ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই এক সঙ্গে গণভোট আয়োজনের সময় দিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই আদেশ জারি করার পর আইন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে। সনদ বাস্তবায়ন আদেশে একই সঙ্গে গণভোটে কী প্রশ্ন থাকছে তাও তুলে ধরা হয়েছে।
দীর্ঘ এক বছরের আলোচনা, সংলাপ ও তর্কবিতর্কের পর রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগগুলো নিয়ে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত হয়, যা স্বাক্ষর হয় গেল ১৭ অক্টোবর। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের কারণে ৩১ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য পরিষদ সরকারের কাছে সুপারিশমালা জমা দেয়।
এর পর জুলাই সনদ থেকে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দেওয়া ও গণভোটের সময় নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দেয়। এ অবস্থায় সরকার দলগুলোকে মতবিরোধ কাটিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেয়। সে সময় সোমবার শেষ হওয়ার পর সরকারের ওপর সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়িত্ব বর্তায়।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সরকারের তরফে সিদ্ধান্ত এল। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-এ ‘জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গণভোট’ বিষয়ে বলা হয়েছে-জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে এই আদেশ এবং জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত অংশ গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।
গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্ন, যে চার বিষয়ে এক সাথে হ্যাঁ/না উত্তর দিতে হবে ব্যালটে সেগুলো হল-
১. গণভোটে নিম্নরূপ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হবে- “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন?"; (হ্যাঁ/ না):
(ক) নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হইবে।
(খ) আগামী জাতীয় সংসদ হইবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ কক্ষ গঠিত হইবে এবং সংবিধান সংশোধনী করিতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হইবে।
(গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল হইতে ডেপুটি স্পিকার ও কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হইয়াছে-সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকিবে।
(ঘ) জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অপরাপর সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হইবে।
ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ব্যালটে প্রত্যেক ভোটার গোপনে ভোট দেবেন। এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এই আদেশ অনুসারে গণভোট হবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি রেখে সরকার ও নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিক প্রচার অভিযান শুরু করেছে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই এক সঙ্গে গণভোট আয়োজনের সময় দিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই আদেশ জারি করার পর আইন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে। সনদ বাস্তবায়ন আদেশে একই সঙ্গে গণভোটে কী প্রশ্ন থাকছে তাও তুলে ধরা হয়েছে।
দীর্ঘ এক বছরের আলোচনা, সংলাপ ও তর্কবিতর্কের পর রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগগুলো নিয়ে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত হয়, যা স্বাক্ষর হয় গেল ১৭ অক্টোবর। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের কারণে ৩১ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য পরিষদ সরকারের কাছে সুপারিশমালা জমা দেয়।
এর পর জুলাই সনদ থেকে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দেওয়া ও গণভোটের সময় নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মধ্যে তীব্র মতবিরোধ দেখা দেয়। এ অবস্থায় সরকার দলগুলোকে মতবিরোধ কাটিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দেয়। সে সময় সোমবার শেষ হওয়ার পর সরকারের ওপর সিদ্ধান্ত দেওয়ার দায়িত্ব বর্তায়।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সরকারের তরফে সিদ্ধান্ত এল। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন।
জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-এ ‘জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গণভোট’ বিষয়ে বলা হয়েছে-জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে এই আদেশ এবং জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত অংশ গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।
গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপনীয় প্রশ্ন, যে চার বিষয়ে এক সাথে হ্যাঁ/না উত্তর দিতে হবে ব্যালটে সেগুলো হল-
১. গণভোটে নিম্নরূপ প্রশ্ন উপস্থাপন করা হবে- “আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন?"; (হ্যাঁ/ না):
(ক) নির্বাচনকালীন তত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ার আলোকে গঠন করা হইবে।
(খ) আগামী জাতীয় সংসদ হইবে দুই কক্ষ বিশিষ্ট। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চ কক্ষ গঠিত হইবে এবং সংবিধান সংশোধনী করিতে হলে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন দরকার হইবে।
(গ) সংসদে নারীর প্রতিনিধি বৃদ্ধি, বিরোধী দল হইতে ডেপুটি স্পিকার ও কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিতকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, মৌলিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে যে ৩০টি প্রস্তাবে জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হইয়াছে-সেগুলো বাস্তবায়নে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলো বাধ্য থাকিবে।
(ঘ) জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত অপরাপর সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হইবে।
ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ব্যালটে প্রত্যেক ভোটার গোপনে ভোট দেবেন। এই আদেশ জারির অব্যবহিত পর অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এই আদেশ অনুসারে গণভোট হবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি রেখে সরকার ও নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিক প্রচার অভিযান শুরু করেছে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে।