alt

প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশশিল্প, সংকটে জয়পুরহাটের মাহালীরা

এম.এ. জলিল রানা, জয়পুরহাট : বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫

জয়পুরহাটে মাহালী সম্প্রদায়ের একজন নারী বাঁশ দিয়ে বুনছে গার্হস্থ্য পণ্য -সংবাদ

কোনও এক গ্রামীণ উঠোন। মাচায় শুকোচ্ছে চিকন বাঁশের শলা। পাশে বসে আছেন একদল নারী-পুরুষ, হাতে কাস্তে আর ছুরি, চোখেমুখে শ্রমের ছাপ। বাঁশের কুলি থেকে খলই, মাছ ধরার চাঁই, কিংবা কৃষিজ সরঞ্জাম এসবই একসময় তাদের হাতের জাদুতে তৈরি হতো। অথচ এখন সেই হাতগুলো অনেকটা অব্যবহৃত, কারণ বাজারে আর চাহিদা নেই। প্লাস্টিকের দাপটে টিকে থাকতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে এই বাঁশশিল্প। সংকটে পড়েছে জয়পুরহাটের মাহালী সম্প্রদায়।

গ্রামবাংলার চিরায়ত জীবনে বাঁশ ছিল অনিবার্য উপাদান। সংসারের প্রতিটি কাজে বাঁশের পণ্য ব্যবহার হতো। মাহালীদের সুদক্ষ হাতের কারুকাজে তৈরি মাদুর, ডালি, দোলনা, ঝুড়ি, মাছ ধরার ফাঁদ, এমনকি ফুলদানি ও ছবির ফ্রেম এসবের চাহিদা একসময় ছিল তুঙ্গে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁশশিল্প ছিল তাদের একমাত্র জীবিকা। কিন্তু আধুনিকতার ঢেউ আর প্লাস্টিক শিল্পের আগ্রাসনে আজ তা কালের গর্ভে বিলীন।

পাঁচবিবি উপজেলার দমদমা গ্রামের দ্বীনেশ চন্দ্রের পরিবার এখনও মরিয়া হয়ে আঁকড়ে ধরে আছে এই পেশা। তার স্ত্রী পার্বতী রানী বলেন, ‘আমরা পরিবারের সবাই মিলে বাঁশের পণ্য বানাই। স্বামী রাস্তার পাশে দোকানে বিক্রি করে, আর আমরা পাঁচজন মিলে তৈরি করি। কিন্তু এখন আর সেই পরিশ্রমের দাম নেই। প্লাস্টিকের ভিড়ে আমাদের জিনিস বিক্রি হয় না।’

একই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন জেলার খঞ্জনপুর গ্রামের কারিগর ধীরেন চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘একটি বাঁশ কিনতে লাগে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। সেই বাঁশ দিয়ে দুইদিনে দুটি চাঙ্গারি বানিয়ে বিক্রি হয় মাত্র ৩০০ টাকায়। এই দিয়ে সংসার চালাবো কিভাবে? বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ছে, অথচ আমাদের জিনিসের দাম কমছে। আমরা চরম বিপদে আছি।’

জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, একসময় সকাল থেকে রাতভর ব্যস্ত থাকা মাহালী পরিবারগুলো এখন প্রায় অলস সময় কাটাচ্ছে। অনেকেই বলেন, আগের দিনে প্রতি পরিবারে বাঁশশিল্পের কাজ থাকতো অন্তত দু’জন-তিনজনের হাতে। এখন চাহিদা না থাকায় সেই ব্যস্ততা নেই। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যেতে চাইলেও দক্ষতা না থাকায় টিকে থাকতে পারছেন না।

এই সম্প্রদায়ের অনেকের অভিযোগ, দেশের নানা প্রান্তে উন্নয়নের জোয়ার বইলেও তাদের জীবনে পরিবর্তন আসেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ‘দেশে কত সরকার আসে যায়, নেতারা বড়লোক হয়, কিন্তু আমাদের খবর কেউ নেয় না। ভোট এলে আমাদের দরকার হয়, সালাম দেয়। ভোট শেষ হলে আর কেউ মনে রাখে না।’

জয়পুরহাট বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ জানান, ‘এলাকার অনেক মানুষ এখনও বাঁশশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা কষ্টে জীবন যাপন করছেন। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা দেয়ার সুযোগ আছে। প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করবো।’

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, বাঁশশিল্প কেবল একটি পেশা নয়, এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। তারা বলছেন, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারি উদ্যোগ, বাজার সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক পৃষ্ঠপোষকতা এখন সময়ের দাবি।

