image

ইসির সম্মতি ছাড়া ভোট পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বদলি নয়: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ভোটের কাজে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তার বদলিতে নির্বাচন কমিশনের সম্মতি নেয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখকে আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তাতে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের পরবর্তী ১৫ দিন পযন্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-এর বিধান তুলে ধরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।

১২ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে গণভোটের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে ১২-২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। তার তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৮ দিন সময় দেয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ২০ দিন সময় রয়েছে।

এদিকে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এবার দায়িত্ব দিয়েছে ইসি।

চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনসংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

নির্বাচনের কাজে সহায়তা প্রদান করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্যের বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৬ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৫-এ বলা রয়েছে।

নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সালের ১৩ নম্বর আইন) অনুসারে নির্বাচনসংক্রান্ত কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তিনি উক্তরূপ নিয়োগের পর নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৪৪ (ঙ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচনী সময়সূচি জারি হওয়ার পর থেকে ফলাফল ঘোষণার পর ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পূর্বালোচনা ছাড়া কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি না করার বিধান রয়েছে।

এসব বিষয় তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধিমোতাবেক নিরপেক্ষভাবে পালনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবেন।

এ লক্ষ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পূর্বালোচনা ছাড়া কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি বা ছুটি প্রদান না করা হয় অথবা নির্বাচনী দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো কাজে নিয়োজিত না করা হয় তার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তথা সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিতে অনুরোধ করেছে ইসি সচিবালয়।

ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ মাঠ প্রশাসন, পুলিশের দায়িত্বশীলদের কাছে এ সংক্রান্ত পরিপত্র দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের রদবদল চলমান প্রক্রিয়া। তফসিল ঘোষণার পর ইসি প্রয়োজন হলে যখন যা দরকার ব্যবস্থা নেবে। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি নিশ্চিত করবে নির্বাচন কমিশন।’

‘জাতীয়’ : আরও খবর

সম্প্রতি