ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরেক নতুন দল বাংলাদেশ জাতীয় লীগ। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ মঙ্গলবার,(৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৪৩টি দল আবেদন করেছিল। এরমধ্যে ২২টি দলের তথ্য মাঠে পর্যালোচনা হয়েছে। এরমধ্যে দুটো দল- এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছ।’
এর ফলে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ দলীয় প্রতীক নিয়ে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে।
আখতার আহমেদ বলেন, এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করেছে। এসব দলের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে এখন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। আপত্তি থাকলে তা শুনানি শেষে নিবন্ধিত দলের নাম চূড়ান্ত করে গেজেট করা হবে এবং দলটিকে প্রতীকসহ নিবন্ধন সনদ দেয়া হবে।
এনসিপির প্রত্যাশিত শাপলা নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় না থাকায় ইসি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে, দলটি ওই প্রতীক পাচ্ছে না। এখন এনসিপিকে তালিকা থেকে অন্য কোনো প্রতীক নিতে হবে।
আইনানুযায়ী নিবন্ধন পেতে হলে দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি থাকতে হয়। প্রতিটি কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণও দেখাতে হয়।
ইসি সচিব জানান, আরও একটি দল আদালতের আদেশে নিবন্ধন পাবে। তিনটি দলের বিষয়ে ‘অধিকতর পর্যালোচনা’ করা হবে। ৯টি দলের বিষয়ে ‘অধিকতর তথ্যানুসন্ধান’ হবে। আর নিবন্ধন আবেদন করা সাতটি দল বাদ পড়ছে। বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টি আদালতের আদেশে নিবন্ধন পাবে। ‘অধিকতর পর্যালোচনা’ হবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (শাহজাহান সিরাজ) বিষয়ে। আর আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল মার্কসবাদী, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশের বিষয়ে ‘অধিকতর তথ্যানুসন্ধান’ হবে।
বাদ পড়ছে ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-সিপিবিএম, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলামী পার্টি।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। নিবন্ধিত না হলে দলীয় পরিচয় নির্বাচন করার সুযোগ নেই। এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এরমধ্যে জামায়াতে ইসলামী আবার নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এখন দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি।
নিবন্ধন যাত্রার ১৭ বছর: এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বোধীন ইসি নবম সংসদ নির্বাচনের সময় ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয়। কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দল নিবন্ধন দেয়। কে এম নুরুল হুদা কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নিবন্ধনযোগ্য কোনো দল পায়নি। তবে আদালতের আদেশে কয়েকটি দল পরে যুক্ত হয়। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। ২০০৮ সালে শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন পেলেও স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় নবম সংসদ নির্বাচনের ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালত অবৈধ ঘোষণা করে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়, আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় আরপিও অনুযায়ী দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হলো। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এ বছর নিবন্ধন পুনর্বহাল হয় দলটির। ২০১৭ সালে নিবন্ধিত দলগুলোর কমিটি ও অফিসের খোঁজে মাঠে নামে ইসি। শর্ত পালনে ব্যর্থ দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়; এ ধারবাহিকতায় পিডিপি, ঐক্যবদ্ধ নাগকি আন্দোলন ও জাগপার নিবন্ধন বাদ যায়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), মাহমুদুর রহমানের নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেয়ার পর আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির পর বিএমজেপি ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি নিবন্ধন পেয়েছে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং আরেক নতুন দল বাংলাদেশ জাতীয় লীগ। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ মঙ্গলবার,(৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৪৩টি দল আবেদন করেছিল। এরমধ্যে ২২টি দলের তথ্য মাঠে পর্যালোচনা হয়েছে। এরমধ্যে দুটো দল- এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছ।’
এর ফলে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ দলীয় প্রতীক নিয়ে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে।
আখতার আহমেদ বলেন, এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করেছে। এসব দলের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে এখন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। আপত্তি থাকলে তা শুনানি শেষে নিবন্ধিত দলের নাম চূড়ান্ত করে গেজেট করা হবে এবং দলটিকে প্রতীকসহ নিবন্ধন সনদ দেয়া হবে।
এনসিপির প্রত্যাশিত শাপলা নির্বাচন কমিশনের প্রতীকের তালিকায় না থাকায় ইসি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে, দলটি ওই প্রতীক পাচ্ছে না। এখন এনসিপিকে তালিকা থেকে অন্য কোনো প্রতীক নিতে হবে।
আইনানুযায়ী নিবন্ধন পেতে হলে দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি থাকতে হয়। প্রতিটি কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণও দেখাতে হয়।
ইসি সচিব জানান, আরও একটি দল আদালতের আদেশে নিবন্ধন পাবে। তিনটি দলের বিষয়ে ‘অধিকতর পর্যালোচনা’ করা হবে। ৯টি দলের বিষয়ে ‘অধিকতর তথ্যানুসন্ধান’ হবে। আর নিবন্ধন আবেদন করা সাতটি দল বাদ পড়ছে। বাংলাদেশ নেজামে ইসলামী পার্টি আদালতের আদেশে নিবন্ধন পাবে। ‘অধিকতর পর্যালোচনা’ হবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (শাহজাহান সিরাজ) বিষয়ে। আর আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল মার্কসবাদী, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশের বিষয়ে ‘অধিকতর তথ্যানুসন্ধান’ হবে।
বাদ পড়ছে ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী-সিপিবিএম, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ সলিউশন পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলামী পার্টি।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। নিবন্ধিত না হলে দলীয় পরিচয় নির্বাচন করার সুযোগ নেই। এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এরমধ্যে জামায়াতে ইসলামী আবার নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রাখা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এখন দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫১টি।
নিবন্ধন যাত্রার ১৭ বছর: এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বোধীন ইসি নবম সংসদ নির্বাচনের সময় ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয়। কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন ইসি দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দল নিবন্ধন দেয়। কে এম নুরুল হুদা কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নিবন্ধনযোগ্য কোনো দল পায়নি। তবে আদালতের আদেশে কয়েকটি দল পরে যুক্ত হয়। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। ২০০৮ সালে শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন পেলেও স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় নবম সংসদ নির্বাচনের ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালত অবৈধ ঘোষণা করে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়, আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় আরপিও অনুযায়ী দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হলো। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এ বছর নিবন্ধন পুনর্বহাল হয় দলটির। ২০১৭ সালে নিবন্ধিত দলগুলোর কমিটি ও অফিসের খোঁজে মাঠে নামে ইসি। শর্ত পালনে ব্যর্থ দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়; এ ধারবাহিকতায় পিডিপি, ঐক্যবদ্ধ নাগকি আন্দোলন ও জাগপার নিবন্ধন বাদ যায়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), মাহমুদুর রহমানের নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলনকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসি দায়িত্ব নেয়ার পর আদালতের আদেশে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির পর বিএমজেপি ও বাংলাদেশ লেবার পার্টি নিবন্ধন পেয়েছে।