দীর্ঘ সময় বিমান ভ্রমণের জন্য শারীরিক সক্ষমতা না থাকায় খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। শনিবার,(০৬ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই বিদেশ নেয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ড যথোপযুক্ত মনে করবে, তখনই উনাকে বিদেশ নেয়া হবে। কারণ মনে রাখতে হবে, ১২-১৪ ঘণ্টা যখন বিমানে ফ্লাই করবেন, তখন যে অতি উচ্চতায় মানুষের শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, সেটির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। এ জিনিসটি খেয়াল রেখে আপনারা দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না, দয়া করে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।’
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গতকাল শুক্রবার ভোরের দিকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে’ সেই বিমান আসতে বিলম্ব হওয়ার কথা জানায় বিএনপি।
এরপর গতকাল শুক্রবার বলা হয়, কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আর আসছে না। তার বদলে কাতার সরকারের পক্ষ থেকে জার্মানি থেকে ভাড়া করে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর হবে। সেই অ্যাম্বুলেন্স শনিবার (শনিবার) বিকেল নাগাদ ঢাকায় আসতে পারে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শনিবারের ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ওই সময় (গতকাল শুক্রবার) এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কারিগরি ত্রুটির কারণে আসতে পারেনি, এটাও যেমন সত্য কথা, ওই সময়ে জরুরিভাবে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, এ মুহূর্তে উনার ফ্লাই করা সঠিক হবে না। সেজন্য উনাকে বিদেশ নেয়ার যে বিষয়টি, সেটি কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হয়ত শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে উনাকে কখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যাবে অথবা নিয়ে যাওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। কিন্তু প্রস্তত থাকলেও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিরাপত্তা প্রাধান্য পাচ্ছে। আমাদের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে আসা চিকিৎসকরা উনার শারীরিক অবস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের সব মানুষ উনার সুস্থতা চায়, চিকিৎসকরা চায়, দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, সব মতাদর্শের মানুষই চায়। যেহেতু উনার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, সেজন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমান সাহেব চিকিৎসকদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দলও সে অনুযায়ী অধিকার দিচ্ছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশ নিতে কাতার সরকার এবং দেশে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতা করছে বলে জানান ডা. জাহিদ। তিনি বলেন, ‘উনার শারীরিক সুস্থতা এবং চিকিৎসা মেডিকেল বোর্ডের যখন পরামর্শ মিলবে, তখনই ইনশাআল্লাহ উনাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘উনার চিকিৎসার ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক গুজব শোনা যায়। আমি সবাইকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব, দয়া করে দেশনেত্রীর প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ, দয়া করে কেউ গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।’
তিনি বলেন. ‘শুধু আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করেন। এর চেয়ে প্রতিকূল অবস্থা থেকেও আল্লাহ উনাকে সুস্থ করেছেন আপনাদের সবার দোয়ায়। আমরাও মেডিকেল বোর্ড অত্যন্ত আশাবাদী যে, এবারও উনার যে শারীরিক জটিলতা, এটা থেকে আপনাদের দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হবেন।’
‘দুঃখপ্রকাশ’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অনেক রোগী এবং তাদের আত্মীয়স্বজন আমাদের কারণে হয়তো নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন, সেজন্য আমরা আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাদের সহযোগিতা চাই এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া উনার চিকিৎসা কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখা কষ্ট হবে।’
অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন। এই মেডিকেল বোর্ডে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও সদস্য হিসেবে রয়েছেন। তিনি লন্ডন থেকে গতকাল শুক্রবার ঢাকায় নেমেই শাশুড়িকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
দীর্ঘ সময় বিমান ভ্রমণের জন্য শারীরিক সক্ষমতা না থাকায় খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড। শনিবার,(০৬ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই বিদেশ নেয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ড যথোপযুক্ত মনে করবে, তখনই উনাকে বিদেশ নেয়া হবে। কারণ মনে রাখতে হবে, ১২-১৪ ঘণ্টা যখন বিমানে ফ্লাই করবেন, তখন যে অতি উচ্চতায় মানুষের শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, সেটির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। এ জিনিসটি খেয়াল রেখে আপনারা দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না, দয়া করে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।’
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে গতকাল শুক্রবার ভোরের দিকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে’ সেই বিমান আসতে বিলম্ব হওয়ার কথা জানায় বিএনপি।
এরপর গতকাল শুক্রবার বলা হয়, কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আর আসছে না। তার বদলে কাতার সরকারের পক্ষ থেকে জার্মানি থেকে ভাড়া করে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর হবে। সেই অ্যাম্বুলেন্স শনিবার (শনিবার) বিকেল নাগাদ ঢাকায় আসতে পারে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শনিবারের ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ওই সময় (গতকাল শুক্রবার) এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কারিগরি ত্রুটির কারণে আসতে পারেনি, এটাও যেমন সত্য কথা, ওই সময়ে জরুরিভাবে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, এ মুহূর্তে উনার ফ্লাই করা সঠিক হবে না। সেজন্য উনাকে বিদেশ নেয়ার যে বিষয়টি, সেটি কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হয়ত শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে উনাকে কখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া যাবে অথবা নিয়ে যাওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। কিন্তু প্রস্তত থাকলেও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিরাপত্তা প্রাধান্য পাচ্ছে। আমাদের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এবং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে আসা চিকিৎসকরা উনার শারীরিক অবস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের সব মানুষ উনার সুস্থতা চায়, চিকিৎসকরা চায়, দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, সব মতাদর্শের মানুষই চায়। যেহেতু উনার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, সেজন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমান সাহেব চিকিৎসকদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দলও সে অনুযায়ী অধিকার দিচ্ছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশ নিতে কাতার সরকার এবং দেশে অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতা করছে বলে জানান ডা. জাহিদ। তিনি বলেন, ‘উনার শারীরিক সুস্থতা এবং চিকিৎসা মেডিকেল বোর্ডের যখন পরামর্শ মিলবে, তখনই ইনশাআল্লাহ উনাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘উনার চিকিৎসার ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক গুজব শোনা যায়। আমি সবাইকে বিনীতভাবে অনুরোধ করব, দয়া করে দেশনেত্রীর প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ, দয়া করে কেউ গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।’
তিনি বলেন. ‘শুধু আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করেন। এর চেয়ে প্রতিকূল অবস্থা থেকেও আল্লাহ উনাকে সুস্থ করেছেন আপনাদের সবার দোয়ায়। আমরাও মেডিকেল বোর্ড অত্যন্ত আশাবাদী যে, এবারও উনার যে শারীরিক জটিলতা, এটা থেকে আপনাদের দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হবেন।’
‘দুঃখপ্রকাশ’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অনেক রোগী এবং তাদের আত্মীয়স্বজন আমাদের কারণে হয়তো নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন, সেজন্য আমরা আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাদের সহযোগিতা চাই এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া উনার চিকিৎসা কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখা কষ্ট হবে।’
অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন। এই মেডিকেল বোর্ডে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও সদস্য হিসেবে রয়েছেন। তিনি লন্ডন থেকে গতকাল শুক্রবার ঢাকায় নেমেই শাশুড়িকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।