image

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
কূটনৈতিক বার্তা পরিবেশক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনতে বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। তবে তার প্রত্যর্পণ শেষ পর্যন্ত নয়াদিল্লির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।

বুধবার,(১০ ডিসেম্বর ২০২৫) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ঢাকায় ফেরত পাঠাতে আমরা ভারতকে রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাব।’

সম্ভাব্য তৃতীয় দেশে শেখ হাসিনার পুনর্বাসন সংক্রান্ত খবর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে তিনি এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাননি। এ ধরনের খবর কেবল গণমাধ্যমে দেখেছেন।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। পরে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য ভারতকে প্রথমবারের মতো চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় ৪০টি সুপারিশ দিয়েছিল। সেখানে র‌্যাব-ডিজিএফআই বিলুপ্ত করার কথা বলা হয়েছিল। সেই সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকার আমলে নেবে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডিজিএফআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে আছে। এটা তারা বললেই তো হবে না। ৪০টি সুপারিশ দিয়েছে তারা। এর মধ্যে যেগুলো নির্বাচিত সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হবে, সেগুলো করবে তারা। তিনি বলেন, সবই যে করা যাবে এমন কোনো কথা নেই।

র‌্যাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের কাজের বিপুল পরিবর্তন হয়েছে। র‌্যাব তো প্রাথমিকভাবে অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটা প্রতিষ্ঠান ছিল, সেটাকে অনেক প্রতিষ্ঠানের মতোই গত ১৫ বছর ধ্বংস করা হয়েছে। যে কাজ তাদের দিয়ে করানো হয়েছে এটা তো তাদের কাজ না। এখন আমরা চাই, তারা যদি কাজ করে দেশের স্বার্থে তাহলে তো আমার প্রতিষ্ঠান নষ্ট করার প্রয়োজন নেই।

নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসার সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসলে আমার তো মনে হয় না এ ধরনের কোনো সম্ভাবনা আছে। কারণ আমি দেখতে পাচ্ছি না কোনো অভিযোগ আসছে।

সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটার ব্যাপারে আমার অবস্থানটা আপনারা খুব ভালো করেই জানেন। আমার এ ব্যাপারে নতুন করে কিছু বলার নেই।

তৌহিদ হোসেন জানান, ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান যে নতুন ব্লক তৈরির কথা বলছে সেখানে বাংলাদেশ চাইলে যুক্ত হতে পারে।

তিনি বলেন, ভারতকে বাদ দিয়ে নেপাল বা ভুটানের পক্ষে পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রুপিং করা সম্ভব নয়। আমাদের কথা বাদ দিলাম। আমাদের পক্ষে সম্ভব। কিন্তু নেপাল বা ভুটানের পক্ষে সম্ভব না। তিনি (পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার) একটি কথা বলেছেন, কোনো এককালে হয়তো এটার অগ্রগতি হতেও পারে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগের প্রভাব বৈশ্বিক

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বুধবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘ন্যাভিগেটিং দ্য নিউ ল্যান্ডস্কেপ অব গ্লোবাল হেল্থ: স্ট্র্যাটেজিস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগ হলে তা বৈশ্বিকভাবে প্রভাব রাখতে পারবে। বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প এবং অন্যান্য খাতের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ কীভাবে অবদান রাখছে, গবেষণা করলে তার আরও উদাহরণ বেরিয়ে আসবে বলে আমার বিশ্বাস। ‘সে কারণে এটা বলা যৌক্তিক যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিনিয়োগের রয়েছে বৈশ্বিক প্রভাব। সেটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, ওষুধশিল্প, গবেষণা ও উন্নয়ন কিংবা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হোক, আমাদের প্রচেষ্টার আন্তঃরাষ্ট্রীয় তাৎপর্য রয়েছে।’

‘জাতীয়’ : আরও খবর

» পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ

সম্প্রতি