে তুলে ধরেছি। এটা আমার উপরে ছেড়ে দিন, এটুকু বিশ্বাস করেন যে, আমি বাংলাদেশের অবস্থান খুব শক্তভাবে ব্যক্ত করেছি।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয় প্রত্যাশা করেন না যে ৫৪ বছরের সমস্যা, আজকের একদিনের মিটিংয়ে, যে মিটিংটা কত বছর, ১২-১৩ বছর পরে, ১৩ বছর পরে এবং তাও কিন্তু পূর্ববর্তী হিনা রব্বানী খারের মিটিং কিছু একটা দাওয়াত দেওয়ার জন্য, দ্বিপক্ষীয় সফর ছিল না। কাজেই এখানে বসে এক ঘণ্টায় আমরা এটা সমাধান করে ফেলতে পারব, এটা আপনারা নিশ্চয় আশা করবেন না।’
এক প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘আনরিজলভড ইস্যুতে দুই দেশে তাদের নিজেদের অবস্থানটাই পুনর্ব্যক্ত করেছে।’
পাকিস্তান নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে একমত কি-না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘না। আপনি এটা বলতে পারেন না। কারণ আমি কি বলেছি, ডোন্ট পুট ওয়ার্ডস ইন মাই মাউথ। সেটা হল যে, আমি বলেছি যে, নিজ নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছি।
‘শুধু একটি অগ্রগতি মনে করি আমি, ছোট্ট একটু, সেটা হল যে আমরা দুই পক্ষ একমত হয়েছি যে এই বিষয়গুলো আলোচনা করে সমাধান করা প্রয়োজন, যাতে করে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এগুলো বাধা হয়ে না আসে।’
#চীনের ‘ত্রিপক্ষীয়’ উদ্যোগ#
চীন ত্রিপক্ষীয় যে প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগ নিয়েছে, সে কারণে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ধারাবাহিক বৈঠকগুলো হচ্ছে কি-না, এ বিষয়ে এক প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে না।’
ওই উদ্যোগে তিন দেশের মধ্যে না রেখে পরিসর বাড়ানোর প্রস্তাব বাংলাদেশ দিয়েছে জানান তৌহিদ হোসেন।
তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক গত সরকারের আমলে, ইচ্ছাকৃতভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। আমি আপনাদেরকে আগেও বলেছি, এখন আবার বলছি, আমরা একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই পাকিস্তানের সাথে, যেমন আমরা অন্যান্য বন্ধু দেশের সাথে চাই। ঠিক সেরকমই, এর চেয়ে বেশি কিছু না।’
# চুক্তি-সমঝোতা স্মারক সই #
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সোনারগাও হোটেলে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি, চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি কর্মসূচি (প্রোগ্রাম) সই হয়েছে।
চুক্তি হলো : দুই দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপ ।
এমওইউ : দুই দেশের বাণিজ্যবিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন। দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা। দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার (বাসস ও এপিপিসি) মধ্যে সহযোগিতা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সঙ্গে পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের (আইএসএসআই) সহযোগিতা।
এর আগে রোববার সকালে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠক করেন।
ইসহাক দার ঢাকা সফরের প্রথম দিনে শনিবার বিকেলে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন।
#জামায়াত আমিরের বাসায় ইসহাক দার#
রোববার দুপুরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার জামায়াতেরআমির শফিকুর রহমানের বাসভবনে জাবার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্সে (আগের টুইটার) এক বারতায় জানায়, ‘(পাকিস্তানের) উপ-প্রধানমন্ত্রী (ইসহাক দার) পাকিস্তান ও তার নিজের পক্ষ থেকে ডা. রহমানের দ্রুত সুস্থতার জন্য শুভ কামনা জানান। তিনি আমিরের রাজনৈতিক, শিক্ষা এবং সামাজিক কল্যাণে আজীবন ইতিবাচক অবদানের প্রশংসা করেন।’
জামায়াত জানিয়েছে শফিকুর রহমান বর্তমানে হৃদরোগের সার্জারির পর সুস্থতার পথে রয়েছেন।সাক্ষাতের পর জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের সাংবাদিকদের জানান, দুই নেতার মধ্যে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হয়েছে।
এ সময় ইসহাক দারের সঙ্গে ছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী তারিক বাজওয়া, পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল (সাউথ এশিয়া ও সার্ক) ইলিয়াস মেহমুদ নিজামী, ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, ডেপুটি হাইকমিশনার মুহাম্মাদ ওয়াসিফ, পলিটিক্যাল কাউন্সেলর কামরান দাঙ্গল প্রমুখ।
আব্দুল্লাহ মো. তাহের ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং জামায়াত আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান চৌধুরী।