শুক্রবার সকালে নুনিয়ারছড়া ও নতুন বাহারছড়া উচ্ছেদ অভিযানে গেলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন প্রশাসনের কর্মকর্তারা -সংবাদ
কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান টানা পঞ্চম দিনও থমকে গেল। শুক্রবার, (০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে নুনিয়ারছড়া ও নতুন বাহারছড়ার অংশে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখে বিআইডব্লিউটিএ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা আর এগোতে পারেননি।
সকাল থেকেই শত শত মানুষ শহরের প্রধান সড়ক ও বিমানবন্দর সড়কে বিক্ষোভে নামে। টায়ার জ্বালিয়ে এবং ঠেলাগাড়ি ফেলে তারা গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে রাখে। একপর্যায়ে চার রাস্তার মোড়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অবরোধকারীদের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনা সদস্য, পুলিশ ও র্যাব একাধিকবার আলোচনা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে না। স্থানীয়দের দাবি তারা দীর্ঘদিন ধরে খতিয়ানভুক্ত জমিতে বসবাস করছেন এবং নিয়মিত খাজনাও দিচ্ছেন। তাই এ উচ্ছেদ অভিযান অবৈধ। তাদের ঘোষণা, প্রাণ দেব, কিন্তু উচ্ছেদ হতে দেব না।
এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা আটকা পড়েন, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। পরিস্থিতি আরও জটিল হলে ঘটনাস্থলে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে সাময়িকভাবে উচ্ছেদ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান।
অবশেষে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান সাময়িক স্থগিতের ঘোষণা দেয়। বুলডোজার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পিছু হটলে রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে অবরোধকারীরাও সরে যান। দুপুর নাগাদ যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে কক্সবাজারবাসী আতঙ্কে রয়েছে। অনেক পুরাতন বসতি ও খতিয়ানভুক্ত জমি উচ্ছেদ করলে মানবিক বিপর্যয় ঘটবে। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দুই দিন নির্বিঘ্নে কাজ চললেও তৃতীয় দিনে স্থানীয়দের বাধায় থেমে যায়। চতুর্থ দিনে আংশিক অভিযান চালানো হলেও পঞ্চম দিন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে পুলিশের ওপর হামলা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলায় ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, গত ১০-১২ বছরে বাঁকখালীর নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। এরমধ্যে সাড়ে ৩০০ জন প্রভাবশালী দখলদারের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে।
২০১০ সালে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে বিআইডব্লিউটিএকে দায়িত্ব দেয়া হলেও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জমি হস্তান্তর না হওয়ায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। এ সুযোগে বারবার দখল বেড়েছে। ২০২৩ সালে বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে তিন শতাধিক একর জমি দখলমুক্ত করা হলেও অল্পদিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
সম্প্রতি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আরএস জরিপ অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় চলমান উচ্ছেদ অভিযান।
শুক্রবার সকালে নুনিয়ারছড়া ও নতুন বাহারছড়া উচ্ছেদ অভিযানে গেলে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন প্রশাসনের কর্মকর্তারা -সংবাদ
শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান টানা পঞ্চম দিনও থমকে গেল। শুক্রবার, (০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে নুনিয়ারছড়া ও নতুন বাহারছড়ার অংশে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও স্থানীয়দের তীব্র প্রতিবাদের মুখে বিআইডব্লিউটিএ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা আর এগোতে পারেননি।
সকাল থেকেই শত শত মানুষ শহরের প্রধান সড়ক ও বিমানবন্দর সড়কে বিক্ষোভে নামে। টায়ার জ্বালিয়ে এবং ঠেলাগাড়ি ফেলে তারা গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে রাখে। একপর্যায়ে চার রাস্তার মোড়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
অবরোধকারীদের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনা সদস্য, পুলিশ ও র্যাব একাধিকবার আলোচনা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে না। স্থানীয়দের দাবি তারা দীর্ঘদিন ধরে খতিয়ানভুক্ত জমিতে বসবাস করছেন এবং নিয়মিত খাজনাও দিচ্ছেন। তাই এ উচ্ছেদ অভিযান অবৈধ। তাদের ঘোষণা, প্রাণ দেব, কিন্তু উচ্ছেদ হতে দেব না।
এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা আটকা পড়েন, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। পরিস্থিতি আরও জটিল হলে ঘটনাস্থলে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে সাময়িকভাবে উচ্ছেদ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান।
অবশেষে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান সাময়িক স্থগিতের ঘোষণা দেয়। বুলডোজার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পিছু হটলে রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে অবরোধকারীরাও সরে যান। দুপুর নাগাদ যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে কক্সবাজারবাসী আতঙ্কে রয়েছে। অনেক পুরাতন বসতি ও খতিয়ানভুক্ত জমি উচ্ছেদ করলে মানবিক বিপর্যয় ঘটবে। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি।
গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দুই দিন নির্বিঘ্নে কাজ চললেও তৃতীয় দিনে স্থানীয়দের বাধায় থেমে যায়। চতুর্থ দিনে আংশিক অভিযান চালানো হলেও পঞ্চম দিন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে পুলিশের ওপর হামলা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলায় ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, গত ১০-১২ বছরে বাঁকখালীর নুনিয়ারছড়া থেকে মাঝিরঘাট পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারে এক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। এরমধ্যে সাড়ে ৩০০ জন প্রভাবশালী দখলদারের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে।
২০১০ সালে বাঁকখালী নদীবন্দরের সংরক্ষক হিসেবে বিআইডব্লিউটিএকে দায়িত্ব দেয়া হলেও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জমি হস্তান্তর না হওয়ায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। এ সুযোগে বারবার দখল বেড়েছে। ২০২৩ সালে বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে তিন শতাধিক একর জমি দখলমুক্ত করা হলেও অল্পদিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।
সম্প্রতি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, আরএস জরিপ অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে চার মাসের মধ্যে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় চলমান উচ্ছেদ অভিযান।