নিজের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের বলেছেন উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। একই সঙ্গে কূটনৈতিক পাসপোর্টও তিনি ফেরত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বুধবার,(১০ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকেলে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন আসিফ মাহমুদ। সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পদত্যাগপত্র দেন তিনি, যা প্রধান উপদেষ্টা গ্রহণ করেন বলে জানায় তার প্রেস উইং। প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর থেকে এই পদত্যাগ কার্যকর হবে।
আজ সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সম মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের আয় ও সম্পদ বিবরণী জমা দিতে গত বছর অক্টোবরে একটি নীতিমালা জারি করে সরকার। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এবং সম মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা, ২০২৪’-এ বলা হয়, উপদেষ্টাদের স্ত্রী বা স্বামীর পৃথক আয় থাকলে তার বিবরণীও জমা দিতে হবে।
এ বিষয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা আসিফ মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বুধবার (গতকাল) তিনি সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রায় আধা ঘণ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে তার সময়ে নেয়া বিভিন্ন উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকার সময়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রথম আলোর প্রথম পাতায় আমার এলাকার একটি প্রকল্পের বিষয়ে প্রতিবেদন করেছে। আমরা জানি না তারা কিসের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করেছে। প্রকল্পটি পাস হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতিবেদন করা কতটা ঠিক হয়েছে। এ প্রকল্প একনেকে পাস হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে আর একনেক সভা হবে না। তাই প্রকল্পটি আর পাস হবে না।’
নিজের সাবেক এপিএস (সহকারী একান্ত সচিব) মোয়াজ্জেম হোসেনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমি দুদককে অনুরোধ করে জানিয়েছি এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য। যখন এ বিষয়ে অভিযোগ আসে, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, আমি কাউকে কিছু করার সুযোগ দিইনি। সে কারণে দুদককে অধিকতর তদন্তের জন্য অনুরোধ করি। এখন সেটি দুদকের এখতিয়ার। তারা হালনাগাদ তথ্য জানাতে পারবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক সংবাদমাধ্যম বাক-?স্বাধীনতার অপপ্রয়োগ করেছে। বাক-স্বাধীনতা থাকবে। তবে এর প্রকৃত ব্যবহার সবাই নিশ্চিত করবে।’ আসিফ মাহমুদ জানান, তিনি জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন, সংবাদ সম্মেলনে সেটি পরিষ্কার করেননি। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে পরে জানানো হবে।