image

বাগেরহাটে ৪, গাজীপুরে ৫ আসন পুনর্বহাল করে সংশোধিত গেজেট

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

আদালতের রায়ের পর বাগেরহাট জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে চারটি সংসদীয় এলাকা পুনর্বহাল করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার ৩০০ আসনের সংশোধিত পুনঃনির্ধারিত সীমানার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাগেরহাটে আসন বাড়ায় গাজীপুরে একটি আসন কমিয়ে পাঁচটি করা হয়েছে।

বাগেরহাটের আসন কমানোর গেজেট ‘অবৈধ’ ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট, পরে আপিল বিভাগ তা বহাল রাখে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। আর গাজীপুরের আসন পাঁচটি থেকে বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়।

ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বাগেরহাটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিও হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্তে অটল থাকে। গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেটে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসন দেয়া হয়।

ওই গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন গঠিত হয়েছে।

এর আগে বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা।

এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে এর আগে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে দুটি রিট আবেদন করা হয়।

বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি এ রিট মামলা দুটি করে।

বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে সেখানে বিবাদী করা হয়।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না এবং চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, তা জানাতে রুল জারি করা হয়। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সেই রুলের ওপর শুনানি শেষে গত ১০ নভেম্বর রায় দেয় বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সাল হাসান আরিফের হাইকোর্ট বেঞ্চ। নির্বাচন কমিশনের গেজেট ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখার আদেশ দেয়া হয় সেখানে।

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলে নির্বাচন কমিশন ও গাজীপুর-৬ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ পৃথকভাবে আপিলের আবেদন করেন।

গাজীপুর-৬ আসন থেকে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হাফিজুর রহমানের আগে আপিল বিভাগে একটি আবেদন করেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল ও আবেদনগুলো একসঙ্গে শুনানির জন্য ওঠে।

সেই শুনানি শেষে গত ১০ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের লিভ টু আপিল নাকচ করে রায় দেয় আপিল বিভাগ। তাতে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। ফলে বাগেরহাটের আসন কমিয়ে ইসির জারি করা গেজেট অবৈধই থেকে যায়।

হাইকোর্ট রায়ে বলেছিল, বাগেরহাটের আসন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এখন আপিল বিভাগের রায় পাওয়ার পর দুই জেলার আসন বণ্টন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে নতুন গেজেট জারি করলো ইসি।

‘জাতীয়’ : আরও খবর

সম্প্রতি