জীবিকার তাগিদে সংগ্রামী মাহালী পরিবারগুলো এখনও আশায় বুক বাঁধে। হয়তো একদিন আবার তাদের নিপুণ হাতে তৈরি বাঁশশিল্প ফিরে আসবে মানুষের ঘরে ঘরে। প্লাস্টিকের ভিড় ঠেলে নতুন করে জায়গা করে নেবে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের কুলি, ডালি, মাদুর কিংবা ছবির ফ্রেম। তাদের চোখে সেই আশাই প্রেরণা চিরায়ত ঐতিহ্য বাঁচুক, বাঁশশিল্প টিকে থাকুক, আর মাহালী সম্প্রদায়ের জীবন ভরে উঠুক নতুন সূর্যের আলোয়।

ছবি

ভাষা সৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক মারা গেছেন

ছবি

আইনি কাঠামোয় পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সুযোগ নেই: বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান

ছবি

নিউইয়র্ক সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

মণ্ডপে দায়িত্বরত পুলিশের ‘গুলি চুরি’: গ্রেপ্তার তিনজন রিমান্ডে

ছবি

পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক, পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে জানালেন ইউএনও

ছবি

ডেঙ্গু: ২০০ ছাড়ালো মৃত্যু

ছবি

বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব

ছবি

গভীর নিম্নচাপ: ভারি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ও ভূমিধসের আভাস, ফেনীতে বন্যার শঙ্কা

ছবি

সাংবাদিকদের সঙ্গে এনসিপি নেতাকর্মীদের দুর্ব্যবহার, আখতার-জারার সংবাদ সম্মেলন বর্জন

ছবি

খাগড়াছড়ির সহিংসতা, হত্যার ঘটনায় তিন মামলা, হাজারের বেশি অজ্ঞাত আসামি

ছবি

দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, এনসিপির সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের, এনসিপির দুঃখ প্রকাশ

ছবি

নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত বহাল

ছবি

নয় দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

‘রাজনৈতিক দুষ্টচক্রের’ দখলে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো: শিক্ষা উপদেষ্টা

ছবি

আমাদের কতদিন থাকতে হবে, তা কেউ নির্ধারণ করে দেয়নি: ইউনূস

ছবি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের রোডম্যাপ চাইলেন ইউনূস

ছবি

‘দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বৈধ’, ইউনূসের বক্তব্যকে ‘তাত্ত্বিক’ বললেন আসিফ

ছবি

সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, তিন দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

ছবি

পূজা যেন শান্তিপূর্ণভাবে না হয়, সেজন্যই খাগড়াছড়ির ঘটনা ঘটানো হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

জুলাই আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞ চলে ৪৩৮ স্থানে: ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তা

ছবি

নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ

ছবি

সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন এর জানাযায় মানুষের ঢল

ছবি

প্রতিবছর দেশে ৩৪ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয়: বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন

ছবি

সংসদ নির্বাচনে দেড়শ’ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইইউ

ছবি

খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরী ধর্ষণ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতের ইন্ধন দেখছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলছেন

প্রণয় ভার্মা টাঙ্গাইলে দুর্গাপূজা পরিদর্শন: ভিসা

ছবি

কারাবন্দী সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মারা গেছেন

ছবি

ইসরায়েলি দখলদারিত্ব বন্ধে জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

ছবি

‘গদি কখন চলে যায়’, তা নিয়ে ‘ক্রাইসিসে’ আছেন তথ্য উপদেষ্টা

ছবি

‘মব সহিংসতা’ পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে, নাগরিক সমাজের অভিমত

ছবি

এনবিআর ভাগ নিয়ে সতর্ক করার পরদিন পরামর্শক কমিটি ‘বিলুপ্ত’

ছবি

ব্রিটিশ কাউন্সিলে ‘স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডসের’ আবেদন শুরু

ছবি

সমুদ্রের নিচে গ্যাস আছে নিশ্চিত, আশপাশের দেশ নিয়ে যাচ্ছে, আমরা আঙুল চুষছি: ইউনূস

ছবি

বিএনপি-জামায়াত প্রশাসনে লোক বসিয়েছে, অভিযোগ তথ্য উপদেষ্টার

ছবি

অমর একুশে বইমেলা ‘স্থগিত’, পরবর্তী তারিখ পরামর্শের ভিত্তিতে নির্ধারণ হবে

ছবি

হজে সরকারি প্যাকেজে এবার কম খরচ, তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা

tab

প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশশিল্প, সংকটে জয়পুরহাটের মাহালীরা

এম.এ. জলিল রানা, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে মাহালী সম্প্রদায়ের একজন নারী বাঁশ দিয়ে বুনছে গার্হস্থ্য পণ্য -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫

