রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। তবে তাকে দেয়া চিকিৎসা তিনি গ্রহণ করতে পারছেন বলে জানা গেছে। তবে বিমানযাত্রার ধকল সামলানোর অবস্থায় নেই, তাই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত থাকলেও আপাতত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
জানা যায়, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার বিষয়ে পরিবার, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এবং এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের মধ্যে আলোচনা চলছে। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। এমন শারীরিক অবস্থা বিদেশে নেয়ার উপযোগী নয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘ভালো-মন্দ মিলিয়ে ম্যাডাম আগের মতই আছেন।’
নাম প্রকাশে অনিচচ্ছুক বিএনপির একজন চিকিৎসক বলেন, ‘গত কয়েকদিন ম্যাডামের স্বাস্থ্যের অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে তিনি মেডিসিন গ্রহণ করতে পারছেন। এটাকে পরোক্ষভাবে উন্নতিও বলা যেতে পারে। চিকিৎসকরা আশাবাদী।’ চিকিৎসকদের আশা, নতুন করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি না হলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমান লন্ডন থেকে ম্যাডামের চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিতেন। এখন তিনি দেশে এসে হাসপাতালে গিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সশরীরে নিবিড়ভাবে কাছ থেকে ম্যাডামের চিকিৎসা দেখভাল করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতীতের দুঃসময়ে অনেক বাধা সত্ত্বেও মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা ম্যাডামের চিকিৎসা করেছিলেন, তারাই এখনও দিনরাত পরিশ্রম করে ওনার চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। কোনো গুজবে কান না দিয়ে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।’
দলীয় সূত্র বলছে, হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যার কারণে গত ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার শরীরে আরও কিছু জটিলতা দেখা দেয়। বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতায় সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বলে চিকিৎসকরা বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন। এসব কারণে বিদেশে স্থানান্তরের মতো শারীরিক স্থিতিশীলতা এখনও অর্জিত হয়নি।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এলে তিনি যেতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নে মেডিক্যাল বোর্ড জানায়, যুক্তরাজ্য, চীন এবং বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সম্মিলিতভাবে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। শারীরিক অবস্থা বিদেশে নেয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছালে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তার চিকিৎসা পরিচালনা করছে।
গত শুক্রবার খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কপি সম্পন্ন হয়। মেডিক্যাল বোর্ড জানায়, তার পাকস্থলীর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।