ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’ সোমবার,(২৯ ডিসেম্বর ২০২৫) বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বিদায়ী সাক্ষাতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সাক্ষাতের কথা প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
নির্বাচনের আগে শান্তি বিঘি্নত করার যে কোনো প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাক্ষাৎকালে আসন্ন ফেব্রুয়ারির সংসদীয় নির্বাচন ও গণভোট, বাণিজ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল, অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু করা শ্রম সংস্কার এবং দুই দেশের সামগ্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ঘটনাবহুল এক বছর কাটিয়ে জ্যাকবসন শিগগিরই দেশে ফিরে যাচ্ছেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমর্থন পুনর্র্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা তার সরকারের অবাধ, ন্যায্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সংসদীয় নির্বাচন ও গণভোট উভয়ের সাফল্য নিশ্চিত করতে পূর্ণ প্রস্তুতি চলমান রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারের প্রশংসা, বিশেষ করে শ্রম আইনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তার মতে, এসব আইন বাংলাদেশে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণে সহায়ক হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশের শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে আগের সরকারগুলোর আমলে করা ৪৬টি মামলার মধ্যে ৪৫টি প্রত্যাহারের জন্য সাধুবাদ জানান।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা নতুন শ্রম অধ্যাদেশকে ‘চমৎকার আইন’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শীর্ষ শ্রমকর্মীরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনগুলো অনুমোদনের উদ্যোগকে প্রকাশ্যে স্বাগত জানিয়েছেন।
সাক্ষাৎকালে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার তহবিল নিয়েও আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের ক্যাম্পে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রই একক বৃহত্তম দাতা।’ ভবিষ্যতে এ ধরনের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে তার এক বছরের মেয়াদে ‘গুরুত্বপূর্ণ কাজ’ এবং ‘বাংলাদেশের বন্ধু’ হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের জন্য তাকে আমন্ত্রণও জানান।
সাক্ষাৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।