কোনও এক গ্রামীণ উঠোন। মাচায় শুকোচ্ছে চিকন বাঁশের শলা। পাশে বসে আছেন একদল নারী-পুরুষ, হাতে কাস্তে আর ছুরি, চোখেমুখে শ্রমের ছাপ। বাঁশের কুলি থেকে খলই, মাছ ধরার চাঁই, কিংবা কৃষিজ সরঞ্জাম এসবই একসময় তাদের হাতের জাদুতে তৈরি হতো। অথচ এখন সেই হাতগুলো অনেকটা অব্যবহৃত, কারণ বাজারে আর চাহিদা নেই। প্লাস্টিকের দাপটে টিকে থাকতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে এই বাঁশশিল্প। সংকটে পড়েছে জয়পুরহাটের মাহালী সম্প্রদায়।

গ্রামবাংলার চিরায়ত জীবনে বাঁশ ছিল অনিবার্য উপাদান। সংসারের প্রতিটি কাজে বাঁশের পণ্য ব্যবহার হতো। মাহালীদের সুদক্ষ হাতের কারুকাজে তৈরি মাদুর, ডালি, দোলনা, ঝুড়ি, মাছ ধরার ফাঁদ, এমনকি ফুলদানি ও ছবির ফ্রেম এসবের চাহিদা একসময় ছিল তুঙ্গে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঁশশিল্প ছিল তাদের একমাত্র জীবিকা। কিন্তু আধুনিকতার ঢেউ আর প্লাস্টিক শিল্পের আগ্রাসনে আজ তা কালের গর্ভে বিলীন।

পাঁচবিবি উপজেলার দমদমা গ্রামের দ্বীনেশ চন্দ্রের পরিবার এখনও মরিয়া হয়ে আঁকড়ে ধরে আছে এই পেশা। তার স্ত্রী পার্বতী রানী বলেন, ‘আমরা পরিবারের সবাই মিলে বাঁশের পণ্য বানাই। স্বামী রাস্তার পাশে দোকানে বিক্রি করে, আর আমরা পাঁচজন মিলে তৈরি করি। কিন্তু এখন আর সেই পরিশ্রমের দাম নেই। প্লাস্টিকের ভিড়ে আমাদের জিনিস বিক্রি হয় না।’

একই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন জেলার খঞ্জনপুর গ্রামের কারিগর ধীরেন চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘একটি বাঁশ কিনতে লাগে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। সেই বাঁশ দিয়ে দুইদিনে দুটি চাঙ্গারি বানিয়ে বিক্রি হয় মাত্র ৩০০ টাকায়। এই দিয়ে সংসার চালাবো কিভাবে? বাজারে সবকিছুর দাম বাড়ছে, অথচ আমাদের জিনিসের দাম কমছে। আমরা চরম বিপদে আছি।’

জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, একসময় সকাল থেকে রাতভর ব্যস্ত থাকা মাহালী পরিবারগুলো এখন প্রায় অলস সময় কাটাচ্ছে। অনেকেই বলেন, আগের দিনে প্রতি পরিবারে বাঁশশিল্পের কাজ থাকতো অন্তত দু’জন-তিনজনের হাতে। এখন চাহিদা না থাকায় সেই ব্যস্ততা নেই। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যেতে চাইলেও দক্ষতা না থাকায় টিকে থাকতে পারছেন না।

এই সম্প্রদায়ের অনেকের অভিযোগ, দেশের নানা প্রান্তে উন্নয়নের জোয়ার বইলেও তাদের জীবনে পরিবর্তন আসেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ‘দেশে কত সরকার আসে যায়, নেতারা বড়লোক হয়, কিন্তু আমাদের খবর কেউ নেয় না। ভোট এলে আমাদের দরকার হয়, সালাম দেয়। ভোট শেষ হলে আর কেউ মনে রাখে না।’

জয়পুরহাট বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ জানান, ‘এলাকার অনেক মানুষ এখনও বাঁশশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা কষ্টে জীবন যাপন করছেন। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা দেয়ার সুযোগ আছে। প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করবো।’

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, বাঁশশিল্প কেবল একটি পেশা নয়, এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতীক। তারা বলছেন, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সরকারি উদ্যোগ, বাজার সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিক পৃষ্ঠপোষকতা এখন সময়ের দাবি।

জীবিকার তাগিদে সংগ্রামী মাহালী পরিবারগুলো এখনও আশায় বুক বাঁধে। হয়তো একদিন আবার তাদের নিপুণ হাতে তৈরি বাঁশশিল্প ফিরে আসবে মানুষের ঘরে ঘরে। প্লাস্টিকের ভিড় ঠেলে নতুন করে জায়গা করে নেবে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের কুলি, ডালি, মাদুর কিংবা ছবির ফ্রেম। তাদের চোখে সেই আশাই প্রেরণা চিরায়ত ঐতিহ্য বাঁচুক, বাঁশশিল্প টিকে থাকুক, আর মাহালী সম্প্রদায়ের জীবন ভরে উঠুক নতুন সূর্যের আলোয়।

back to top