লেখক, গবেষক ও বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর আর নেই। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে রোববার সকালে তিনি ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম জানান, সকালেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপের সমস্যার কারণে গত ২২ জুলাই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল বদরুদ্দীন উমরকে। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসাতেও ফিরেছিলেন।
১৯৩১ সালে ২০ ডিসেম্বর ভারতের
বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার বাবা আবুল হাশিম ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ।
১৯৫০ সালে তারা ঢাকায় আসেন। বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এসে উমর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক শেষ করে ১৯৫৫ সালে দর্শন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর পড়তে যান যুক্তরাজ্যে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করেন ফিলোসফি, পলিটিক্স ও ইকোনমিক্সে (পিপিই)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করার সময়ই দর্শন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন উমর। ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ এবং ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
শিক্ষকতার কাজে ইস্তফা দেন ১৯৬৮ সালে। তারপর সরাসরি রাজনীতি ও সার্বক্ষণিক লেখালেখি শুরু করেন উমর।
তার লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ। তার প্রকাশিত তিনটি বই সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৬), সংস্কৃতির সংকট (১৯৬৭) ও সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৯) বাঙালি জাতীয়তাবাদের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মার্কসবাদী চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বাংলাদেশের বাম রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন। একসময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৩ সালে বদরুদ্দীন উমর জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল গঠন করে সভাপতির দায়িত্ব নেন। এক সময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে সভাপতির দায়িত্ব নেন।
চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য বদরুদ্দীন উমরকে মনোনীত করে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তার ভাষ্য, এর আগেও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে তাকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি।
রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লেখক, গবেষক ও বাম ধারার বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর আর নেই। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে রোববার সকালে তিনি ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম জানান, সকালেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপের সমস্যার কারণে গত ২২ জুলাই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল বদরুদ্দীন উমরকে। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসাতেও ফিরেছিলেন।
১৯৩১ সালে ২০ ডিসেম্বর ভারতের
বর্ধমানে জন্মগ্রহণ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার বাবা আবুল হাশিম ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ।
১৯৫০ সালে তারা ঢাকায় আসেন। বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এসে উমর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক শেষ করে ১৯৫৫ সালে দর্শন শাস্ত্রে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর পড়তে যান যুক্তরাজ্যে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করেন ফিলোসফি, পলিটিক্স ও ইকোনমিক্সে (পিপিই)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করার সময়ই দর্শন বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন উমর। ১৯৫৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ এবং ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
শিক্ষকতার কাজে ইস্তফা দেন ১৯৬৮ সালে। তারপর সরাসরি রাজনীতি ও সার্বক্ষণিক লেখালেখি শুরু করেন উমর।
তার লেখা ‘পূর্ববাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি’ ভাষা আন্দোলনের ওপর প্রথম গবেষণাগ্রন্থ। তার প্রকাশিত তিনটি বই সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৬), সংস্কৃতির সংকট (১৯৬৭) ও সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৯) বাঙালি জাতীয়তাবাদের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মার্কসবাদী চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বাংলাদেশের বাম রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী ছিলেন। একসময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৩ সালে বদরুদ্দীন উমর জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল গঠন করে সভাপতির দায়িত্ব নেন। এক সময় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন বদরুদ্দীন উমর। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নামে একটি সংগঠন গড়ে সভাপতির দায়িত্ব নেন।
চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য বদরুদ্দীন উমরকে মনোনীত করে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ তার ভাষ্য, এর আগেও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে তাকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে, তিনি কোনোটিই গ্রহণ করেননি।