নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী বিএনপি ও এনসিপি নেতাদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার ঘটনায় ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে থেকেই ‘একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ার পরও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটতে পারল, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের কেন ভিভিআইপি সুবিধার বদলে আলাদাভাবে বিমানবন্দর থেকে বের করার ব্যবস্থা হল, তার একটি ব্যাখ্যাও মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, “এই জঘন্য ঘটনা শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিষাক্ত ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির নির্মম স্মারক। এ উত্তরাধিকার ভেঙে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার নিউ ইয়র্কে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তার সফরসঙ্গী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির; এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও একই ফ্লাইটে নিউ ইয়র্কে পৌঁছান।
মুহম্মদ ইউনূস সরকারপ্রধান হিসেবে বিশেষ নিরাপত্তায় অন্য একটি গেইট দিয়ে বেরিয়ে গেলেও তার সফরসঙ্গী বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতারা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ঘিরে নানা স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি তুমুল গালিগালাজ করেন। এনসিপির আখতার হোসেনের গায়ে ডিমও ছোড়া হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ আনেন। আগের কয়েকটি ঘটনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্রমাগত ‘হামলা, ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা’ চললেও সরকারের পক্ষ থেকে ‘উপযুক্ত কোনো ব্যবস্থা’ নেওয়া হয়নি।
“এই ঘটনাগুলার সাথে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা জড়িত। ভেতর থেকে এই ইনফরমেশনগুলো লিক করা হয় এবং সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিরাপত্তা প্রদানের যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যবস্থাগুলো যথাযথ ছিল না। আমরা এর নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গী রাজনৈতিক নেতাদের সফরকে ঘিরে সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে থেকেই ‘একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ নিয়েছিল।
“জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রতিনিধি দলকে প্রথমে নির্ধারিত ভিভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং বিশেষ সুরক্ষিত পরিবহন ব্যবস্থায় তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ এবং শেষ মুহূর্তের ভিসাজনিত জটিলতার কারণে প্রতিনিধি দলকে বিকল্প পথে যেতে হয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং রাজনৈতিক নেতাদের জন্য নিরাপত্তা সহায়তা অব্যাহত রাখার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অনিচ্ছাকৃতভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েন।”
সোমবার বিকালে ওই ঘটনার পর সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলের সামনে থেকে মিজানুর রহমান নামে যুবলীগের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সে প্রসঙ্গ ধরে সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “ঘটনার পরপরই অন্তর্বর্তী সরকার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ও আইনসম্মত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে এবং এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে।
“ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারি প্রতিনিধি দলের সব সদস্যের নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।”
দেশ ও দেশের বাইরে গণতান্ত্রিক আদর্শ ও আইনের শাসন রক্ষায় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, “রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের যে কোনো ঘটনা—বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা সীমান্তের বাইরে—কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এর যথাযথ আইনগত ও কূটনৈতিক জবাব দেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী বিএনপি ও এনসিপি নেতাদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলার ঘটনায় ‘গভীর দুঃখ’ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে থেকেই ‘একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ার পরও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটতে পারল, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের কেন ভিভিআইপি সুবিধার বদলে আলাদাভাবে বিমানবন্দর থেকে বের করার ব্যবস্থা হল, তার একটি ব্যাখ্যাও মঙ্গলবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক বিবৃতিতে দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, “এই জঘন্য ঘটনা শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিষাক্ত ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির নির্মম স্মারক। এ উত্তরাধিকার ভেঙে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার নিউ ইয়র্কে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তার সফরসঙ্গী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির; এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও একই ফ্লাইটে নিউ ইয়র্কে পৌঁছান।
মুহম্মদ ইউনূস সরকারপ্রধান হিসেবে বিশেষ নিরাপত্তায় অন্য একটি গেইট দিয়ে বেরিয়ে গেলেও তার সফরসঙ্গী বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতারা সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ঘিরে নানা স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি তুমুল গালিগালাজ করেন। এনসিপির আখতার হোসেনের গায়ে ডিমও ছোড়া হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ আনেন। আগের কয়েকটি ঘটনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্রমাগত ‘হামলা, ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা’ চললেও সরকারের পক্ষ থেকে ‘উপযুক্ত কোনো ব্যবস্থা’ নেওয়া হয়নি।
“এই ঘটনাগুলার সাথে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা জড়িত। ভেতর থেকে এই ইনফরমেশনগুলো লিক করা হয় এবং সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিরাপত্তা প্রদানের যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যবস্থাগুলো যথাযথ ছিল না। আমরা এর নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গী রাজনৈতিক নেতাদের সফরকে ঘিরে সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে থেকেই ‘একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ নিয়েছিল।
“জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রতিনিধি দলকে প্রথমে নির্ধারিত ভিভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং বিশেষ সুরক্ষিত পরিবহন ব্যবস্থায় তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ এবং শেষ মুহূর্তের ভিসাজনিত জটিলতার কারণে প্রতিনিধি দলকে বিকল্প পথে যেতে হয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং রাজনৈতিক নেতাদের জন্য নিরাপত্তা সহায়তা অব্যাহত রাখার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অনিচ্ছাকৃতভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েন।”
সোমবার বিকালে ওই ঘটনার পর সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলের সামনে থেকে মিজানুর রহমান নামে যুবলীগের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সে প্রসঙ্গ ধরে সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, “ঘটনার পরপরই অন্তর্বর্তী সরকার নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ও আইনসম্মত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে। ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে এবং এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে।
“ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারি প্রতিনিধি দলের সব সদস্যের নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।”
দেশ ও দেশের বাইরে গণতান্ত্রিক আদর্শ ও আইনের শাসন রক্ষায় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, “রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের যে কোনো ঘটনা—বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা সীমান্তের বাইরে—কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এর যথাযথ আইনগত ও কূটনৈতিক জবাব দেওয়া হবে।”