image

জেআইসি ‘গুম ও নির্যাতন’ মামলা: শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরুর নির্দেশ

বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) সংঘটিত ‘গুম ও নির্যাতনের’ অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক ও বর্তমান ১২ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলায় প্রসিকিউশনের ওপেনিং স্টেটমেন্ট ও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এ মামলার ১৩ আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন। অন্যদিকে, গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তাসহ সব ১৩ আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

মামলার ১৩ আসামির মধ্যে বর্তমানে তিনজন সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। গ্রেপ্তার থাকা কর্মকর্তারা হলেন—ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল শেখ মো. সারওয়ার হোসেন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী।

অপরদিকে, শেখ হাসিনাসহ মামলার বাকি নয়জন সেনা কর্মকর্তা পলাতক রয়েছেন। পলাতক আসামিরা হলেন—প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. আকবর হোসেন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদিন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল হামিদুল হক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ তৌহিদুল উল ইসলাম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল মখছুরুল হক।

এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) নিয়োগ দেয় ট্রাইব্যুনাল। ওই দিন স্বেচ্ছায় মামলা পরিচালনার ইচ্ছা প্রকাশ করলে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি গত ৩ ডিসেম্বর মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। পরে মো. আমির হোসেনকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা এ মামলার তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সেদিনই তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজির করার জন্য দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন এ মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে গত ৯ ডিসেম্বর প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়।

‘জাতীয়’ : আরও খবর

সম্প্রতি