পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে অনেক বড় ধরনের সংস্কার করেছে, যা নতুন নির্বাচিত সরকারের জন্য ‘হজম করা’ কিছুটা কঠিন হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, অন্তর্বর্তী সরকার অনেক বেশি সংস্কার করে ফেলেছে। অনেক উচ্চাভিলাষী সংস্কার করেছে। নির্বাচিত সরকারের পক্ষে এত সংস্কার হজম করা একটু কঠিন হতে পারে। বেশির ভাগ সংস্কার কিংবা সংস্কারের নির্যাস গ্রহণ করবে বলে আশা করি।’

আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমরা অনেক অধ্যাদেশ রেখে যাচ্ছি। যেমন বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার একটা অধ্যাদেশ হলো। তাদের হাতে বেশি স্বাধীনতা দিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, তা নতুন সরকার এসে নিশ্চয়ই আবার দেখবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অস্বস্তিকর মনে হতে পারে।’

তিনি উল্লেখ করেন, বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করার অর্থ হলো আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে অনেক ক্ষমতা আর থাকবে না, কারণ বিচার বিভাগ এখন স্বাধীনভাবে কাজ করবে। এটি বড় ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের একটি উদাহরণ বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এসময় তিনি বিভিন্ন খাতের সংস্কার কমিটি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), ক্রয় নীতিমালাসহ বিভিন্ন খাতে চলমান সংস্কারের দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী জাতীয় সংসদ এসব অধ্যাদেশ পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করবে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, প্রকল্প পরিচালকদের দীর্ঘদিনের সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। ‘মুশকিল হলো যে এখন কেউ প্রকল্প পরিচালক হতে চাচ্ছেন না। আর ঠিকাদারেরাও এখন বেশি উৎসাহী হচ্ছে না।’ তিনি যোগ করেন, ‘যত দূর শুনেছি, দুর্নীতি খুব কমেনি বা চাঁদাবাজি...এসবও শুনি।’

আজকের একনেক সভায় মোট ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৯ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৬১০ কোটি টাকা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৭৯ কোটি টাকা।

প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় ১৩টি নতুন প্রকল্প এবং ৫টি সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন পায়।