ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান যে তাদের মায়ানমারে প্রত্যাবাসন, সে কথা আবারও মনে করিয়ে দিয়ে ৭ দফা প্রস্তাব রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘে সম্মেলন
৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন
প্রধান উপদেষ্টা
৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
সমাধান মায়ানমারের ভেতরেই: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এ কথা বলেন তিনি। ইউনূস বলেন, ‘অর্থায়ন কমে আসছে। একমাত্র শান্তিপূর্ণ পথ হচ্ছে তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গণহত্যা শুরুর ৮ বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যাহত রয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেই। আন্তর্জাতিক অর্থায়নেও মারাত্মক ঘাটতি তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মায়ানমারে এবং সমাধানও সেখানেই নিহিত।’
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ এবং দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মায়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘এটাই সংকটের একমাত্র সমাধান। মায়ানমারের সার্বিক সংস্কার প্রক্রিয়া জিম্মি করে রাখা উচিত নয়।’
রোহিঙ্গারা যে বরাবরই নিজেদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চেয়েছে, সে কথা তুলে ধরে ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার তুলনায় প্রত্যাবাসনে অনেক কম সম্পদের প্রয়োজন হবে।
আর রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশও যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেই বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সংকটের শিকার। আমাদের সামাজিক, পরিবেশগত ও আর্থিকভাবে বিপুল চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে। আমাদের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ যেমন- বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বিবেচনায় দেশে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়।’
এ সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ৭ দফা পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব দেন। প্রথমত, রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মায়ানমার ও আরাকান আর্মির ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে। তৃতীয়ত, রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তার বন্দোবস্ত করা এবং তা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। চতুর্থত, রাখাইন সমাজ ও শাসন ব্যবস্থায় রোহিঙ্গাদের স্থায়ী অন্তর্ভুক্তির জন্য আস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে। পঞ্চমত, যৌথ পরিকল্পনায় অর্থদাতাদের পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। ষষ্ঠত, জবাবদিহি ও পুনর্বাসনমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সপ্তমত, মাদকের অর্থনীতি ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমিতে ফেরার জন্য অপেক্ষায় রাখার সামর্থ্য এ বিশ্ব আর রাখে না। আজ আমাদের সংকট সমাধানে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’
রোহিঙ্গাদের জন্য ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রথম উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতি আসে।
শফিকুল আলম এক ফেইসবুক পোস্টে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ৬ কোটি এবং যুক্তরাজ্য ৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সমাধান মায়ানমারের ভেতরেই: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কেবল মায়ানমারের ভেতরেই সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, মায়ানমারের সাহসী পদক্ষেপ ছাড়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার অবসান হবে না। গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এসব কথা বলেন।
ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘এই সংকটের উৎপত্তি মায়ানমারে। আর সমাধানও সেখানেই।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ৮ বছর আগে মায়ানমারের সেনাদের নির্মম সহিংসতায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে যান। আর অনেকে রাখাইন রাজ্যেই বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়ে যান। আমরা উদাসীনতার পথে চলতে পারি না। একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস হতে দিয়ে সমাধানের আশা করা যায় না।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, এখন আরাকান আর্মি রাখাইনের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নিলেও রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি বলেন, ‘তাদের জীবনে প্রতিদিনের বাস্তবতা হলো- গ্রেপ্তার ও আটক হওয়ার ভয়, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় প্রবেশাধিকার সীমিত, চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা, জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ। প্রতিনিয়তই তারা বর্ণবাদ ও আতঙ্কের শিকার।’
বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, দেশটি বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। ২০২৪ সালে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের পর আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করেছে।
বক্তব্যের সমাপনীতে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘মায়ানমারের জনগণের জন্য ন্যায়সংগত, বাস্তব ও ভবিষ্যৎমুখী নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাই। রোহিঙ্গাদের দুর্দশার স্থায়ী সমাধানে আমাদের সামনে এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫
রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান যে তাদের মায়ানমারে প্রত্যাবাসন, সে কথা আবারও মনে করিয়ে দিয়ে ৭ দফা প্রস্তাব রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘে সম্মেলন
৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন
প্রধান উপদেষ্টা
৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
সমাধান মায়ানমারের ভেতরেই: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এ কথা বলেন তিনি। ইউনূস বলেন, ‘অর্থায়ন কমে আসছে। একমাত্র শান্তিপূর্ণ পথ হচ্ছে তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গণহত্যা শুরুর ৮ বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যাহত রয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেই। আন্তর্জাতিক অর্থায়নেও মারাত্মক ঘাটতি তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মায়ানমারে এবং সমাধানও সেখানেই নিহিত।’
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ এবং দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মায়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘এটাই সংকটের একমাত্র সমাধান। মায়ানমারের সার্বিক সংস্কার প্রক্রিয়া জিম্মি করে রাখা উচিত নয়।’
রোহিঙ্গারা যে বরাবরই নিজেদের মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চেয়েছে, সে কথা তুলে ধরে ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার তুলনায় প্রত্যাবাসনে অনেক কম সম্পদের প্রয়োজন হবে।
আর রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশও যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেই বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সংকটের শিকার। আমাদের সামাজিক, পরিবেশগত ও আর্থিকভাবে বিপুল চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে। আমাদের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ যেমন- বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বিবেচনায় দেশে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়া সম্ভব নয়।’
এ সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ৭ দফা পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব দেন। প্রথমত, রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মায়ানমার ও আরাকান আর্মির ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে। তৃতীয়ত, রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তার বন্দোবস্ত করা এবং তা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। চতুর্থত, রাখাইন সমাজ ও শাসন ব্যবস্থায় রোহিঙ্গাদের স্থায়ী অন্তর্ভুক্তির জন্য আস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিতে হবে। পঞ্চমত, যৌথ পরিকল্পনায় অর্থদাতাদের পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। ষষ্ঠত, জবাবদিহি ও পুনর্বাসনমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সপ্তমত, মাদকের অর্থনীতি ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমিতে ফেরার জন্য অপেক্ষায় রাখার সামর্থ্য এ বিশ্ব আর রাখে না। আজ আমাদের সংকট সমাধানে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।’
রোহিঙ্গাদের জন্য ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন করে ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রথম উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে এ প্রতিশ্রুতি আসে।
শফিকুল আলম এক ফেইসবুক পোস্টে জানান, যুক্তরাষ্ট্র ৬ কোটি এবং যুক্তরাজ্য ৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সমাধান মায়ানমারের ভেতরেই: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান কেবল মায়ানমারের ভেতরেই সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, মায়ানমারের সাহসী পদক্ষেপ ছাড়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার অবসান হবে না। গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি এসব কথা বলেন।
ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘এই সংকটের উৎপত্তি মায়ানমারে। আর সমাধানও সেখানেই।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ৮ বছর আগে মায়ানমারের সেনাদের নির্মম সহিংসতায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে যান। আর অনেকে রাখাইন রাজ্যেই বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়ে যান। আমরা উদাসীনতার পথে চলতে পারি না। একটি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস হতে দিয়ে সমাধানের আশা করা যায় না।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, এখন আরাকান আর্মি রাখাইনের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নিলেও রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি বলেন, ‘তাদের জীবনে প্রতিদিনের বাস্তবতা হলো- গ্রেপ্তার ও আটক হওয়ার ভয়, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় প্রবেশাধিকার সীমিত, চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা, জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ। প্রতিনিয়তই তারা বর্ণবাদ ও আতঙ্কের শিকার।’
বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, দেশটি বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। ২০২৪ সালে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের পর আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করেছে।
বক্তব্যের সমাপনীতে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ‘মায়ানমারের জনগণের জন্য ন্যায়সংগত, বাস্তব ও ভবিষ্যৎমুখী নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাই। রোহিঙ্গাদের দুর্দশার স্থায়ী সমাধানে আমাদের সামনে এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।’