সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে -সংবাদ
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের ৩০০ আসনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ফরিদপুর, বাগেরহাট, রংপুর, পাবনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও হরতালের মতো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এবারের সীমানা পুননির্ধারণে প্রায় ৫২টি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়েছে।
সংসদীয় আসনের সীমানায় আর কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই: ইসি আনোয়ারুল ইসলাম
আদালতে মামলা হয়তো করা যাবে না, কিন্তু সংক্ষুব্ধ কেউ রিট করলে সেই সুযোগ আছে: জেসমিন টুলি
গাজীপুরে সংসদীয় আসনের অবস্থা ছেঁড়াবেড়া করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন: ফেইসবুকে সমালোচনা
দেশব্যাপী প্রতিবাদের মুখেও নিজেদের অবস্থানে অনড় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার রোববার,(০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী সীমানার চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তাই বিক্ষোভ-আন্দোলন করেও কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, ‘ভোটার সংখ্যা এবং প্রশাসনিক অখণ্ডতাসহ সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই কমিশন নিরপেক্ষভাবে এই দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে।’
কোনো কোনো আসনের প্রার্থীরা বলছেন, খসড়া তালিকার নিষ্পত্তি না করে কোথাও কোথাও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে চূড়ান্ত গেজেটে। এটি নতুন করে সংকট তৈরি করেছে।
বাগেরহাটে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, নির্বাচন বর্জনের হুমকি
সবচেয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাগেরহাটে, যেখানে ৪২ বছর পর একটি সংসদীয় আসন কমানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনপি ও জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল মিলে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করেছে। শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই কমিটি পাঁচ দিনের লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করে, যার মধ্যে রয়েছে আগামীকাল থেকে মোংলা বন্দরসহ পুরো জেলায় তিন দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। সড়ক পথের পাশাপাশি মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌ রুটেও অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে বাগেরহাট থেকে কোনো দল আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে না।
ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ও পাবনায় সড়ক অবরোধ
ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলাকে বিভক্ত করার প্রতিবাদে সেখানে ব্যাপক আন্দোলন চলছে। ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো গত শুক্র ও রোববার ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে। ‘ভাঙ্গা উপজেলার অঙ্গহানি, চলবে না’ স্লোগান দিয়ে আন্দোলনকারীরা পুরো দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
একইভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা
ও বুধন্তি ইউনিয়নকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে সড়কের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পাবনার দুটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন। পাবনা-১ ও পাবনা-২ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস বাতিলের দাবিতে এই কর্মসুচি পালন করে তারা। পাবনা-১ আসনে সাঁথিয়া এবং পাবনা-২ আসনে বেড়া ও সুজানগরকে একীভুত করা হয়েছে।
রংপুর ও কুমিল্লাতে প্রতিবাদ
রংপুর-৩ (সদর) আসনের সিটি কর্পোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডকে রংপুর-১ (গংগাচড়া) আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে রোববার রংপুরের কাচারী বাজারে মানববন্ধন করেছেন কয়েকশ এলাকাবাসী। তারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই তারা সদর আসনে ভোট দিয়ে আসছেন এবং কোনো আলোচনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন। এছাড়া কুমিল্লায় হোমনা-মেঘনা উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-২ আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
গাজীপুরের সংসদীয় আসন পূর্ণবিন্যাস নিয়ে ফেইসবুকে সমালোচনা
গাজীপুরের আজিজুল হক নামে স্থানীয় একজন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গাজীপুরে সংসদীয় আসনের অবস্থা ছেরাবেরা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পূবাইলের পেটি-মাথা কালীগঞ্জে (গাজীপুর-৪) এবং লেজ টঙ্গীর সাথে (গাজীপুর-৬)। আর কই বাড়িয়া, কই কাশিমপুর? ছিন্নভিন্ন গাজীপুর-২!! এর চেয়ে আগের খসড়াটাই ভালো ছিলো।’
এই পোস্টে মৃধা মতি নামে একজন কমেন্টস করেছেন, ‘গাজীপুর সংসদীয় আসনতো দেখা যায় এক্কেবারে ছেড়া ভেরা কিন্তু প্রস্তাবিত আসনতো ভিন্ন রকম দেখানো হয়েছিল।’ অপর একজন লিখেছেন, ‘গাজীপুরের লোকজন উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে উৎফুল্লতা প্রকাশ করে এসেছে। এখন এসব আলোচনার সহমত পোষণ করা ঠিক না।’
আইনি প্রতিকার ও ইসির অবস্থান
বিভিন্ন এলাকার সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাগেরহাট ও ফরিদপুরের বিএনপি নেতারা মাঠের আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানের ১২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বা আসন-বণ্টন নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিকের মতে, বড় কোনো আইনি ব্যত্যয় না ঘটলে ইসির গেজেট নিয়ে আদালতে রিট করা যায় না।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আর কোনো আপত্তি বা আন্দোলন করার সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে আদালতে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। এই বিষয়ে রোববার নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সংসদীয় আসনের সীমানায় আর কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ আছে বলে কমিশন মনে করে না। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ পেশাদারত্ব দিয়ে, আইন মেনে, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
তবে নির্বাচন বিশ্লেষক ও ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলির মতে, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়তো করা যাবে না, কিন্তু সংক্ষুব্ধ কেউ রিট করলে সেই সুযোগ আছে।
ফলে আইনি জটিলতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর অনড় অবস্থানের কারণে সৃষ্ট এই সংকটের সমাধান কোন পথে হবে, তা জানতে এখন উচ্চ আদালতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে -সংবাদ
রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের ৩০০ আসনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই ফরিদপুর, বাগেরহাট, রংপুর, পাবনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও হরতালের মতো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এবারের সীমানা পুননির্ধারণে প্রায় ৫২টি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হয়েছে।
সংসদীয় আসনের সীমানায় আর কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই: ইসি আনোয়ারুল ইসলাম
আদালতে মামলা হয়তো করা যাবে না, কিন্তু সংক্ষুব্ধ কেউ রিট করলে সেই সুযোগ আছে: জেসমিন টুলি
গাজীপুরে সংসদীয় আসনের অবস্থা ছেঁড়াবেড়া করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন: ফেইসবুকে সমালোচনা
দেশব্যাপী প্রতিবাদের মুখেও নিজেদের অবস্থানে অনড় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার রোববার,(০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫) জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী সীমানার চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তাই বিক্ষোভ-আন্দোলন করেও কোনো লাভ হবে না। তিনি বলেন, ‘ভোটার সংখ্যা এবং প্রশাসনিক অখণ্ডতাসহ সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই কমিশন নিরপেক্ষভাবে এই দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে।’
কোনো কোনো আসনের প্রার্থীরা বলছেন, খসড়া তালিকার নিষ্পত্তি না করে কোথাও কোথাও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে চূড়ান্ত গেজেটে। এটি নতুন করে সংকট তৈরি করেছে।
বাগেরহাটে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, নির্বাচন বর্জনের হুমকি
সবচেয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাগেরহাটে, যেখানে ৪২ বছর পর একটি সংসদীয় আসন কমানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনপি ও জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দল মিলে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করেছে। শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে এই কমিটি পাঁচ দিনের লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করে, যার মধ্যে রয়েছে আগামীকাল থেকে মোংলা বন্দরসহ পুরো জেলায় তিন দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। সড়ক পথের পাশাপাশি মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌ রুটেও অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে বাগেরহাট থেকে কোনো দল আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে না।
ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ও পাবনায় সড়ক অবরোধ
ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলাকে বিভক্ত করার প্রতিবাদে সেখানে ব্যাপক আন্দোলন চলছে। ফরিদপুর-৪ আসন থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনগুলো গত শুক্র ও রোববার ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে। ‘ভাঙ্গা উপজেলার অঙ্গহানি, চলবে না’ স্লোগান দিয়ে আন্দোলনকারীরা পুরো দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
একইভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা
ও বুধন্তি ইউনিয়নকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে সড়কের উভয় পাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
পাবনার দুটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন। পাবনা-১ ও পাবনা-২ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস বাতিলের দাবিতে এই কর্মসুচি পালন করে তারা। পাবনা-১ আসনে সাঁথিয়া এবং পাবনা-২ আসনে বেড়া ও সুজানগরকে একীভুত করা হয়েছে।
রংপুর ও কুমিল্লাতে প্রতিবাদ
রংপুর-৩ (সদর) আসনের সিটি কর্পোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডকে রংপুর-১ (গংগাচড়া) আসনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে রোববার রংপুরের কাচারী বাজারে মানববন্ধন করেছেন কয়েকশ এলাকাবাসী। তারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই তারা সদর আসনে ভোট দিয়ে আসছেন এবং কোনো আলোচনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন। এছাড়া কুমিল্লায় হোমনা-মেঘনা উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-২ আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
গাজীপুরের সংসদীয় আসন পূর্ণবিন্যাস নিয়ে ফেইসবুকে সমালোচনা
গাজীপুরের আজিজুল হক নামে স্থানীয় একজন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গাজীপুরে সংসদীয় আসনের অবস্থা ছেরাবেরা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পূবাইলের পেটি-মাথা কালীগঞ্জে (গাজীপুর-৪) এবং লেজ টঙ্গীর সাথে (গাজীপুর-৬)। আর কই বাড়িয়া, কই কাশিমপুর? ছিন্নভিন্ন গাজীপুর-২!! এর চেয়ে আগের খসড়াটাই ভালো ছিলো।’
এই পোস্টে মৃধা মতি নামে একজন কমেন্টস করেছেন, ‘গাজীপুর সংসদীয় আসনতো দেখা যায় এক্কেবারে ছেড়া ভেরা কিন্তু প্রস্তাবিত আসনতো ভিন্ন রকম দেখানো হয়েছিল।’ অপর একজন লিখেছেন, ‘গাজীপুরের লোকজন উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে উৎফুল্লতা প্রকাশ করে এসেছে। এখন এসব আলোচনার সহমত পোষণ করা ঠিক না।’
আইনি প্রতিকার ও ইসির অবস্থান
বিভিন্ন এলাকার সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাগেরহাট ও ফরিদপুরের বিএনপি নেতারা মাঠের আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানের ১২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বা আসন-বণ্টন নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিকের মতে, বড় কোনো আইনি ব্যত্যয় না ঘটলে ইসির গেজেট নিয়ে আদালতে রিট করা যায় না।
এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আর কোনো আপত্তি বা আন্দোলন করার সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে আদালতে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। এই বিষয়ে রোববার নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সংসদীয় আসনের সীমানায় আর কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ আছে বলে কমিশন মনে করে না। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ পেশাদারত্ব দিয়ে, আইন মেনে, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
তবে নির্বাচন বিশ্লেষক ও ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলির মতে, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়তো করা যাবে না, কিন্তু সংক্ষুব্ধ কেউ রিট করলে সেই সুযোগ আছে।
ফলে আইনি জটিলতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর অনড় অবস্থানের কারণে সৃষ্ট এই সংকটের সমাধান কোন পথে হবে, তা জানতে এখন উচ্চ আদালতের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।