ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সংসদীয় আসনের সীমানায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, ৩০০টি আসনের মধ্যে ৫২টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা গত তিনটি নির্বাচনের তুলনায় বেশি। এই পুনর্বিন্যাসের ফলে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বৃদ্ধি এবং বাগেরহাট জেলায় একটি আসন কমেছে। গত বৃহস্পতিবার এই চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং এই নতুন সীমানাতেই এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গেজেট প্রকাশের পর ফরিদপুর, বাগেরহাট, রংপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো কিছু এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অবরোধের মতো কর্মসূচিও পালন করছে। তবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আর কোনো আপত্তি বা আন্দোলন করার সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে আদালতে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সম্পূর্ণ পেশাদারিত্ব দিয়ে, আইন মেনে, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালের পর ২০০৮ সালে সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। সে সময় নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৩৩টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ৮৭টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আনা হলেও ৫০ আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে ২০১৩ সালে সীমানা চূড়ান্ত করা হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে ২৫টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনা হয়। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৩৮টি আসনে দাবি-আপত্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক ডজন আসনে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়।
এবার প্রাথমিকভাবে নির্বাচন কমিশন ৩৯টি আসনে পরিবর্তন এনে খসড়া প্রকাশ করেছিল। এর বিপরীতে ৮৪টি আসনের বিষয়ে দেড় হাজারের বেশি দাবি ও আপত্তির আবেদন জমা পড়ে। মাসব্যাপী শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ৫২টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়। এরমধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটের একটি আসন কমানোর বিষয়ও রয়েছে। আর বাকি ২৫০টি আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানা অপরিবর্তিত রাখা হয়।
যেসব আসনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে
গাজীপুর: এ জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়েছে। নতুন আসন গাজীপুর-৬ সিটি করপোরেশনের ২৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর-৪ আসনটি আগের সীমানায় রেখে অন্য চারটি আসনের ওয়ার্ড অদলবদল করা হয়েছে।
বাগেরহাট: এ জেলায় চারটি আসনের পরিবর্তে তিনটি আসন চূড়ান্ত করা হয়েছে। একটি আসন কমে যাওয়ায় ফকিরহাট ও কচুয়া উপজেলাকে বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের মধ্যে অদলবদল করা হয়েছে।
ঢাকা: ঢাকা-২, ৪, ৫, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯ আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ঢাকা-২ আসনের তিনটি ইউনিয়ন (কাউন্দিয়া, বনগাঁও ও বিরুলিয়া) ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১৯ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তবে ঢাকা-৩ আসনকে আগের সীমানায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
কুমিল্লা: কুমিল্লা-১, ২, ৬ ও ১০ আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কুমিল্লা-১০ আসনের সদর দক্ষিণ উপজেলাকে কুমিল্লা-৬ এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এখন নাঙ্গলকোট ও লালমাই উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-১০ আসন গঠিত হবে।
ফরিদপুর: ফরিদপুর-২ ও ৪ আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন দুটি ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ-১ ও ২ আসনে কমিশন খসড়া প্রস্তাবে যে পরিবর্তন এনেছিল, কোনো দাবি-আপত্তি আমলে না নিয়ে তা চূড়ান্ত করেছে।
পাবনা: পাবনা-১ ও ২ আসনে ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবর্তন এনে উপজেলার অখ-তা বজায় রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা-২, ৩ ও ৪ আসনে উপজেলার অখ-তা রাখতে ইউনিয়ন পর্যায়ে রদবদল করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনে বিজয়নগর উপজেলার ইউনিয়নগুলোকে দুটি আসনে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
