alt

news » national

রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়: কার কত

ফয়েজ আহমেদ তুষার : শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিবন্ধিত ৫০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ২৯টি দল নির্ধারিত সময়ে ২০২৪ সালের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব (অডিট রিপোর্ট) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে। ইসিরসংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, এ বছর জামায়াতে ইসলামীর আয় ও ব্যয় অন্য সব দলের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বিএনপি; এরপর জাতীয় পার্টির অবস্থান।

দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৪ সালে বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ আয় করেছে জামায়াত। একই বছর দলটি ব্যয়ের দিক থেকেও বিএনপির অনেক ওপরে। ইসিতে জমা দেয়া হিসাবে অনুযায়ী, জামায়াতের ওই বছরের ব্যয় বিএনপির প্রায় পাঁচগুণ।

সবাইকে ছাপিয়ে জামায়াত

আয়-ব্যয়ে বিএনপির পর জাপা, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ

বিএনপির ৭০ শতাংশই উদ্বৃত্ত

বিভিন্ন ব্যক্তি/সংস্থার কাছ থেকে জামায়াতের পাওয়া অনুদান মোট আয়ের ৪১ শতাংশ

অনুদান ২০ হাজার টাকার বেশি হলে ব্যাংক চেকে নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তবে জামায়াতের ব্যাংক হিসাবই নেই

২১টি রাজনৈতিক দল ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি; ১০টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে

আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া কালচারে পরিণত হয়েছে। স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এগুলো তদন্ত হয় না: টিআইবি

অন্তর্বর্তী সরকার ‘অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের’ কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর ইসি দলটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে। এ দলের পক্ষে কোনো হিসাব ইসিতে জমা হয়নি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (রিপ্রেজেন্টেটিভ পিপলস অর্ডার-আরপিও) অনুযায়ী, ২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতি বছর তাদের আয়-ব্যয়ের অডিট রিপোর্ট স্বীকৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষা করে ইসিতে জমা দিতে হয়। প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের বছরের হিসাব দিয়ে থাকে দলগুলো। পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান আছে।

নির্ধারিত সময় পার হলেও ২১টি রাজনৈতিক দল ইসিতে ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব (অডিট রিপোর্ট) জমা দেয়নি। এরমধ্যে ১০টি দল হিসাব জমা দেয়ার জন্য এক বা দুই মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। বাকি ১১টি দল সেই আবেদনও করেনি।

ইসিতে জমা দেয়া দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব ছক অনুযায়ী ‘ঠিক’ হলেও বাস্তবে এর বিশ্বাসযোগ্যাতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। খাতওয়ারি বা বিস্তারিত হিসাব ইসি জানায় না; অডিট রিপোর্টও প্রকাশ করে না।

আরপিও অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল বিদেশি রাষ্ট্র বা বিদেশি সাহায্যপুষ্ট কোনো বেসরকারি সংস্থা বা জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নন এমন কোনো ব্যক্তি বা তার প্রতিষ্ঠিত বা পরিচালিত কোনো সংস্থার কাছ থেকে উপহার, দান, অনুদান বা অর্থ নিতে পারবে না।

সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের যেসব ইসিতে জমা পড়েছে, তা নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। হিসাবের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে ইসি তা খতিয়ে দেখতে পারে। তবে কমিশন এসব খতিয়ে দেখে না।

ইসিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া প্রসঙ্গে টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আসলে প্রতি বছর ইসিতে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। তাদের অডিট ফার্মের রিপোর্ট কতটা স্বচ্ছ, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এগুলো তদন্ত করে দেখা হয়।’

তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সারা বছর দল পরিচালনায় যে অর্থ খরচ করে, তার আয়-ব্যয়ের প্রকৃত হিসাব প্রকাশ করে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এখানে কালো টাকার একটি অংশ আছে। আর হিসাব ঠিক মতো প্রকাশ না করলেই তো সেটা কালো টাকা।’

