image

ফৌজদারি অপরাধ ও জুলাই চেতনার পরিপন্থি : ফারুকী

শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

ধানমন্ডির সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের ভবনে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ এবং ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি’ বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ওই হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার বিষয়ে সরকার কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার রাতে একদল লোক ধানমন্ডির ছায়ানটের সাততলা ভবনে ব্যাপক হামলা চালায়। ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে এসে প্রথমে ভবনের পার্কিং লটে আগুন দেয়। পরে তারা ভবনের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা নিচতলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন তলায় গিয়ে প্রতিটি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

হামলাকারীরা ‘ভারতের দালাল’, ‘ভুয়া’, ‘নারায়ে তাকবীর’, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘ভাঙো’ প্রভৃতি স্লোগান দেয়। তারা প্রয়াত সনজীদা খাতুনের প্রতিকৃতি কেটে নষ্ট করার সময় তাকে ‘নাস্তিক’ বলে সম্বোধন করে।

হামলাকারীরা মিলনায়তনে যা পেয়েছেন তাই ভাঙচুর করেছেন। তবলা, হারমোনিয়াম, তানপুরাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনতলার একটি কক্ষে পুড়ে যাওয়া বাদ্যযন্ত্র ও বই স্তূপাকারে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পুরো মনিটরিং সিস্টেম, সিসি ক্যামেরা, স্পিকার, লাইট ও ফ্যান ভেঙে ফেলা হয়েছে। মাটির তৈরি চারুকর্ম ও অন্যান্য শিল্পকর্মও ধ্বংস করা হয়।

প্রতিটি তলায় অবস্থিত সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও বিদ্যালয়ের সকল কক্ষ ও অফিস রুমের বেশিরভাগ আসবাবপত্র ভাঙা হয়েছে। কাগজপত্র ও সরঞ্জাম তছনছ করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষও রেহাই পায়নি। আলমারির গ্লাস ভাঙা হয়েছে এবং চেয়ার-টেবিল ওলট-পালট করা হয়েছে। রমেশ চন্দ্র স্মৃতি মিলনায়তন, মূল মিলনায়তন 심지াত শৌচাগারও ভাঙচুরের শিকার হয়।

এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে, সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে শাহবাগে বিক্ষোভ ও অবরোধ শুরু হয়। পরে একদল লোক কারওয়ানবাজারে দুটি সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরবর্তীতে রাত দেড়টা থেকে আড়াইটার মাঝামাঝি সময়ে তারা ছায়ানট ভবনে হামলা চালায়।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, "বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক শরীফ ওসমান হাদির শহীদী মৃত্যুতে জাতি আজ শোকার্ত। এই জাতীয় শোকের মুহূর্তে এক শ্রেণির হঠকারী দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’-এ হামলা চালিয়ে ক্ষয়-ক্ষতি সাধন করেছে। মৃত্যুঞ্জয়ী হাদীর মৃত্যুতে কোনো সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা কেবল একটি ফৌজদারি অপরাধই নয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনারও পরিপন্থি।"

তিনি গণতান্ত্রিক রূপান্তরের এই সময়ে সকল হঠকারিতার বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি বলেন, ছায়ানট ভবনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছায়ানট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে।

‘জাতীয়’ : আরও খবর

সম্প্রতি