নোয়াখালী: নোয়াখালী-১, ২, ৪ ও ৫ আসনে সদর উপজেলা ও সোনাইমুড়ীর কিছু ইউনিয়ন ভাগাভাগি করে যে খসড়া প্রকাশ করা হয়েছিল, তাই চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সংসদীয় আসনের সীমানায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, ৩০০টি আসনের মধ্যে ৫২টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা গত তিনটি নির্বাচনের তুলনায় বেশি। এই পুনর্বিন্যাসের ফলে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বৃদ্ধি এবং বাগেরহাট জেলায় একটি আসন কমেছে। গত বৃহস্পতিবার এই চূড়ান্ত সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং এই নতুন সীমানাতেই এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
গেজেট প্রকাশের পর ফরিদপুর, বাগেরহাট, রংপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো কিছু এলাকায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অবরোধের মতো কর্মসূচিও পালন করছে। তবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আর কোনো আপত্তি বা আন্দোলন করার সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে আদালতে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘সম্পূর্ণ পেশাদারিত্ব দিয়ে, আইন মেনে, নিরপেক্ষতা বজায় রেখে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
ইসির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালের পর ২০০৮ সালে সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। সে সময় নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৩৩টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ৮৭টি সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আনা হলেও ৫০ আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন করে ২০১৩ সালে সীমানা চূড়ান্ত করা হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে ২৫টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনা হয়। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৩৮টি আসনে দাবি-আপত্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এক ডজন আসনে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়।
এবার প্রাথমিকভাবে নির্বাচন কমিশন ৩৯টি আসনে পরিবর্তন এনে খসড়া প্রকাশ করেছিল। এর বিপরীতে ৮৪টি আসনের বিষয়ে দেড় হাজারের বেশি দাবি ও আপত্তির আবেদন জমা পড়ে। মাসব্যাপী শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ৫২টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়। এরমধ্যে গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটের একটি আসন কমানোর বিষয়ও রয়েছে। আর বাকি ২৫০টি আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানা অপরিবর্তিত রাখা হয়।
যেসব আসনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে
গাজীপুর: এ জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়েছে। নতুন আসন গাজীপুর-৬ সিটি করপোরেশনের ২৩টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর-৪ আসনটি আগের সীমানায় রেখে অন্য চারটি আসনের ওয়ার্ড অদলবদল করা হয়েছে।
বাগেরহাট: এ জেলায় চারটি আসনের পরিবর্তে তিনটি আসন চূড়ান্ত করা হয়েছে। একটি আসন কমে যাওয়ায় ফকিরহাট ও কচুয়া উপজেলাকে বাগেরহাট-২ ও বাগেরহাট-৩ আসনের মধ্যে অদলবদল করা হয়েছে।
ঢাকা: ঢাকা-২, ৪, ৫, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯ আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ঢাকা-২ আসনের তিনটি ইউনিয়ন (কাউন্দিয়া, বনগাঁও ও বিরুলিয়া) ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১৯ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তবে ঢাকা-৩ আসনকে আগের সীমানায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
কুমিল্লা: কুমিল্লা-১, ২, ৬ ও ১০ আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কুমিল্লা-১০ আসনের সদর দক্ষিণ উপজেলাকে কুমিল্লা-৬ এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এখন নাঙ্গলকোট ও লালমাই উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-১০ আসন গঠিত হবে।
ফরিদপুর: ফরিদপুর-২ ও ৪ আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন দুটি ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ-১ ও ২ আসনে কমিশন খসড়া প্রস্তাবে যে পরিবর্তন এনেছিল, কোনো দাবি-আপত্তি আমলে না নিয়ে তা চূড়ান্ত করেছে।
পাবনা: পাবনা-১ ও ২ আসনে ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবর্তন এনে উপজেলার অখ-তা বজায় রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা-২, ৩ ও ৪ আসনে উপজেলার অখ-তা রাখতে ইউনিয়ন পর্যায়ে রদবদল করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনে বিজয়নগর উপজেলার ইউনিয়নগুলোকে দুটি আসনে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
নোয়াখালী: নোয়াখালী-১, ২, ৪ ও ৫ আসনে সদর উপজেলা ও সোনাইমুড়ীর কিছু ইউনিয়ন ভাগাভাগি করে যে খসড়া প্রকাশ করা হয়েছিল, তাই চূড়ান্ত করা হয়েছে।