দলীয় আয়-ব্যয়ের বাইরে দলগত প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের প্রসঙ্গ টেনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ইসিতে প্রার্থীরা যে হলফনামা দেয়, আয়-ব্যয়ের যে হিসাব দেয়, তাও প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশি। দলের এবং প্রার্থীর দুই জায়গায়ই আয়-ব্যয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা আনা দরকার।’

# জামায়াতের ব্যাংক হিসাব নেই

২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে শেষবার আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছর তারা নিবন্ধন ফিরে পায়। সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এক যুগ পর ফের আয় ব্যয়ের হিসাব দেয় দলটি।

ইসিতে জমা দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা আয়ের বিপরীতে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে জামায়াত।

জামায়াতের আয়ের প্রায় ৪১ শতাংশ এসেছে বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান। এ খাতে দলটির আয় ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। তবে বেশি আয় ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা এসেছে দলের কর্মী ও সদস্যদের দেয়া চাঁদা থেকে । যা মোট আয়ের ৫৭ শতাংশ।

কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা থেকে এসেছে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা।

আরপিও অনুযায়ী, একটি রাজনৈতিক দল কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে এক পঞ্জিকা বছরে সর্বোচ্চ বছরে সর্বোচ্চ ১০ লাখ এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সর্বোচ্চ বছরে ৫০ লাখ টাকা অনুদান নিতে পারে। এরমধ্যে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ অনুদান গ্রহণ করতে পারে। এর বেশি হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে অনুদান নেয়া বাধ্যতামূলক।

জামায়াতের জমা দেয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদনে কোনো ব্যাংক হিসাবের কথা বলা নেই। দলটি বলছে, ‘দীর্ঘ পনের বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এমনটি হয়েছে। ব্যাংক হিসাব খুলেই আগামী বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া হবে।’

ইসিতে জামায়াতের জমা দেয়া হিসাব অনুযায়ী, বিগত বছরে তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে, ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা।

বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা।

ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।

# বিএনপির ৭০ শতাংশই উদ্বৃত্ত

বিএনপি যে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপির মোট আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। একই সময়ে দলটির ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। দলটির উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা, যা মোট আয়ের ৭০ শতাংশ। এ অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা আছে।

দলটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিএনপির আয়ের খাতের মধ্যে ছিল- জাতীয় নির্বাহী কমিটির মাসিক চাঁদা, বই-পুস্তক বিক্রয়, বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান, ব্যাংক থেকে অর্জিত সুদ ইত্যাদি।

২০২৪ সালে বিএনপির ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ব্যক্তিকে আর্থিক অনুদান, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, বিভিন্ন সভার হল ভাড়া, দাপ্তরিক ক্রোড়পত্র ছাপানো, রমজানে ইফতার মাহফিল ও অফিশিয়াল বিভিন্ন খরচ।

দলটির দাবি, গত বছর বিএনপির আয় কীভাবে হয়েছে, কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য অডিট রিপোর্টে উল্লেখ আছে।

# অন্যান্য দল

# জাতীয় পার্টি: ২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির (জাপা) আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।

# এবি পার্টি: আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি আয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। আর ১ কোটি ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ২৩১ টাকা ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। ব্যাংকে জমা রয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ১১৩ টাকা।

# গণঅধিকার: গণঅধিকার পরিষদের আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা। আগের বছরের স্থিতি ৫ হাজার টাকাসহ বর্তমান স্থিতি ১৩ হাজার ২১২ টাকা।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, হিসাব জমা দেয়া বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় আরো অনেক কম।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া দলগুলো হচ্ছে- জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ, গণফোরাম, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (বিএসপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (প্রযোজ্য নয়) ও বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি)।

অডিট রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য এক মাস (আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত) সময় চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছে- লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম।

দুই মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে- বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।

