‘আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সম্ভাবনা নেই’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা তুলে নেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন এই সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গিয়ে ‘জিটিও’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে বলেছেন, দলটির কার্যক্রমের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা সেটা সাময়িক, যে কোনো সময় তুলে নেয়া হতে পারে।
মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তার সরকারের আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যেটা বলেছেন সেটা থিউরিটিক্যাল (তাত্ত্বিক) কথা বলেছেন। আমি যতটুকু বুঝতে পারি থিউরিটিক্যালি যখন একটি দলের কার্যক্রম ব্যান্ড করা হয়। তখন সেটা পারমানেন্ট কি পারমানেন্ট না একটা প্রশ্ন থাকে। বাস্তবিক অর্থে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধটা উইথড্র হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না।’
বুধবার,(০১ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে বরিশাল নগরের নতুনবাজার সংলগ্ন শংকর মঠের দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
গত বছর আগষ্টে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গত ১০ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাবইব্যুনালে এসব সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এদের যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকবে।
একইদিন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ফলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে ‘জিটিও’র প্রশ্ন ছিল- ‘আপনার সমসাময়িক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সতর্ক করে বলেছেন যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা বিগত সরকারের কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তিই হবে। তারা বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করত। অমর্ত্য সেনসহ অন্য সমালোচকদের এমন মন্তব্যে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?’
জবাবে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এটি ভুল সমালোচনা। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। তারা শুধু রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না। এখন তারা নির্বাচন করতে পারছে না, কিন্তু দল হিসেবে তারা বৈধ রয়েছে। আপাতত কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। যে কোনো সময় তা তুলে নেয়া হতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আমাদের যে প্রসিকিউশন টিম আছে, সেই টিমের পক্ষ থেকে সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পর এক ঘণ্টাও ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নেই জানিয়ে সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের দুটা চিন্তা ছিল, নির্বাচনের আগে বিচারের যে অগ্রগতি বা সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি সেটুকু যেন হয়ে যায়। কারণ অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। অনেক স্যাক্রিফাইস এখানে আছে। সেই লক্ষ্যে আমরা মনে করি বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া তো হয়েই গেছে। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচনের আগে কিছু বিচার দেখে যেতে পারবো।’
আইন মন্ত্রণালয়ের ৯-১০টি বড় সংস্কার করা হয়েছে দাবি করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিভিল ও ক্রিমিনাল কোর্টকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হয়েছে। লিগ্যাল এইড সার্ভিসকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। লিগ্যাল এইডের সিআরপিসি, সিপিসি অ্যামেন্ডমেন্ট করেছি। অনলাইন বেলবেন্ডের ব্যবস্থা করেছি। ক্রিমিনাল একটা কোর্ট শুধু বিচারই করবে। বিচারিক পদ সৃজন
এখন আর সরকার করবে না। এটা করবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। বিচার বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হতো, এটা আর জেলা পর্যায়ে হবে না। এটা বিচার প্রশাসন করবে।’
ফেব্রুয়ারির আগে সংস্কারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা।
বুধবার বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকার দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন আইন উপদেষ্টা।
বরিশালে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা পালন হচ্ছে জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেয়ার আগেই বলেছি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরুর কোনো ভেদাভেদ করি না। আমরা মনে করি প্রত্যেক ধর্মের মানুষই বাংলাদেশের নাগরিক। প্রত্যেকের সমান অধিকার। ধর্মপালন ও ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে সমান অধিকার।’
এজন্য সারাদেশে নিরাপদ পরিবেশে পূজা পালন করা হচ্ছে দাবি করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘পূজা পালনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের অপশক্তি ও ষড়যন্ত্র থাকে। এ বিষয়ে আমরা প্রথম থেকে অত্যন্ত সতর্ক ছিলাম।’
