বিচার বিভাগ গত দেড় বছরে ‘নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগে’ প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রণয়নের মাধ্যমে অনেক দিনের ‘দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা’ দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে।
এর ফলে বিচার বিভাগ এখন নিজস্বভাবে পদসৃজন, বাজেট বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচার সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ধারা হিসেবে এগিয়ে নেয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে জানান প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি শনিবার,(০৬ ডিসেম্বর ২০২৫) চট্টগ্রামে একটি অভিজাত হোটেলে ‘অপারেশনালাইজিং কমার্শিয়াল কোর্ট’ শীর্ষক এ সেমিনারে একথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিটি)-এ সেমিনার আয়োজন করে বলে সুপ্রিম কোর্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বরে তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা সুদৃঢ় করার একটি দৃঢ় অঙ্গীকার হিসেবে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে।
গত দেড় বছরে ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতার’ ভিত্তিতে বিচার ব্যবস্থায় যে মৌলিক রূপান্তর সাধিত হয়েছে তা দেশের বিচারিক ইতিহাসে এক ‘মাইলফলক’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ও আধুনিক বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি ডেডিকেটেড বা বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার আহ্বান করে এসেছিল, যা শিগগিরই বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের একটি গবেষক দল বাণিজ্যিক আদালতসংক্রান্ত আইনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করে, যা পরবর্তীতে সারাদেশব্যাপী রোডশো, বিডার সঙ্গে নিবিড় পরামর্শ, ব্যবসায়িক আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাণিজ্যিক অংশীজনদের মতামতের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হয়।’
এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নও গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ের আরও পরীক্ষণ ও পরিমার্জনের পর খসড়াটি এখন চূড়ান্ত আইনগত রূপ পেয়েছে এবং গত ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।’
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘খসড়া আইনটিতে বাণিজ্যিক বিরোধের সুস্পষ্ট সংজ্ঞা, পর্যাপ্ত সংখ্যক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিধান, হাইকোর্ট বিভাগে পৃথক আপিল বেঞ্চ, বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা, সীমিত মুলতবি, সারসংক্ষেপ বিচার, মামলার পরিসংখ্যানের স্বচ্ছ প্রকাশ এবং বিচারক-আইনজীবীদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মতো আধুনিক বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে সুইডেন অ্যাম্বাসির হেড অব পলিটিকস, ট্রেড অ্যান্ড কমিউনিকেশন অলি লুন্ডিন, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিন্টন পুকি, কানাডার রাষ্ট্রদূত অজিত সিং, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস এবং ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
বিচার বিভাগ গত দেড় বছরে ‘নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগে’ প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রণয়নের মাধ্যমে অনেক দিনের ‘দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা’ দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে।
এর ফলে বিচার বিভাগ এখন নিজস্বভাবে পদসৃজন, বাজেট বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচার সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ধারা হিসেবে এগিয়ে নেয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে জানান প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি শনিবার,(০৬ ডিসেম্বর ২০২৫) চট্টগ্রামে একটি অভিজাত হোটেলে ‘অপারেশনালাইজিং কমার্শিয়াল কোর্ট’ শীর্ষক এ সেমিনারে একথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিটি)-এ সেমিনার আয়োজন করে বলে সুপ্রিম কোর্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বরে তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা এবং বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা সুদৃঢ় করার একটি দৃঢ় অঙ্গীকার হিসেবে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে।
গত দেড় বছরে ‘সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতার’ ভিত্তিতে বিচার ব্যবস্থায় যে মৌলিক রূপান্তর সাধিত হয়েছে তা দেশের বিচারিক ইতিহাসে এক ‘মাইলফলক’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ও আধুনিক বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি ডেডিকেটেড বা বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার আহ্বান করে এসেছিল, যা শিগগিরই বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের একটি গবেষক দল বাণিজ্যিক আদালতসংক্রান্ত আইনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করে, যা পরবর্তীতে সারাদেশব্যাপী রোডশো, বিডার সঙ্গে নিবিড় পরামর্শ, ব্যবসায়িক আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাণিজ্যিক অংশীজনদের মতামতের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হয়।’
এক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নও গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয়ের আরও পরীক্ষণ ও পরিমার্জনের পর খসড়াটি এখন চূড়ান্ত আইনগত রূপ পেয়েছে এবং গত ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।’
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘খসড়া আইনটিতে বাণিজ্যিক বিরোধের সুস্পষ্ট সংজ্ঞা, পর্যাপ্ত সংখ্যক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিধান, হাইকোর্ট বিভাগে পৃথক আপিল বেঞ্চ, বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা, সীমিত মুলতবি, সারসংক্ষেপ বিচার, মামলার পরিসংখ্যানের স্বচ্ছ প্রকাশ এবং বিচারক-আইনজীবীদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মতো আধুনিক বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে সুইডেন অ্যাম্বাসির হেড অব পলিটিকস, ট্রেড অ্যান্ড কমিউনিকেশন অলি লুন্ডিন, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিন্টন পুকি, কানাডার রাষ্ট্রদূত অজিত সিং, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস এবং ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।