মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে আবারও ভারত সরকারকে চিঠি পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার চিঠিটি পাঠানো হয় বলে রোববার জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক চিঠি পাঠানো হয়েছে নাকি পাঠানো হবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পরশু দিন দেওয়া হয়েছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত সোমবার শেখ হাসিনা ও আরও দুই আসামির বিরুদ্ধে রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়কার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মৃত্যুদণ্ড এবং রাজসাক্ষী হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায়ের পর জানা যায়, শেখ হাসিনা ও কামাল ৫ অগাস্টের পর থেকে ভারতে অবস্থান করছেন। রায় ঘোষণার দিনই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে ভারত সরকারকে তাদের ফেরত দেওয়ার আহ্বান জানায়। একইদিন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, ভারতের কাছে ফের চিঠি পাঠানো হবে। রায়ের তিন দিন পরও তিনি একই পরিকল্পনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইন উপদেষ্টা বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল— ওনাদের প্রত্যর্পণের জন্য আমরা চিঠি দিচ্ছি। পাশাপাশি যেহেতু ওনারা দোষী সাব্যস্ত ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, তাই ভারত এখন তাদের ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি দায়িত্ব বহন করে।”

তার ওই বক্তব্যের পরদিনই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

এর আগে গত ডিসেম্বরে ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরুর সময়ও শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠি পাঠিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। বিচার সম্পন্ন হয়ে রায় ঘোষণা হওয়ার পরও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পূর্বের চিঠির কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

গত মাসে ঢাকার পাঠানো চিঠি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, বিষয়টি দিল্লি আইনি দিক বিবেচনা করে পরীক্ষা করে দেখছে।