জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দিল্লিতে অবস্থান করা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ঘোষিত রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার। তবে রায়কে কেন্দ্র করে কোনো সরাসরি মন্তব্য না করে, উভয় দেশের সম্পর্ক ও জনগণের স্বার্থকেই গুরুত্ব দিয়েছে তারা।
সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জনগণের ‘সর্বোচ্চ স্বার্থ’ বিবেচনায় সব অংশীজনের সঙ্গে ‘গঠনমূলক’ আলোচনায় তারা সম্পৃক্ত থাকবে। বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়ের বিষয় জেনেছে ভারত। নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে দেশটির শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতার বিষয় রয়েছে। সেদিক বিবেচনায় আমরা সব অংশীজনের সঙ্গে সর্বদা গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত হব।”
সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করে। এদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে পলাতক দেখিয়েই জুলাই গণহত্যা মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করেছে ট্রাইব্যুনাল। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর দুদেশের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে দিল্লিতে চিঠি পাঠায় ঢাকা। তবে রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত চিঠির কোনো জবাব দেয়নি ভারত।
রায় ঘোষণার পর ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবারও প্রত্যর্পণ চুক্তির ‘বাধ্যবাধকতার’ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাসিনা ও কামালকে ফেরত পাঠাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানায়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার সামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে।”
রায় ঘোষণার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আবারও দিল্লিতে চিঠি পাঠাবে সরকার।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই আন্দোলনে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দিল্লিতে অবস্থান করা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ঘোষিত রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার। তবে রায়কে কেন্দ্র করে কোনো সরাসরি মন্তব্য না করে, উভয় দেশের সম্পর্ক ও জনগণের স্বার্থকেই গুরুত্ব দিয়েছে তারা।
সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জনগণের ‘সর্বোচ্চ স্বার্থ’ বিবেচনায় সব অংশীজনের সঙ্গে ‘গঠনমূলক’ আলোচনায় তারা সম্পৃক্ত থাকবে। বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়ের বিষয় জেনেছে ভারত। নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে দেশটির শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতার বিষয় রয়েছে। সেদিক বিবেচনায় আমরা সব অংশীজনের সঙ্গে সর্বদা গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত হব।”
সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করে। এদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে পলাতক দেখিয়েই জুলাই গণহত্যা মামলার বিচারকাজ সম্পন্ন করেছে ট্রাইব্যুনাল। ২০২৪ সালের অক্টোবরে তার বিচারের উদ্যোগ নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এরপর দুদেশের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে দিল্লিতে চিঠি পাঠায় ঢাকা। তবে রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত চিঠির কোনো জবাব দেয়নি ভারত।
রায় ঘোষণার পর ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবারও প্রত্যর্পণ চুক্তির ‘বাধ্যবাধকতার’ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাসিনা ও কামালকে ফেরত পাঠাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানায়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার সামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে এটি ভারতের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্বও বটে।”
রায় ঘোষণার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আবারও দিল্লিতে চিঠি পাঠাবে সরকার।