এছাড়া হিসাব জমা দেয়নি, আবেদনও করেনি এমন দলগুলো হচ্ছে- কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ) এবং গণসংহতি আন্দোলন।

ছবি

বাঁকখালী নদীতীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে স্থবিরতা

আদালতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত আইনজীবীদের শাস্তি দাবি

ছবি

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

সীমানা পুনর্নির্ধারণ: ৪৬ আসনে পরিবর্তন, গেজেট প্রকাশ

ছবি

নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার নিষিদ্ধ, আসছে নতুন আচরণবিধি

ছবি

নির্বাচনে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চায় ইসি, গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের আশ্বাস

ছবি

তারেক রহমানের ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে সমস্যা থাকলে সমাধান করব: তৌহিদ হোসেন

ছবি

মানবতাবিরোধী অপরাধ: অভিযোগপত্রে নাম এলেই ভোটে অযোগ্য, থাকবে না সরকারি চাকরি

ছবি

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প: শেখ হাসিনা-রেহানাসহ পরিবারের বিরুদ্ধে তিন মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য

ছবি

মহেশখালী-মাতারবাড়ীতে নতুন শহরের জন্ম হবে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাস বহাল রাখল আপিল বিভাগ

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানের পরও দুর্নীতি রয়ে গেছে: টিআই চেয়ারম্যান

ছবি

মহেশখালীতে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

ছবি

এসএএইচআরের পর্যবেক্ষণ: আইনশৃঙ্খলার অবনতি, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে শঙ্কা

ছবি

আচরণবিধি: পোস্টার ছাড়া ভোটে নতুন নিয়ম

ছবি

জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে আইজিপির বৈঠক: নির্বাচনের আগে ৪ হাজার এএসআই নিয়োগ

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও দুই জনের মৃত্যু, চলতি বছরে প্রাণহানি ১২৭

ছবি

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের জামিন নাকচ

ছবি

এস আলম গ্রুপের কর্ণধারের দুই ছেলেসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন

ছবি

সংসদ নির্বাচন: অক্টোবরের মধ্যে ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রস্তুত করতে চায় ইসি

ছবি

ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন

ছবি

চিকিৎসার জন্য নুরকে বিদেশ পাঠানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

‘নির্বাচন বানচালের সর্বোচ্চ চেষ্টা হবে’, সতর্ক করলেন ইউনূস

ছবি

তিন মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি

অভ্যুত্থান দমনে মামলা দেড় হাজারের বেশি, অভিযোগপত্র জমা পড়েছে ৩৪টিতে

ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্লট জালিয়াতির তিন মামলায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন

ছবি

শিগগিরই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিরতা সমাধান হবে আশা শিক্ষা উপদেষ্টার

ছবি

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ফের সুপ্রিম কোর্টের হাতে

ছবি

ট্রাইব্যুনালে ‘দায় স্বীকার’ করে ‘ক্ষমা চাইলেন’ রাজসাক্ষী সাবেক আইজি মামুন

ছবি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক: রিটকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকিদাতাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

ছবি

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নাজমুল করিম প্রত্যাহার

ছবি

জরুরি অবস্থা জারির আলোচনা ‘স্রেফ গুজব’: আসিফ নজরুল

ছবি

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি

মঙ্গলবার আরও সাত দলের সঙ্গে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও সংস্কারের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি নেই: রেহমান সোবহান

ছবি

জনগণের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: সেনাপ্রধান

tab

news » national

রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়: কার কত

ফয়েজ আহমেদ তুষার

শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নিবন্ধিত ৫০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ২৯টি দল নির্ধারিত সময়ে ২০২৪ সালের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব (অডিট রিপোর্ট) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে। ইসিরসংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, এ বছর জামায়াতে ইসলামীর আয় ও ব্যয় অন্য সব দলের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বিএনপি; এরপর জাতীয় পার্টির অবস্থান।

দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৪ সালে বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ আয় করেছে জামায়াত। একই বছর দলটি ব্যয়ের দিক থেকেও বিএনপির অনেক ওপরে। ইসিতে জমা দেয়া হিসাবে অনুযায়ী, জামায়াতের ওই বছরের ব্যয় বিএনপির প্রায় পাঁচগুণ।

সবাইকে ছাপিয়ে জামায়াত

আয়-ব্যয়ে বিএনপির পর জাপা, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ

বিএনপির ৭০ শতাংশই উদ্বৃত্ত

বিভিন্ন ব্যক্তি/সংস্থার কাছ থেকে জামায়াতের পাওয়া অনুদান মোট আয়ের ৪১ শতাংশ

অনুদান ২০ হাজার টাকার বেশি হলে ব্যাংক চেকে নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তবে জামায়াতের ব্যাংক হিসাবই নেই

২১টি রাজনৈতিক দল ইসিতে আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়নি; ১০টি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে

আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া কালচারে পরিণত হয়েছে। স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এগুলো তদন্ত হয় না: টিআইবি

অন্তর্বর্তী সরকার ‘অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের’ কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর ইসি দলটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে। এ দলের পক্ষে কোনো হিসাব ইসিতে জমা হয়নি।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (রিপ্রেজেন্টেটিভ পিপলস অর্ডার-আরপিও) অনুযায়ী, ২০০৮ সাল থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতি বছর তাদের আয়-ব্যয়ের অডিট রিপোর্ট স্বীকৃত চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে নিরীক্ষা করে ইসিতে জমা দিতে হয়। প্রতি বছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের বছরের হিসাব দিয়ে থাকে দলগুলো। পরপর তিন বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিলে নিবন্ধন বাতিলের বিধান আছে।

নির্ধারিত সময় পার হলেও ২১টি রাজনৈতিক দল ইসিতে ২০২৪ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব (অডিট রিপোর্ট) জমা দেয়নি। এরমধ্যে ১০টি দল হিসাব জমা দেয়ার জন্য এক বা দুই মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। বাকি ১১টি দল সেই আবেদনও করেনি।

ইসিতে জমা দেয়া দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব ছক অনুযায়ী ‘ঠিক’ হলেও বাস্তবে এর বিশ্বাসযোগ্যাতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। খাতওয়ারি বা বিস্তারিত হিসাব ইসি জানায় না; অডিট রিপোর্টও প্রকাশ করে না।

আরপিও অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল বিদেশি রাষ্ট্র বা বিদেশি সাহায্যপুষ্ট কোনো বেসরকারি সংস্থা বা জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নন এমন কোনো ব্যক্তি বা তার প্রতিষ্ঠিত বা পরিচালিত কোনো সংস্থার কাছ থেকে উপহার, দান, অনুদান বা অর্থ নিতে পারবে না।

সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের যেসব ইসিতে জমা পড়েছে, তা নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। হিসাবের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে ইসি তা খতিয়ে দেখতে পারে। তবে কমিশন এসব খতিয়ে দেখে না।

ইসিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া প্রসঙ্গে টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আসলে প্রতি বছর ইসিতে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া একটা কালচারে পরিণত হয়েছে। তাদের অডিট ফার্মের রিপোর্ট কতটা স্বচ্ছ, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এগুলো তদন্ত করে দেখা হয়।’

তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সারা বছর দল পরিচালনায় যে অর্থ খরচ করে, তার আয়-ব্যয়ের প্রকৃত হিসাব প্রকাশ করে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এখানে কালো টাকার একটি অংশ আছে। আর হিসাব ঠিক মতো প্রকাশ না করলেই তো সেটা কালো টাকা।’

দলীয় আয়-ব্যয়ের বাইরে দলগত প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের প্রসঙ্গ টেনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ইসিতে প্রার্থীরা যে হলফনামা দেয়, আয়-ব্যয়ের যে হিসাব দেয়, তাও প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে অনেক বেশি। দলের এবং প্রার্থীর দুই জায়গায়ই আয়-ব্যয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা আনা দরকার।’

