আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার করা মানে ‘হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে এখন সাঁতার কাটো’। রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমির হোসেন এই যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় আজ সোমবার আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
মামলার এক আসামি আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতিমধ্যেই নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী হিসেবে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। এ দুজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ (প্রসিকিউশন) ইতিমধ্যেই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে। আজ থেকে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আমির হোসেন আজ প্রথমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “দু-তিন দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম আরমানের একটি ভিডিও দেখেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যখন মীর কাসেম আলীর বিচার চলছিল, তখন আহমাদ বিন কাসেম আরমানের সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছিল। ভিডিওতে আরমান তাঁর বাবার বিচার চলাকালীন এ আইনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই আইনে সাক্ষ্য আইনের সঠিক ব্যবহার সম্ভব নয় এবং বিচার ব্যাপক সীমাবদ্ধতার মধ্যে হচ্ছে, যা ন্যায়বিচারকে বিঘ্নিত করছে।’ আমি তার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত।”
তিনি আরও বলেন, “এই আইনে মূল যে এভিডেন্স অ্যাক্ট, সেটাকে প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই। সিআরপিসি এই আইনে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন বিচার, যেখানে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে ‘এখন সাঁতার কাটো’, সেটি এ আইন।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তিতর্কের এক পর্যায়ে বলেন, মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বা ফরমাল চার্জে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী চর্চার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, তিনি বলেন, এসব অভিযোগ ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য নয় যতক্ষণ না তা বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। ঢালাওভাবে এসব বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
এতে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করে বলেন, “সংবাদপত্রের প্রতিবেদনও আমলে নেওয়া যেতে পারে। এই আইন আপনিরাই তৈরি করেছেন।”
জবাবে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সবকিছু সত্য হয়ে যায় না। অন্য আইনে পত্রপত্রিকার সংবাদের কোনো মূল্য নেই। শেখ হাসিনা আইন করেছেন বলে এটি ভালো আইন হয়েছে, এমনটি আমি বলছি না। যে–ই আইন করুক না কেন, ভুল মানে ভুলই।”
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে বিচার করা মানে ‘হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে এখন সাঁতার কাটো’। রাষ্ট্রনিযুক্ত আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আমির হোসেন এই যুক্তি উপস্থাপন করেছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় আজ সোমবার আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
মামলার এক আসামি আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতিমধ্যেই নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী হিসেবে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুই আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। এ দুজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ (প্রসিকিউশন) ইতিমধ্যেই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছে। আজ থেকে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আমির হোসেন আজ প্রথমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “দু-তিন দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম আরমানের একটি ভিডিও দেখেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যখন মীর কাসেম আলীর বিচার চলছিল, তখন আহমাদ বিন কাসেম আরমানের সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছিল। ভিডিওতে আরমান তাঁর বাবার বিচার চলাকালীন এ আইনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই আইনে সাক্ষ্য আইনের সঠিক ব্যবহার সম্ভব নয় এবং বিচার ব্যাপক সীমাবদ্ধতার মধ্যে হচ্ছে, যা ন্যায়বিচারকে বিঘ্নিত করছে।’ আমি তার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত।”
তিনি আরও বলেন, “এই আইনে মূল যে এভিডেন্স অ্যাক্ট, সেটাকে প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই। সিআরপিসি এই আইনে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন বিচার, যেখানে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে দিয়ে আসামিকে বলা হবে ‘এখন সাঁতার কাটো’, সেটি এ আইন।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তিতর্কের এক পর্যায়ে বলেন, মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে বা ফরমাল চার্জে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দুর্নীতির সর্বগ্রাসী চর্চার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, তিনি বলেন, এসব অভিযোগ ততক্ষণ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য নয় যতক্ষণ না তা বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। ঢালাওভাবে এসব বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
এতে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করে বলেন, “সংবাদপত্রের প্রতিবেদনও আমলে নেওয়া যেতে পারে। এই আইন আপনিরাই তৈরি করেছেন।”
জবাবে আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সবকিছু সত্য হয়ে যায় না। অন্য আইনে পত্রপত্রিকার সংবাদের কোনো মূল্য নেই। শেখ হাসিনা আইন করেছেন বলে এটি ভালো আইন হয়েছে, এমনটি আমি বলছি না। যে–ই আইন করুক না কেন, ভুল মানে ভুলই।”