‘আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সম্ভাবনা নেই’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা তুলে নেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন এই সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গিয়ে ‘জিটিও’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে বলেছেন, দলটির কার্যক্রমের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা সেটা সাময়িক, যে কোনো সময় তুলে নেয়া হতে পারে।
মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তার সরকারের আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যেটা বলেছেন সেটা থিউরিটিক্যাল (তাত্ত্বিক) কথা বলেছেন। আমি যতটুকু বুঝতে পারি থিউরিটিক্যালি যখন একটি দলের কার্যক্রম ব্যান্ড করা হয়। তখন সেটা পারমানেন্ট কি পারমানেন্ট না একটা প্রশ্ন থাকে। বাস্তবিক অর্থে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধটা উইথড্র হবে এরকম কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না।’
বুধবার,(০১ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে বরিশাল নগরের নতুনবাজার সংলগ্ন শংকর মঠের দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
গত বছর আগষ্টে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গত ১০ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাবইব্যুনালে এসব সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এদের যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ থাকবে।
একইদিন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ফলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে ‘জিটিও’র প্রশ্ন ছিল- ‘আপনার সমসাময়িক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সতর্ক করে বলেছেন যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা বিগত সরকারের কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তিই হবে। তারা বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করত। অমর্ত্য সেনসহ অন্য সমালোচকদের এমন মন্তব্যে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?’
জবাবে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এটি ভুল সমালোচনা। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। তারা শুধু রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না। এখন তারা নির্বাচন করতে পারছে না, কিন্তু দল হিসেবে তারা বৈধ রয়েছে। আপাতত কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। যে কোনো সময় তা তুলে নেয়া হতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আমাদের যে প্রসিকিউশন টিম আছে, সেই টিমের পক্ষ থেকে সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার চাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পর এক ঘণ্টাও ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা নেই জানিয়ে সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের দুটা চিন্তা ছিল, নির্বাচনের আগে বিচারের যে অগ্রগতি বা সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি সেটুকু যেন হয়ে যায়। কারণ অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে। অনেক স্যাক্রিফাইস এখানে আছে। সেই লক্ষ্যে আমরা মনে করি বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া তো হয়েই গেছে। আমরা আশা করছি আগামী নির্বাচনের আগে কিছু বিচার দেখে যেতে পারবো।’
আইন মন্ত্রণালয়ের ৯-১০টি বড় সংস্কার করা হয়েছে দাবি করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘প্রথমবারের মতো সিভিল ও ক্রিমিনাল কোর্টকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা করা হয়েছে। লিগ্যাল এইড সার্ভিসকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। লিগ্যাল এইডের সিআরপিসি, সিপিসি অ্যামেন্ডমেন্ট করেছি। অনলাইন বেলবেন্ডের ব্যবস্থা করেছি। ক্রিমিনাল একটা কোর্ট শুধু বিচারই করবে। বিচারিক পদ সৃজন
এখন আর সরকার করবে না। এটা করবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। বিচার বিভাগের কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হতো, এটা আর জেলা পর্যায়ে হবে না। এটা বিচার প্রশাসন করবে।’
ফেব্রুয়ারির আগে সংস্কারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আইন উপদেষ্টা।
বুধবার বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকার দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন আইন উপদেষ্টা।
বরিশালে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা পালন হচ্ছে জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেয়ার আগেই বলেছি, ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরুর কোনো ভেদাভেদ করি না। আমরা মনে করি প্রত্যেক ধর্মের মানুষই বাংলাদেশের নাগরিক। প্রত্যেকের সমান অধিকার। ধর্মপালন ও ধর্মচর্চার ক্ষেত্রে সমান অধিকার।’
এজন্য সারাদেশে নিরাপদ পরিবেশে পূজা পালন করা হচ্ছে দাবি করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘পূজা পালনের ক্ষেত্রে নানা ধরনের অপশক্তি ও ষড়যন্ত্র থাকে। এ বিষয়ে আমরা প্রথম থেকে অত্যন্ত সতর্ক ছিলাম।’