ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি যে ব্যাটারিচালিত রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন, সে রিকশা চালক কামাল হোসেন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার, (২৫ ডিসেম্বর ২০২৫) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ফয়সাল আহমেদ তাকে আদালতে হাজির করে সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, ‘মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। ঘটনার সময় হাদি সাক্ষী মো. কামাল হোসেনের চালিত অটোরিকশাযোগে খলিল হোটেল, মতিঝিল থেকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের উদ্দেশে যাত্রাকালে পথিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সাক্ষী স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার বক্তব্য আদালতে প্রদান করতে ইচ্ছুক।’
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আলম তার জবাবন্দি রেকর্ড করেন বলে তদন্ত কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ জানিয়েছেন।
জুলাই অভ্যুত্থান এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের জন্য বিজয়নগর এলাকায় গিয়ে তিনি আক্রান্ত হন।
চলন্ত রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করেন চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা আততায়ী। গুলিটি লাগে হাদির মাথায়। গুরুতর আহত হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচার করার পর ওই রাতেই তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর দুদিন পর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর হাদির মৃত্যুর খবর আসে।
হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটিতে ৩০২ ধারা যুক্ত হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এরা হলেন- মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা হুমায়ুন কবির এবং মা হাসি বেগম, স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা ও শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী মুফতি মো. নুরুজ্জামান নোমানী ওরফে উজ্জ্বল, ফয়সালের সহযোগী মো. কবির, ‘ভারতে পালাতে’ সহায়তাকারী সিবিউন দিউ ও সঞ্জয় চিসিম।