রাজধানীর শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও জনতা পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব শওকত মাহমুদকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা সোমবার, (০৮ ডিসেম্বর ২০২৫) এ আদেশ দেন। তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার যে আবেদন করা হয়েছে, সে বিষয়ে আগামী বৃহস্পতিবার শুনানি করবে আদালত।
সরকার ‘উৎখাতের ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগে যে মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেই মামলায় শওকত মাহমুদকে গতকাল রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সোমবার, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক আখতার মোর্শেদ তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে ডিবি পুলিশ একটি মাইক্রোবাসে করে শওকত মাহমুদকে আদালতে নিয়ে আসে। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী জানান, মামলার মূলনথি না থাকায় রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হবে। চারটি কারণ দেখিয়ে শওকত মাহমুদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন আখতার মোর্শেদ।
আবেদনে বলা হয়, শওকত মাহমুদসহ আরও অজ্ঞাত আসামিরা এনায়েত করিম চৌধুরীর সঙ্গে যোগসাজসে বিভিন্ন সময়ে দেশের অখ-তা, সংহতি, জন-নিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে এবং উচ্চ পদস্থ লোকজন ও ব্যবসায়ী মহলের সঙ্গে গোপনে সভা-সমাবেশ, পরামর্শ করেছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, অন্যান্য আসামির সঙ্গে যোগসাজস করে শওকত মাহমুদ একটি প্রভাবশালী রাষ্ট্রের পক্ষে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চান। এজন্য তিনি কোন কোন দল বা সংগঠনের সঙ্গে গোপনে ‘সলাপরামর্শ করছেন’ সেসব তথ্য উদ্ঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী। তিনি ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান ও ২০০৪ সালে মার্কিন পাসপোর্ট পান। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন।
মামলায় বলা হয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর (গত) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিন্টো রোড এলাকায় প্রাডো গাড়িতে করে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ঘুরতে থাকেন।
তাকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তার গাড়ি থামায়। কেন এখানে ঘোরাঘুরি করছেন, জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এজন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় এবং তার কাছে থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ মামলা করা হয়। এরপর মামলায় জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশীদসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।