নিজের বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, বিচারকার্যের সময় তাকে কিংবা তার দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি।
রায় ঘোষণার পর সোমবার এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এসব প্রতিক্রিয়া জানান বলে জানা গেছে। মামলার দুই আসামি ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতে অবস্থান করায় তাদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা।
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, “এর মাধ্যমে একটি অনির্বাচিত সরকারের উগ্রপন্থি ব্যক্তিদের বেপরোয়া ও হত্যার মানসিকতা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
জুলাই আন্দোলন দমনে ১,৪০০ জনকে হত্যায় উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দেওয়া, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’-এর অভিযোগসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সব অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও তোলেন তিনি। শেখ হাসিনার বক্তব্য, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা পুরোপুরি অস্বীকার করছি। গেল বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় দুই পক্ষের প্রতিটি মৃত্যুতেই আমি শোকাহত ছিলাম। ওই সময় আমি কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক নেতা কোনো আন্দোলনকারীকে হত্যার নির্দেশ দেননি।”
তিনি জানান, “আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ হয়েছে এবং সেখানে আমার পছন্দের কোনো আইনজীবীও ছিলেন না। নামের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দ থাকলেও আইসিটিতে আন্তর্জাতিক বলে কিছু নেই। এ আদালত নিরপেক্ষও নয়।”
বিবৃতিতে তিনি তিনটি নির্দিষ্ট অভিযোগ তোলেন—তার প্রতি সহানুভূতিশীল জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বা আইনজীবীদের হয় অপসারণ করা হয়েছে, নয়তো ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শুধু আওয়ামী লীগের লোকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে; এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ অন্যদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত সহিংসতায় জড়িত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং সমাজকে পেছনে ঠেলে দেওয়া প্রশাসনের অধীনে যে কোটি কোটি বাংলাদেশি দুঃখ–কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের বোকা বানানো যাবে না। তারা দেখতে পাচ্ছেন, তথাকথিত এই ট্রাইব্যুনালের বিচার কখনোই ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে করা হয়নি। এর উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে বলির পাঁঠা বানানো এবং ড. ইউনূসের ব্যর্থতা থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়া।”
শেখ হাসিনার দাবি, “এসবই প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, এনজিও, এমনকি আইএমএফের মত সংস্থার যাচাই–বাছাইও সেটাই দেখাচ্ছে। আমি এটাও বলতে চাই, বাংলাদেশের একজন মানুষও তাকে সমর্থন জানাননি।”
বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় পান না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যথাযথ আদালতে বিচার হতে হবে, যেখানে সব নথিপ্রমাণ নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন ও যাচাই করা যাবে। এ কারণেই অভিযোগসমূহ হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপন করতে বারবার অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি।”
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
নিজের বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, বিচারকার্যের সময় তাকে কিংবা তার দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি।
রায় ঘোষণার পর সোমবার এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এসব প্রতিক্রিয়া জানান বলে জানা গেছে। মামলার দুই আসামি ৫ আগস্টের পর থেকে ভারতে অবস্থান করায় তাদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা।
বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, “এর মাধ্যমে একটি অনির্বাচিত সরকারের উগ্রপন্থি ব্যক্তিদের বেপরোয়া ও হত্যার মানসিকতা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।”
জুলাই আন্দোলন দমনে ১,৪০০ জনকে হত্যায় উসকানি, প্ররোচনা ও নির্দেশ দেওয়া, ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ এবং ‘জয়েন্ট ক্রিমিনাল এন্টারপ্রাইজ’-এর অভিযোগসহ মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে চারটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সব অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও তোলেন তিনি। শেখ হাসিনার বক্তব্য, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা পুরোপুরি অস্বীকার করছি। গেল বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় দুই পক্ষের প্রতিটি মৃত্যুতেই আমি শোকাহত ছিলাম। ওই সময় আমি কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক নেতা কোনো আন্দোলনকারীকে হত্যার নির্দেশ দেননি।”
তিনি জানান, “আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের ন্যায্য সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ হয়েছে এবং সেখানে আমার পছন্দের কোনো আইনজীবীও ছিলেন না। নামের মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দ থাকলেও আইসিটিতে আন্তর্জাতিক বলে কিছু নেই। এ আদালত নিরপেক্ষও নয়।”
বিবৃতিতে তিনি তিনটি নির্দিষ্ট অভিযোগ তোলেন—তার প্রতি সহানুভূতিশীল জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বা আইনজীবীদের হয় অপসারণ করা হয়েছে, নয়তো ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শুধু আওয়ামী লীগের লোকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে; এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ অন্যদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত সহিংসতায় জড়িত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের বিশৃঙ্খল, সহিংস এবং সমাজকে পেছনে ঠেলে দেওয়া প্রশাসনের অধীনে যে কোটি কোটি বাংলাদেশি দুঃখ–কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন, তাদের বোকা বানানো যাবে না। তারা দেখতে পাচ্ছেন, তথাকথিত এই ট্রাইব্যুনালের বিচার কখনোই ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে করা হয়নি। এর উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে বলির পাঁঠা বানানো এবং ড. ইউনূসের ব্যর্থতা থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সরিয়ে নেওয়া।”
শেখ হাসিনার দাবি, “এসবই প্রতিষ্ঠিত সত্য এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, এনজিও, এমনকি আইএমএফের মত সংস্থার যাচাই–বাছাইও সেটাই দেখাচ্ছে। আমি এটাও বলতে চাই, বাংলাদেশের একজন মানুষও তাকে সমর্থন জানাননি।”
বিচারের মুখোমুখি হতে ভয় পান না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যথাযথ আদালতে বিচার হতে হবে, যেখানে সব নথিপ্রমাণ নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন ও যাচাই করা যাবে। এ কারণেই অভিযোগসমূহ হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে উপস্থাপন করতে বারবার অন্তর্বর্তী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছি।”