সচিবালয়ে কর্মরত সব কর্মচারীর জন্য ২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। আন্দোলনকারীরা দুপুর ২টার পর থেকে উপদেষ্টার দরজার সামনে অবস্থান গ্রহণ করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবরুদ্ধ থাকাকালীন বিক্ষোভকারীরা উপদেষ্টার দরজার সামনে হ্যান্ড মাইক নিয়ে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন তারা।
২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবি,আদায় না হলে আবার আন্দোলনের হুমকি
এত কম সময়ে ঘোষণা করা সম্ভব হবে না: উপদেষ্টা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং উপদেষ্টাকে মুক্ত করতে রাত ৮টার কিছুক্ষণ আগে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করে। এ সময় আন্দোলনকারীরা বাঁশি বাজিয়ে পুলিশকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয় এবং স্লোগান চলতে থাকে। তীব্র উত্তেজনার মধ্যে রাত ৮টা ১২ মিনিটে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যদিয়ে সচিবালয় থেকে বের করে আনা হয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ‘আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশ না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবেন।’
তবে এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘পে-স্কেল ঘোষণা করা সহজ কাজ নয়, অনেক বিষয় জড়িত। কর্মচারীদের আলটিমেটামের মধ্যে এত কম সময়ে ঘোষণা করা সম্ভব হবে না। আমরা কাজ করছি।’
সচিবালয়ে কর্মরত সব কর্মচারীর জন্য ২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। গত জুলাইয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের সুযোগ-সুবিধা পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত পে-কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেয়ার সময় বেঁধে দেয়া হয়। সে হিসেবে কমিশনের হাতে সময় রয়েছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
কর্মচারীদের দাবি, ‘উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিবরা রাতে যতক্ষণ অফিসে থাকেন, ততক্ষণ তাদেরও অফিস করতে হয়। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন কাঠামোর বাইরে নানা ধরনের ভাতা পেলেও সচিবালয়ের কর্মচারীদের তা দেয়া হয় না।’
আন্দোলনকারীদের একজন জানান, দীর্ঘদিন থেকেই তাদের ক্ষোভ রয়েছে। রেশনের দাবিতেও তারা অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করেছিলেন। তখন তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, রেশনের বিবেচনা করবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর ঘোষণা দিয়ে তা-ও কার্যকর করেনি সরকার। নতুন বেতন কমিশনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অর্থ উপদেষ্টা এরই মধ্যে কয়েকবার বলেছেন, ‘বেতন কমিশন বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার।’
এর আগে গত ২২ জুন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতেও অর্থ বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন কর্মচারীরা।