# জামায়াতের ব্যাংক হিসাব নেই

২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে শেষবার আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছর তারা নিবন্ধন ফিরে পায়। সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এক যুগ পর ফের আয় ব্যয়ের হিসাব দেয় দলটি।

ইসিতে জমা দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা আয়ের বিপরীতে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে জামায়াত।

জামায়াতের আয়ের প্রায় ৪১ শতাংশ এসেছে বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান। এ খাতে দলটির আয় ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। তবে বেশি আয় ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা এসেছে দলের কর্মী ও সদস্যদের দেয়া চাঁদা থেকে । যা মোট আয়ের ৫৭ শতাংশ।

কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা থেকে এসেছে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা।

আরপিও অনুযায়ী, একটি রাজনৈতিক দল কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে এক পঞ্জিকা বছরে সর্বোচ্চ বছরে সর্বোচ্চ ১০ লাখ এবং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সর্বোচ্চ বছরে ৫০ লাখ টাকা অনুদান নিতে পারে। এরমধ্যে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নগদ অনুদান গ্রহণ করতে পারে। এর বেশি হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে অনুদান নেয়া বাধ্যতামূলক।

জামায়াতের জমা দেয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদনে কোনো ব্যাংক হিসাবের কথা বলা নেই। দলটি বলছে, ‘দীর্ঘ পনের বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এমনটি হয়েছে। ব্যাংক হিসাব খুলেই আগামী বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া হবে।’

ইসিতে জামায়াতের জমা দেয়া হিসাব অনুযায়ী, বিগত বছরে তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে, ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা।

বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা।

ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।

# বিএনপির ৭০ শতাংশই উদ্বৃত্ত

বিএনপি যে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপির মোট আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। একই সময়ে দলটির ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। দলটির উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা, যা মোট আয়ের ৭০ শতাংশ। এ অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা আছে।

দলটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিএনপির আয়ের খাতের মধ্যে ছিল- জাতীয় নির্বাহী কমিটির মাসিক চাঁদা, বই-পুস্তক বিক্রয়, বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনুদান, ব্যাংক থেকে অর্জিত সুদ ইত্যাদি।

২০২৪ সালে বিএনপির ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ব্যক্তিকে আর্থিক অনুদান, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ, পোস্টার-লিফলেট ছাপানো, বিভিন্ন সভার হল ভাড়া, দাপ্তরিক ক্রোড়পত্র ছাপানো, রমজানে ইফতার মাহফিল ও অফিশিয়াল বিভিন্ন খরচ।

দলটির দাবি, গত বছর বিএনপির আয় কীভাবে হয়েছে, কোন কোন খাতে ব্যয় হয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য অডিট রিপোর্টে উল্লেখ আছে।

# অন্যান্য দল

# জাতীয় পার্টি: ২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির (জাপা) আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।

# এবি পার্টি: আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি আয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। আর ১ কোটি ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ২৩১ টাকা ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। ব্যাংকে জমা রয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ১১৩ টাকা।

# গণঅধিকার: গণঅধিকার পরিষদের আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা। আগের বছরের স্থিতি ৫ হাজার টাকাসহ বর্তমান স্থিতি ১৩ হাজার ২১২ টাকা।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, হিসাব জমা দেয়া বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় আরো অনেক কম।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়া দলগুলো হচ্ছে- জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশ, গণফোরাম, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ কংগ্রেস, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (বিএসপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (প্রযোজ্য নয়) ও বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি)।

অডিট রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য এক মাস (আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত) সময় চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছে- লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম।

দুই মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে- বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।

এছাড়া হিসাব জমা দেয়নি, আবেদনও করেনি এমন দলগুলো হচ্ছে- কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাকের পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ) এবং গণসংহতি আন্দোলন।

back to top